এইদিন ওয়েবডেস্ক,আইজল,১৩ আগস্ট : মিজোরামে আশ্রয় নেওয়া মায়ানমারের রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বায়োমেট্রিক তালিকাভুক্তি করার প্রক্রিয়া চলছে । এই পরীক্ষায় ১,৯০০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা এবং বাংলাদেশী উদ্বাস্তু চিহ্নিত হয়েছে । সোমবার একজন কর্মকর্তা বলেছেন,রাজ্যের ১১টি জেলায় আশ্রয় নেওয়া ৩২,০০০-এরও বেশি মায়ানমারের রোহিঙ্গা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম (সিএইচটি) থেকে আগত প্রায় ৩,০০০ বাংলাদেশি উদ্বাস্তুদের বায়োমেট্রিক তালিকাভুক্তি ২৮ জুলাই কয়েকটি জেলায় শুরু হয়েছে, এরপর ৩০ এবং ৩১ জুলাই অন্যান্য জেলায়ও বায়োমেট্রিক তালিকাভুক্তি শুরু হয়েছে। তিনি জানান,শুক্রবার পর্যন্ত, জেলা প্রশাসন ১১টি জেলা জুড়ে ১,৯৪৭ জন শরণার্থীর বায়োমেট্রিক এবং জনসংখ্যার তথ্য সংগ্রহ করেছে ।
তিনি বলেন, ত্রাণ শিবিরে বসবাসকারী শরণার্থীদের বায়োমেট্রিক এবং জীবনী সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা সহজ হলেও, আইজল বা জেলার বাইরে যেখানে তাদের বাবা-মা বর্তমানে আশ্রয় নিচ্ছে, সেখানে অধ্যয়নরত শিশুদের তালিকাভুক্ত করতে জেলা কর্মকর্তাদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।তিনি আরও বলেন, ত্রাণ শিবিরের বাইরে বসবাসকারী শরণার্থীদের, বিশেষ করে যারা ভাড়া বাড়িতে বা আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের সাথে থাকেন, তাদের তালিকাভুক্তির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে পারেননি কর্মকর্তারা । কারন হিসাবে তিনি জানান, প্রযুক্তিগত সমস্যা এবং দুর্বল ইন্টারনেট সংযোগের কারণে অনুশীলনটি ধীর গতিতে এগিয়ে চলেছে।
রাজ্যের স্বরাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মিজোরামের ১১টি জেলায় বর্তমানে মোট ৩২,৫০৪ জন মায়ানমার রোহিঙ্গা আশ্রয় নিচ্ছে, যার মধ্যে চাম্ফাই জেলায় সবচেয়ে বেশি ১৩,৫৮৬ জন আশ্রয় নিচ্ছে।তবে, সংখ্যাটি প্রায় প্রতিদিনই পরিবর্তিত হয়, কারণ কিছু উদ্বাস্তু তাদের দেশে ফিরে যাওয়ার এবং বারবার মিজোরামে ফিরে আসার অভ্যাস রয়েছে ।
মায়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের সর্বাধিক সংখ্যক আশ্রয়দানকারী চাম্ফাই ৩১ জুলাই থেকে তালিকাভুক্তি কার্যক্রম শুরু করেছে, ইলেকট্রনিক ডিভাইসের কারিগরি ত্রুটির কারণে কর্মকর্তারা এখন পর্যন্ত মাত্র সাতজন শরণার্থীকে তালিকাভুক্ত করেছেন। শনিবার জেলা প্রশাসন আইজল থেকে নতুন ডিভাইস সংগ্রহ করেছে এবং কর্মকর্তারা আশা করছেন যে চলতি সপ্তাহে কার্যক্রম আরও সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে যাবে।
স্বরাষ্ট্র বিভাগ জানিয়েছে, দক্ষিণ মিজোরামের লংটলাই জেলায় ২,০০০ এরও বেশি বাংলাদেশি উদ্বাস্তু, সেরছিপে ২৬৬ জন এবং লুংলেই জেলায় ৬৩ জন আশ্রয় নিয়েছে।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রতিবেশী দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম নাগরিকরা, যাদের বেশিরভাগই চিন রাজ্যের বাসিন্দা, মিজোরামে পালিয়ে আসে । ২০২২ সালে একটি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের পর বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে আশ্রয়প্রার্থীরা এরাজ্যে আসে । মায়ানমারের চিন এবং বাংলাদেশের বাওম উপজাতি মিজোদের সাথে ঘনিষ্ঠ জাতিগত সম্পর্ক ভাগ করে নেয়।।