এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৮ জুন : কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চ গত ৬ জুন রাজ্যের ডিজিকে ইমেল করে ভোট পরবর্তী হিংসার অভিযোগ জানাতে এবং অভিযোগ খতিয়ে দেখে এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছিল । তার ভিত্তিতে মঙ্গলবার আদালতে রিপোর্ট জমা দিয়েছে রাজ্য সরকার। তাতে জানানো হয়েছে ১২ জুন পর্যন্ত রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসার ৫৬০টি অভিযোগ জমা পড়েছে। এর মধ্যে ৯২টি অভিযোগের ক্ষেত্রে কোনও ধর্তব্যযোগ্য অপরাধ পাওয়া যায়নি। ১১৪টি ক্ষেত্রে অনুসন্ধান করে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়নি। ১৮টি অভিযোগের সঙ্গে ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসের কোনও যোগ নেই। ৮৮টি অভিযোগ একই ঘটনার ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বার দায়ের করা হয়েছে। ৩টি অভিযোগের ক্ষেত্রে অভিযোগকারীর কোনও ঠিকানা নেই । ১৩৮টি অভিযোগের তদন্ত করছে পুলিশ । অর্থাৎ ভোট পরবর্তী হিংসার অধিকাংশ মামলাই রাজ্য মিথ্যা বলে দাবি করেছে বলে খবর ।
এদিকে পরবর্তী হিংসা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসা কেন্দ্রীয় দলের সদস্য ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব দাবি করেছেন যে কোচবিহারে এক মহিলা বিজেপি কর্মীকে ২০ জনে মিলে ধর্ষণ করেছে। তার পরও মহিলার অভিযোগ গ্রহণ করছে না পুলিশ। গোপন জবানবন্দি নেওয়ার ব্যবস্থা করেনি। যেখানে পুলিশের স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করার কথা। একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রীর জমানায় প্রতিবাদ করার লোক নেই। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর লজ্জা করা উচিত। বাংলার মতো মাটিকে এভাবে উনি কলঙ্কিত করছেন ।
তিনি রাজ্য সরকারের ভূকিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,’নির্লজ্জতার একটা সীমা থাকা উচিত । মমতা ব্যানার্জি সেই সীমা পেরিয়ে গিয়েছেন । ক্ষমতায় যখন মানুষ অন্ধ হয়ে যায় তখন তাদের পতন অনিবার্য হয়। উনি পতনের দিকে চলে গিয়েছেন । আর বেশি দিন বাকি নেই। ওনার পতন হবেউ । তখন উনি নিজের ভুল বুঝতে পারবেন। বামেদের মতো হাল হবে এদের। মহিলার ওপর অত্যাচার হলে যদি কোনও শাসক যদি সুবিচার না দেয় তবে তার পতন ঘটান স্বয়ং ঈশ্বর ।’
এদিকে আজ ডায়মন্ডহারবারের আধারমনী গ্রাম পঞ্চায়েতের আলতাবেড়িয়া গ্রামে ভোট পরবর্তী হিংসার চিত্র খতিয়ে দেখতে গিয়েছিল বিজেপির ৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল । তাদের সঙ্গে ছিলেন বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল । অগ্নিমিত্রা পাল নিজের ফেসবুক পেজে লিখেছেন,’ডায়মন্ডহারবার সাংগঠনিক জেলার অন্তর্গত আধারমনী গ্রাম পঞ্চায়েতের আলতাবেড়িয়া গ্রাম।ভোট পরবর্তী হিংসায় এই আলতাবেড়িয়া গ্রামে প্রায় বেশিরভাগ বিজেপি কর্মীরা ঘরছাড়া।তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনীর দ্বারা আক্রান্ত বিজেপি কর্মীরা প্রাণনাশের আশঙ্কায় অন্য গ্রামে ঠাই নিয়েছে।তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় টিমের সঙ্গে আলতাবেড়িয়া গ্রামে অবস্থান বিক্ষোভে সামিল হলাম।তৃণমূলের এই স্বৈরাচারি মনোভাবের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।’
দলের অন্যতম সদস্য রবিশঙ্কর প্রসাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘গোটা গ্রাম ফাঁকা । তৃণমূলের গুন্ডাদের ভয়ে গ্রামের সবাই পালিয়েছে । গ্রামের বাসিন্দাদের সমস্ত গবাদি পশু পর্যন্ত লুটপাট করেছে গুন্ডারা । এ কোন দেশে আমরা বসবাস করছি ? তাই আমরা প্রতিবাদ জানাতে এখানে বসে আছি । মমতাজির এটা কেমন শাসন ব্যবস্থা ? আমরা এর তীব্র ভর্ৎসনা করছি । এটা বেশি দিন চলতে পারে না ৷’।