এইদিন ওয়েবডেস্ক,সম্বল,২৪ নভেম্বর :
উত্তরপ্রদেশের সম্বল জেলার জামে মসজিদে সমীক্ষাক দলের উপর পাথরবাজি ও অগ্নিসংযোগ করল স্থানীয় মুসলিম জনতা । একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে । পপরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেলও ছোড়া হয়েছে বলে জানা গেছে। বিষয়টির গুরুত্ব দেখে সম্বলের এসপি কৃষ্ণ কুমার বিষ্ণোই এবং ডিএম ডাঃ রাজেন্দ্র পেনসিয়াও ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন । ঘটনায় প্রতিক্রিয়া ডিজিপি প্রশান্ত কুমার তিনি বলেন,’আদালতের নির্দেশে সম্বলে সমীক্ষা চালানো হচ্ছে। কিছু ‘অসামাজিক উপাদান’ পাথর ছুড়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত রয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পুলিশ পাথর ছোড়াকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।’
সর্বভারতীয় মুসলিম জামাতের জাতীয় সভাপতি মাওলানা শাহাবুদ্দিন রিজভী বেরেলভি সম্বলের জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন,’সম্বল মসজিদের মামলাটি আদালতে বিচারাধীন। খবর আছে, মসজিদের জরিপ শুরু হলে লোকজন পাথর ছুড়তে থাকে। আমি মুসলমানদের কাছে এই কাজ না করার জন্য আবেদন করতে চাই। এটি সঠিক নয়। শান্তি বজায় রাখুন। ইসলাম শান্তি শেখায়।’
এদিকে জানা গেছে যে সম্বলে অ্যাডভোকেট কমিশনের সমীক্ষা শেষ হয়েছে। এই সমীক্ষাটি আজ রবিবার (২৪ নভেম্বর) সকাল ৭:৩০ থেকে ১০:০০ এর মধ্যে পরিচালিত হয়েছিল। পুরো জরিপের ভিডিওগ্রাফি ও ফটোগ্রাফি করা হয়েছে। এখন ২৯ নভেম্বর এডভোকেট কমিশনার তার প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন।
এর আগে,গত ২২ নভেম্বর, পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনীর ভারী মোতায়েন মধ্যে মসজিদে নামাজ পড়া হয়। বিকেলে নামাজ পড়তে মসজিদে পৌঁছায় শত শত মানুষ । বাইরে থেকেও প্রচুর নামাজি জড়ো হয়েছিল । এসময় নিরাপত্তাকর্মীরা সড়কে ভারী ব্যারিকেড তৈরি করে ড্রোন ক্যামেরার মাধ্যমে আকাশপথে নজরদারি চালায়। গত ১৯ নভেম্বর, একটি দল জরিপের জন্য মসজিদের ভিতরে পৌঁছায় এবং বিতর্কিত এলাকার ফটোগ্রাফি এবং ভিডিওগ্রাফি করে। এ সময় বাকবিতণ্ডাও হয়।
আসলে, উত্তরপ্রদেশের সম্বল জেলার শাহী জামে মসজিদ বেশ কিছুদিন ধরেই বিতর্কে রয়েছে। হিন্দু পক্ষের দাবি যে আগে এই জায়গায় শ্রী হরিহর মন্দির ছিল। অন্যদিকে, অন্য পক্ষ বিশ্বাস করে যে এটি তাদের ঐতিহাসিক মসজিদ । এ নিয়ে আদালতে আবেদনও করা হয়েছে। একটি প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের জায়গায় এই স্থাপনাটি তৈরি করা হয়েছে বলে দাবি । মঙ্গলবার(১৯ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিষ্ণু শঙ্কর জৈন সম্বলের চান্দৌসি সিভিল জজ (সিনিয়র ডিভিশন) এর আদালতে একটি আবেদন করেছিলেন। আবেদনে দাবি করা হয়েছে, জামা মসজিদের আগে শ্রী হরিহর মন্দির ছিল। এর জন্য তার দ্বারা উদ্ধৃত করা হয়েছে দুটি বই এবং আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই) একটি প্রতিবেদন। এর মধ্যে রয়েছে বাবুর্নামা, আইন-ই-আকবরী এবং এএসআই-এর ১৫০ বছরের পুরনো রিপোর্ট। আবেদনকারী আইনজীবী বিষ্ণু শঙ্কর জৈন বলেছেন,’সম্বলের শ্রী হরিহর মন্দির আমাদের বিশ্বাসের কেন্দ্র। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, এখানে কল্কি অবতার গ্রহন করা হবে । ১৫২৯ খ্রিস্টাব্দে বাবর মন্দিরটি ভেঙে মসজিদে রূপান্তরের চেষ্টা করেন। সেজন্য আমরা পিটিশন দাখিল করেছি। জরিপ শেষে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে।’
অন্যদিকে সম্বলের সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জিয়াউর রহমান বার্ক বলেছেন,’জরিপে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। এটা মসজিদ ছিল, মসজিদ আছে এবং মসজিদই থাকবে। আমাদের মসজিদটি ঐতিহাসিক এবং অনেক পুরনো। ১৯৯১ সালে, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে ১৯৪৭ সাল থেকে যে সমস্ত ধর্মীয় স্থান একই অবস্থায় ছিল, সেগুলি তাদের জায়গায় থাকবে। তার পরেও জরিপের জন্য পিটিশন দাখিল করে পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে।’
আপাতত ২৯ নভেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে আদালত।।