এইদিন ওয়েবডেস্ক, ব্রাহ্মণবাড়িয়া,৩০ নভেম্বর : কোরানে লাথি মেরে ও পুড়িয়ে গ্রেপ্তার হলেন বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক মুসলিম যুবক । ধৃত যুবক বায়েজিদ নবীনগর উপজেলার বাড়িখলা বাড়িখলা গ্রামের মৃত এনামুল হক খোকন মেম্বারের ছেলে । শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে বাড়িখলা বহুমুখী হাফিজিয়া মাদ্রাসায় ঢুকে একটা কোরানের কপি নিয়ে তিনি ফুটবল খেলেন । পরে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন । প্রথমে তাকে হিন্দু মনে করে মৌলবাদীরা হিংসক হয়ে ওঠে এবং তাকে নির্মমভাবে মারধর করে । কিন্তু পরে যুবকের আসল ধর্ম পরিচয় জানতে পেরে হামলাকারীরা তাকে ছেড়ে দেয় । যদিও পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে । এখন অনেকেই বলছেন যে অপরাধী যদি মুসলিম না হয়ে কোনো হিন্দু বা অন্য ধর্মের হতেন, তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হয়তো বড় ধরনের সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়িয়ে পড়ত। তারা বাংলাদেশের মুসলিমদের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ।
জানা গেছে,শুক্রবার বিকেলে হঠাৎ বাড়িখলা বহুমুখী হাফিজিয়া মাদ্রাসায় প্রবেশ করেন বায়েজিদ । সেখানে তিনি একটি কোরানের কপি নিয়ে প্রথমে ফুটবলের মত লাথি মারেন । পরে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন । বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। উত্তেজিত জনতা অভিযুক্ত যুবককে আটক করে বেধড়ক মারধর করে । খবর পেয়ে নবীনগর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং রক্তাক্ত অবস্থায় ওই যুবককে উদ্ধার করে।
ঘটনার একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন,’সে (বায়েজিদ) সুস্থ মস্তিষ্কেই আমাদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছে। সে নাস্তিক্যবাদে বিশ্বাসী। আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি চাই।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বিশ্লেষক বলেন,’আজ অপরাধী একজন মুসলমান ঘরের সন্তান হওয়ায় তাকে শুধু পুলিশে দেওয়া হয়েছে এবং আইনি প্রক্রিয়ার কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু এই একই কাজ যদি কোনো হিন্দু বা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কেউ করত, তবে হয়তো এতক্ষণে এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হতো। অতীতে আমরা দেখেছি, গুজবের ওপর ভিত্তি করেও সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলা হয়েছে। অথচ আজ প্রশাসন নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করতে পারছে কারণ অপরাধী সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের।’
নবীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহীনুর ইসলাম ‘ফেস দ্যা পিপল’কে জানান,পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে। তিনি আরও বলেন,’অভিযুক্ত যুবক সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ বলে জানা গেছে। উত্তেজিত জনতা তাকে পিটিয়ে আহত করায় বর্তমানে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে পুলিশি পাহারায় চিকিৎসাধীন আছেন। তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে ।’।

