প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৩ আগষ্ট : শাক তুলতে গিয়ে মাঠে ছিঁড়ে পড়ে থাকা বিদ্যুৎতের তারে বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল মায়ের।জখম হয়ছে ছেলে।মৃতার নাম আশা দাস (৫০)।তাঁর ছেলে রাহুল দাস কে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।সোমবার রাতে এই ঘটনা জানাজানি হবার পর থেকে ব্যাপক ক্ষোভ বিক্ষোভ ছড়িয়েছে পূর্ব বর্ধমানের হাটগোবিন্দপুরে । বিদ্যুৎ দফতরের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে এলাকার মানুষজন বর্ধমান-কালনা রাজ্য সড়ক অবরোধ করে। সেখানে ভ্যান রিকশায় মৃতদেহ রেখে রাতভর চলে বিক্ষোভ প্রদর্শন।শক্তিগড় থানার পুলিশ দফায়দফায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনে মৃতদেহ উদ্ধার করে। মঙ্গলবার বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ মর্গে হয় মৃত মহিলার দেহের ময়নাতদন্ত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,মৃত মহিলা আশা দাসের বাড়ি হাটগোবিন্দপুরের রামগর এলাকায় । তিনি মাঠ থেকে শাক-সবজি তুলে বাজারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করতেন। অনান্য দিনের মতো সোমবার দুপুরে তিনি মাঠে শাক-সবজি তুলতে গিয়েছিলেন। দীর্ঘ সময় পেরিয়ে যাবার পরেও আশাদেবী বাড়ি না ফেরায় চিন্তিত হয়ে পড়েন তাঁর পরিবার সদস্যরা। মা আশাদেবীকে খুঁজতে তাঁর ছেলে রাহুল মাঠে যায়।সেখানে মায়ের খোঁজ করার সময় রাহুল দেখতে পায় তাঁর মা বিদ্যুৎতের তারে জড়িয়ে পড়ে রয়েছে । মাকে বাঁচাতে গিয়ে ছেলে রাহুল বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে জখম হয়।দু’জনের কেউ বাড়ি না ফেরায় পরিবারের অন্য সদস্য এবং প্রতিবেশীরা মা ও ছেলেকে খুঁজতে বেরিয়ে মাঠে পৌছান । তারা সেখান থেকে আশাদেবীকে মৃত অবস্থায় ও তাঁর ছেলে রাহুলকে জখন অবস্থায় উদ্ধার করেন । এই ঘটনার খবর জানানানি হতেই রামনগর গ্রামের বাসিন্দা মহলে ব্যাপক ক্ষোভ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে ।
মৃতার প্রতিবেশী সোমা দাস বলেন,’দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের এলাকায় বিদ্যুৎতের তার বিপদজনক অবস্থায় থাকলেও বিদ্যুৎ দফতরের লোকজন কোন গুরুত্ব দেয় না।বিষয়টি নিয়ে গ্রামের লোকজন বহুবার বিদ্যুৎ দফতরের দ্বারস্থ হয়েছিল । কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি।বিদ্যুৎ দফতরে গাফিলতির জন্যেই জীবন খোয়াতে হল তাঁদের গ্রামের বাসিন্দা আশাদেবীকে ।’ অপর গ্রামবাসী কল্যাণ টুডু বলেন,’মাঠে বিদ্যুৎতের তার ছিঁড়ে পড়ে থাকার কথা বারেবারে বিদ্যুৎ দফতরে জানানো হয়েছিল।তার পরেও বিদ্যুৎ দফতর কোন ব্যবস্থা নেয়নি।সেই ছেড়া তারেই বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে গ্রামের এক মহিলার মৃত্যু হল। তাই বিদ্যুৎ দফতরের গাফিলতির প্রতিবাদে গোটা গ্রাম সরব হয়েছে ।’
ডিএসপি (২) রাকেশ চৌধুরী জানিয়েছেন,
রামনগর গ্রামের মাঠে ইলেকট্রিক তার ছিঁড়ে
পড়েছিল। গ্রামের বয়স্ক মহিলা ওই তারে বিদ্যুৎপৃষ্ঠ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যান । ওনার ছেলে জখম হয়েছেন । রাত ৮ টা নাগাদ ঘটনার খবর পাওয়ার পরেই পুলিশ ওই জায়গায় যায় । মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে । বিদুৎ দফতরে কে বিষয়টি জানানো হলে বিদ্যুৎ দফতর ছেঁড়া তার মেরামতির কাজ শুরু করে । বিদ্যুৎ দফতরের নবস্তা স্টেশন ম্যানেজার মনোজ কুমার গড়াই যদিও বলেন ,’গাফিলতির অভিযোগ সত্য নয়। খবর পাবার পর দফতরের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাইন মেরামত করে দিয়েছে ।’এর বেশী তিনি আর কিছু বলতে চান নি ।।