এইদিন ওয়েবডেস্ক,গুরুগ্রাম,১০ আগস্ট : নুহ জেলার মেওয়াতে মহাদেবের জলাভিষেক যাত্রায় হামলার পর থেকেই হরিয়ানার গুর্জর,বাল্মিকী সহ বিভিন্ন হিন্দু সম্প্রদায়গুলি একজোট হয়ে গেছে । উত্তরোত্তর বাড়ছে মুসলিম বিদ্বেষ । তারা সমবেত ভাবে মুসলিম সম্প্রদায়কে বয়কটের ডাক দিচ্ছে । বিশেষ ওই সম্প্রদায়কে একঘরে করতে এলাকায় ঘুরে ঘুরে রীতিমতো মাইকে প্রচার চালাচ্ছে বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি । হরিয়ানার ৩ টি জেলায় মুসলিম ব্যবসায়ীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে । তিন জেলার রেওয়ারি, মেহন্দরগড় এবং ঝাজ্জারসহ ৫০ টি পঞ্চায়েত একসঙ্গে এই আদেশ জারি করেছে বলে সংবাদ মাধ্যম পাঞ্চজন্য জানিয়েছে । এমনকি কোনো হিন্দু ব্যবসায়ী মুসলিমদের নিয়োগ করলে তাকে ‘দেশদ্রোহী’ হিসাবে মনে করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে । মুসলিম সম্প্রদায়কে বয়কট করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ইতিমধ্যেই হরিয়ানার ৩ টি জেলার ১৪ টি গ্রাম সম্মিলিতভাবে পুলিশ এবং প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছে বলে খবর । মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকদের বাড়ি এবং দোকান ভাড়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা । এমনকি হিন্দু অধ্যুষিত গ্রামে কোনো মুসলিম ফেরিওয়ালাকে ঢুকতে দেওয়া হবে না এবং কোনো ফেরিওয়ালা গ্রামে ঢোকার আগে তার পরিচয় যাচাই করা হবে বলে জানানো হয়েছে ।
হরিয়ানার মানেসার জেলায় গত ৩ জুলাই সমস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের একটি পঞ্চায়েত মুসলিম ব্যবসায়ীদের বয়কটের ডাক দেওয়ার পাশাপাশি হিন্দুদের কাছে অস্ত্র রাখার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছিল বলে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে । অনুষ্ঠানটিতে সমস্ত হিন্দু সমাজের ব্যানারে ২০০ জনেরও বেশি গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন । সেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে এলাকায় বসবাসকারী “অবৈধ অভিবাসীদের উচ্ছেদ করা হবে” । পরে একটা প্রতিনিধি দল মানেসার জেলার ডিউটি ম্যাজিস্ট্রেট সজ্জন সিংয়ের কাছে এনিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেন ।
জানা গেছে,পঞ্চায়েত এলাকায় বসবাসকারী যেকোন মুসলিমকে পর্যবেক্ষণ করার জন্য নজরদারি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । অনুষ্ঠানের বক্তারা উপস্থিত মানুষকে মোবাইলের পরিবর্তে অস্ত্র রাখার আহ্বান জানান । নূপুর শর্মাকে ইসলামের নবী সম্পর্কে তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাওয়ার নির্দেশ দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আদেশের প্রসঙ্গও ওঠে আলোচনায় । নূপুর শর্মাকে নির্দেশ দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের বিচারক জে বি পারদিওয়ালারের (JB Pardiwala) বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব ( impeachment) আনার জন্য আহ্বান জানান উপস্থিত বক্তারা ।
দ্য কুইন্ট-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী পঞ্চায়েত সদস্য আশুতোষ ত্যাগী বলেছেন,’হিন্দুত্বের জন্য, এবং নিজের ধর্ম রক্ষার জন্য, যদি গুলি চালাতে হয় তাহলে আশুতোষ ত্যাগী প্রস্তুত থাকবেন ।’ উল্লেখ্য, বৈঠকে পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে, ধর্ম সংসদের সময় সারা ভারতে বিভিন্ন স্থানের হিন্দুদের একই ধরনের অবস্থান নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে ।।