এইদিন ওয়েবডেস্ক,লন্ডন,১৫ সেপ্টেম্বর : শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫) যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ‘ইউনাইট দ্য কিংডম’ ব্যানারে মুসলিম অভিবাসী বিরোধী মিছিলে (London Anti Immigrant Rally) বিক্ষোভ দেখালো ১.৫ লক্ষাধিক মানুষ ।অভিবাসন বিরোধী কর্মী টমি রবিনসনের নেতৃত্বে এই সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। অভিবাসীদের তাড়িয়ে ‘দেশ পুনরুদ্ধার’ করার ডাক দেওয়া হয় । এই আন্দোলনকে সমর্থন জানালেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক । তিনি ভার্চুয়াল ভাষণে বলেন,’‘হয় প্রত্যাঘ্যাত করো, নয় মরো’। তবে লন্ডনের হোয়াইট হলের কাছে বিক্ষোভকারী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে, যেখানে ২৬ জন পুলিশ আহত হয়, যাদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ।
মুসলিম বিরোধী হিসেবে পরিচিত ব্রিটিশ দক্ষিণপন্থী নেতা, স্টিফেন ইয়াক্সলি-লেনন ওরফে টমি রবিনসনের নেতৃত্বে ব্রিটেনে অভিবাসন বিরোধী আন্দোলন শুরু হয়েছে । ব্রিটেন ও আমেরিকার পতাকায় মোড়ানো বিক্ষোভকারীরা ‘নৌকা বন্ধ করুন’, ‘তাদের বাড়ি পাঠান’ এবং ‘আমরা আমাদের দেশ ফেরত চাই’ এর মতো স্লোগান তোলেন। সহকারী কমিশনার ম্যাট টুইস্ট বলেন, “অনেক মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে এসেছিলেন কিন্তু বিপুল সংখ্যক মানুষ হিংসা ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এসেছিল । তারা পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে এলোপাথাড়ি লাথি ও ঘুষি মারে এবং নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে। অনেক পুলিশ সদস্যের দাঁত ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং নাক ভেঙে দেওয়া হয়েছে।”
শনিবারের এই সমাবেশে আমেরিকান কর্মী চার্লি কার্ককেও স্মরণ করা হয়। তার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং বাগপাইপার ‘অ্যামেজিং গ্রেস’ গানটি বাজিয়েছিলেন।ব্রিটেনে অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে ‘ইউনাইট দ্য কিংডম’ বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই বিক্ষোভের দাবি হলো অবৈধ অভিবাসীদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া উচিত। গণমাধ্যমের খবর অনুসারে,চলতি বছর ২৮ হাজারেরও বেশি অভিবাসী ইংলিশ চ্যানেল হয়ে নৌকায় করে ব্রিটেনে পৌঁছেছেন।
টমি রবিনসনের আসল নাম স্টিফেন ইয়াক্সলি-লেনন। রবিনসন ইংলিশ ডিফেন্স লীগ প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং মুসলিম-বিরোধী এবং অভিবাসন-বিরোধী বিষয়গুলির বিরুদ্ধে ক্রমাগত আওয়াজ তুলেছেন । রবিনসন নিজেই লন্ডনে অভিবাসন-বিরোধীতার বিরুদ্ধে একটি জনতা জড়ো করেছিলেন। রবিনসন জনতাকে বলেছিলেন যে ‘ব্রিটিশ জনগণ, যারা এই জাতির স্রষ্টা’ তাদের চেয়ে আদালতে অভিবাসীদের বেশি অধিকার রয়েছে। তার আহ্বানে লক্ষ লক্ষ মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এই সময়, টমি রবিনসন এক্স-এ একটি পোস্টে বলেন, “আজ লক্ষ লক্ষ মানুষ যুক্তরাজ্যের মুক্ত বক্তৃতা উৎসবে যোগ দিতে আসছে!” টমি রবিনসন আরও লিখেছেন, “যে কোনও মূলধারার মিডিয়া এটি ছাড়া অন্য কিছু প্রকাশ করে, তারা মিথ্যা বলছে। তাই তাদের বাজে কথার জন্য নির্দ্বিধায় তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করুন এবং এই ভিডিওটি তাদের কাছে পাঠান।”
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, ব্রিটেনে অভিবাসন একটি প্রধান রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বিপুল সংখ্যক মানুষ আশ্রয়ের জন্য সেখানে দেশে আসছে, তাই এই সমস্যাটি দেশটির ভঙ্গুর অর্থনীতির উদ্বেগকে বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত ২৮,০০০ এরও বেশি অভিবাসী ছোট নৌকায় চ্যানেল পার হয়ে সেখানে পৌঁছেছে । ব্রিটেন জুড়ে ক্রমাগত বেড়ে চলেছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড । ব্যাপক লাভ জিহাদ ও ব্রিটিশ মেয়েদের, বিশেষ করে কিশোরীরা তার শিকার হচ্ছে ।।