এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১১ জুলাই : পরিচারিকার কাজ করার সময় গৃহকর্তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে এক গৃহবধুর । প্রেমিক বিবাহিত জেনেও দু’জনে মন্দিরে গিয়ে বিয়েও করেন । তারপর তাঁরা পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার মাহাতা গ্রামে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতে শুরু করেন । মঙ্গলবার ওই ভাড়া বাড়িতেই রহস্যজনকভাবে মারা গেলেন লীলা আগরওয়াল নামে বছর ৪৪-এর ওই বধু । খবর পেয়ে ওইদিন সন্ধ্যা নাগাদ দেহটি উদ্ধার করে ভাতার থানার পুলিশ । বুধবার দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে । এদিকে মৃত্যুর কারন নিয়ে ধন্দের সৃষ্টি হয়েছে । পুলিশ মহিলার দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় ও স্থানীয় প্রতিবেশীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে বলে জানা গেছে।
জানা গেছে,লীলা আগরওয়াল নামে ওই বধুর প্রথম পক্ষের স্বামীর নাম রাজু আগরওয়াল । বীরভূম জেলার বোলপুর শহরের মিশন কম্পাউন্ড এলাকায় বাড়ি পেশায় সাইকেল মেকানিক রাজুবাবুর । বাড়ির আশেপাশেই তাঁর একটি দোকান করেছে । তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে । ছেলে আকাশ অস্থায়ী কর্মী হিসাবে বোলপুর পুরসভায় কাজ করেন । মেয়ে প্রীতির বীরভূমের সিউড়িতে বিয়ে হয়েছে ।
অন্যদিকে লীলাদেবীর দ্বিতীয় পক্ষের স্বামীর সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি বর্ধমান শহরে । তিনি ওষুধ সাপ্লাইয়ের ব্যবসা করেন । সুদীপ্তবাবুর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন লীলাদেবী । ক্রমে দু’জনের মধ্যে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে । কিন্তু সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়ের স্ত্রী তাঁদের এই সম্পর্ক মানতে না পেরে বাপের বাড়ি চলে যান । এরপর ভাতার থানার মাহাতা গ্রামে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন সুদীপ্তবাবু ও লীলাদেবী । স্থানীয় একটি মন্দিরে গিয়ে তাঁরা বিয়েও করেন । সেই উপলক্ষে ছোটখাটো অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয় ।
মৃতার মেয়ে প্রীতি আগরওয়াল বলেন,” আমার মা ওই ব্যক্তির সঙ্গে মাহাতা গ্রামে আসার পরেও আমি মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতাম । আমার বাচ্ছাকে নিয়ে প্রায় ২০ দিন ধরে মায়ের কাছে ছিলাম । গত সোমবার শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাই । পরের দিন রাতে ফোন আসে আমার মায়ের নাকি হৃদরোগে মৃত্যু হয়েছে । এদিন আমরা ভাতার থানায় এসে মায়ের মৃতদেহ দেখতে পাই ।’
পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভাতার থানায় খবর আসে এক গৃহবধুর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে । তারপর পুলিশ গিয়ে মহিলার নিথর দেহটি বাড়ির বারান্দায় শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পায় । মৃতার ছেলে আকাশ আগরওয়ালের দাবি, ‘আমরা এসে দেখি মায়ের গলায় একটা দাগ রয়েছে । আমাদের অনুমান মা’কে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছে ।’ অন্যদিকে সুদীপবাবুর জানান,তিনি দিনভর ব্যাবসার কাজে বাইরে ছিলে । সন্ধ্যার দিকে বাড়ি ফেরার তাঁর স্ত্রীর মৃতদেহ দেখতে পান ।
পুলিশ জানিয়েছে,ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে । একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রজু করে ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ ।।