এইদিন ওয়েবডেস্ক,০৬ জানুয়ারী : বোরখায় আপাদমস্তক ঢাকা একজন মহিলা হাঁটু গেড়ে রাস্তার উপর বসে আছে । তাকে ঘিরে স্থানীয় ভাষায় কথা বলছে জোব্বা পরা বেশ কিছু সশস্ত্র পুরুষ । পুরুষদের কারোর হাতে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, কারো কাছে রয়েছে পিস্তল । ওই মহিলার মৃত্যুদণ্ডের কারণ বর্ণনা করতে শোনা যাচ্ছে এক পুরুষকে । ভিডিওতে করা ইংরেজি অনুবাদ অনুযায়ী সে বলছে, ‘আল্লাহ মহান এবং দয়ালু । তার পরিবার এবং পরিজনদের প্রতি আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক । দুর্নীতি এবং বেশ্যাবৃত্তির কারনে এই মহিলাকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়েছে । এই মহিলা গ্রামে বেশ্যাবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছিল যে কারণে স্কলার অফ কাউন্সিল তাকে মৃত্যুদণ্ডের শাস্তি দিয়েছে ।’
এরপর মহিলাকে দাঁড় করানো হয় । সামনে থেকে এক ব্যক্তি এগিয়ে এসে তাকে বলে,’আল্লাহ তোমার মঙ্গল করুন’ । মহিলার সামনে ও পিছনে প্রচুর সশস্ত্র লোকজন দাঁড়িয়েছিল । পিছনের পুরুষদের উদ্দেশ্য করে কিছু বলতে শোনা যায় ওই মহিলাকে । সম্ভাব্য পরিণতির আশঙ্কায় মহিলা পিছন ফিরে দেখছিল কেউ তাকে বন্দুকের নিশানা করছে নাকি । এরপর মহিলা কে ফেরে হাঁটু গেড়ে বসানো হয় । তারপর পিছনের এক ব্যক্তি তার রিভলভার দিয়ে পয়েন্ট ব্লাঙ্ক রেঞ্জ থেকে মহিলার মাথা লক্ষ্য করে এক রাউন্ড গুলি চালিয়ে যায় । মহিলা রক্তাক্ত অবস্থায় সেখানেই মুখ থুবড়ে পড়ে যান ।’ এদিকে মহিলা মুখ থুবড়ে পড়তেই চারিদিক থেকে “আল্লাহু আকবার” স্লোগান ওঠে ।
এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ভিডিওটি গ্রেকো লেভানটাইনস ওয়ার্ল্ড ওয়াইড (Greco Levantines World Wide) নামে একটা এনজিও-এর এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করা হয়েছে । বলা হচ্ছে যে ভিডিওটি সিরিয়ার এবং ২০১৫ সালে রেকর্ড করা হয়েছে । ভিডিও শেয়ারের পাশাপাশি লেখা হয়েছে, ‘একটি সম্পূর্ণ সাবটাইটেল ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে নবনিযুক্ত বিচার মন্ত্রী শাদি আলউইসি,২০১৫ সালে ইদলিবে পতিতাবৃত্তির অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত একজন মহিলার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার তদারকি করছেন৷ ভিডিওতে, মহিলাটি মরিয়া হয়ে অনুরোধ করে বলছেন, “আমি আমার সন্তানদের জন্য এটি করেছি। প্লিজ, আমি আমার বাচ্চাদের দেখতে চাই।”প্রসঙ্গত,শাদি আলউইসি বা শাদি মোহাম্মদ আল-ওয়াইসি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে বর্তমান সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বিচার মন্ত্রী পদে রয়েছেন । ২০২২ থেকে শুরু করে এবং গত ডিসেম্বর পর্যন্তও সে আসাদ সরকারের পতনকাল পর্যন্ত এই পদে ছিল। শাদি আল-ওয়াইসি ২০১৫ সালে “দুর্নীতি ও পতিতাবৃত্তি”র অভিযোগে দুই মহিলার মৃত্যুদণ্ডের সাজা কার্যকর করেছিলেন ৷ ওয়াইসি সেই সময়ও একজন বিচারক ছিলেন। হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন সরকার সেই ফুটেজ সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করেনি । কেউ কেউ প্রশ্ন করেছেন যে সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের অধীনে এই ধরনের শাস্তিমূলক পদক্ষেপের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা, অন্যরা ওয়াইসিকে অপসারণের আহ্বান জানিয়েছেন।।
https://twitter.com/GrecoLevantines/status/1875669687138189816?t=004CKIS53WeJvGNaXrpz1g&s=19