জর্জ চৌধুরী,বর্ধমান,১২ ডিসেম্বর ঃ আর্থিকভাবে স্বচ্ছল মানুষদের কাছে শীতকাল উপভোগ্য হলেও দরিদ্র মানুষদের কাছে এই ঋতু মুর্তিমান দুর্দৈব । দিন আনা দিন খাওয়া মানুষগুলোর অর্থাভাবে কোনও শীতবস্ত্র পর্যন্ত জোটে না । এদিকে কয়েকদিন ধরেই ঘন কুয়াশার সঙ্গে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা পড়েছে । ফলে ওই সমস্ত দরিদ্র মানুষগুলোর দিন কাটছে চরম কষ্টের মধ্যে । আর তাঁদের এই কষ্টের কথা ভেবেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন শ্রীলা চৌধুরী ও জহরলাল চৌধুরী নামে মন্তেশ্বরের এক দম্পতি । তাঁরা শতাধিক অসহায় দরিদ্র মানুষের মধ্যে কম্বল ও শীতবস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি দরিদ্র পরিবারের ছোট ছোট পড়ুয়ার হাতে একটি করে স্কুল ব্যাগ তুলে দিলেন । কনকনে ঠান্ডার মধ্যে শীতবস্ত্র পেয়ে খুশি এলাকার সহায়-সম্বলহীন মানুষরা । দম্পতির এই প্রকার মানবিক উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন এলাকার বাসিন্দারা ।
শ্রীলা চৌধুরী ও জহরলাল চৌধুরীর বাড়ি মন্তেশ্বরে হলেও কর্মসুত্রে তাঁরা কলকাতায় থাকেন । বাড়িতে রয়েছেন ছেলে শঙ্খ ,মেয়ে শতরুপা ও বৌমা সৌমালি চৌধুরী। এলাকায় পরোপকারী বলে পরিচিত এই দম্পতি । দরিদ্র অসহায় মানুষদের সাহায্যার্থে প্রতি বছরই তাঁরা বিভিন্ন উদ্যোগ নেন । শুধু নিজের গ্রাম নয়,কলকাতাতেও প্রতি বছরই এমনিই কর্মসূচি নেন তাঁরা । তাতে ছেলে-বউমা ও মেয়ের পুর্ন সমর্থন আছে বলে জানিয়েছেন চৌধুরী দম্পতি ।
এবারে শীত পড়তেই তাঁরা দরিদ্র মানুষদের মধ্যে কম্বলসহ শীতবস্ত্র বিতরনের উদ্যোগ নিয়েছেন । শুক্রবার ও শনিবার পরপর দুদিন ধরে মন্তেশ্বর ও মেমারী থানা এলাকার বাসিন্দা শতাধিক অসহায় মানুষের হাতে কম্বল তুলে দেন শ্রীলা চৌধুরী ও জহরলাল চৌধুরী নামের ওই দম্পতি ।
এই বিষয়ে শ্রীলা চৌধুরী বলেন,‘সহায় সম্বলহীন শীতার্ত ব্যক্তিরা না পারে পেট ভরে খেতে,না পারে কোনো অসুখ হলে চিকিৎসা করাতে।শীতের রাতে শীতবস্ত্রহীন মানুষজনকে দেখা যায় যে তারা কীভাবে, কেমন করে কষ্টে রাত যাপন করছে। শীত নিবারণ করার সম্বলটুকুও যাদের নেই তাদের পাশে কম্বল ও শীতবস্ত্র দিয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি।এছাড়াও আমরা বেশ কয়েকজন শিশুর জন্য পড়াশোনার ব্যাগও বিতরণ করি।পথচলতি মানুষ ও শিশুদের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেওয়া থেকে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি আমরা বছরভর নিয়ে থাকি।ক্ষুদ্র সামর্থ্য নিয়ে মানুষের সঙ্গে এইভাবে থাকাটা আমাদের কাছে ভীষণ আনন্দের।এতেই আমরা খুশি।’