এইদিন ওয়েবডেস্ক,বেনজিরাবাদ,১০ জুন : পাকিস্তাননের সিন্ধু প্রদেশে ফের একের পর হিন্দু কিশোরীকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে । এবার চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সিন্ধু প্রদেশের বেনজিরাবাদ জেলার কাজী আবাদ এলাকার বাসিন্দা ১৪ বছরের হিন্দু কিশোরী সোহানা কুমারী শর্মাকে তার বাবা-মায়ের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যায় গৃহশিক্ষক আখতিয়ার আলী(Akhtiar Ali) ও তার দলবল । অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মেয়েটিকে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর তাকে জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হয় বলে অভিযোগ । যদিও মেয়েটিকে পরে পুলিশ উদ্ধার করে । তবে পাকিস্তানের আদালতের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । মেয়েটি বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যেতে চাইলেও আদালতের নির্দেশে তাকে একটি হোমে পাঠিয়ে দেওয়া হয় ।
দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে সিন্ধু প্রদেশের চাম্বার শহরের কাছে ভাদের জলবনি গ্রামে । ওই গ্রামের বাসিন্দা ১৫ বছরের হিন্দু কিশোরী রবিনাকে বন্দুকের মুখে অপহরণ করে জুমুন পাঠান,আখতার পাঠানরা । অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত মেয়েটিকে উদ্ধারের কোনো আগ্রহই দেখায়নি পাকিস্তানের পুলিশ ।
জানা গেছে,দিলীপ কুমার শর্মা ও জামনা শর্মার একমাত্র মেয়ে সোহানা । তাকে বাড়িতে টিউশন পড়াত আখতিয়ার আলী । জামনা শর্মা দ্য রাইজ নিউজকে বলেন,একদিন আমার মেয়েকে বাড়িতে পড়াতে এসে গৃহশিক্ষক প্রায় এক লাখ টাকা চেয়েছিলেন । আমার মেয়েকে প্রথমে সে টাকার কথা বলেছিল । মেয়ে বিষয়টি আমাদের জানায় । তখন আমরা শিক্ষককে সতর্ক করে দিয়েছিলাম যে, আপনি আমার মেয়ের সাথে এই ধরনের বিষয় নিয়ে কথা বলবেন না । এর কয়েকদিন পর শিক্ষক এবং তার সহযোগীরা অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে বাড়িতে ঢুকে আমার মেয়ে সোহানাকে অপহরণ করে এবং টাকাপয়সা, সোনার গহনা লুটপাট করে ।’ তিনি বলেন,’তখন আমরা তাদের কাছে অনুরোধ করি টাকাপয়সা নিয়ে যান কিন্তু আমার মেয়েকে ছেড়ে দিন । কিন্তু তারা আমাদের কোনো কথা শোনেনি ।’
পরে ওই কিশোরীকে মেয়েটিকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করে একজন মুসলিম পুরুষের সাথে বিয়ে করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হলে পুলিশ একটি মেয়েকে উদ্ধার করে গত ৮ জুন লারকানা আদালতে পেশ করে । আদালতে কিশোরী তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল । কিন্তু বিচারক নিরাপত্তার অজুহাতে তাকে সেফ হোমে পাঠানোর নির্দেশ দেয় । মেয়েটির বাবা দিলীপ শর্মা দ্য রাইজ নিউজকে বলেছেন যে তিনি আশা করেছিলেন যে আদালত তাদের প্রতি ন্যায়বিচার করবে । কিন্তু আদালতের নির্দেশের পর তাকে হতাশ দেখায় । সোহানা কুমারী শর্মা অপহরণ মামলার শুনানির পরবর্তী দিন ধার্য হয়েছে আগামী ১২ জুন । এই মামলায় গৃহশিক্ষক আখতিয়ার আলী(Akhtiar Ali) ছাড়াও বাকি অভিযুক্তরা হল আক্তার গাবল (Akhtar Gabol), ফাইজান জাট (Faizan Jat) এবং সারাং খাসখেলি(Sarang Khaskheli) ।।