এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,২৬ মার্চ : দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একের পর এক ধর্ষণ ও গনধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে । দেশের রাজধানী দিল্লিতে ৪ বছরের এক হিন্দু শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে মহম্মদ আপ্পু নামে ৩৪ বছর বয়সী প্রাইভেটে টিউটরের বিরুদ্ধে । অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের আম্বেদকরনগর জেলায় ২০ বছর বয়সী এক হিন্দু তরুনীকে গণধর্ষণের অভিযোগে আমির, ফয়েজ এবং মোহাম্মদ ফারাজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ।এছাড়া উত্তরপ্রদেশের হাপুড় জেলায় দলিত সম্প্রদায়ের এক নাবালিকাকে আটকে রেখে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে জুনায়েদ নামে এক মুসলিম ব্যক্তির বিরুদ্ধে । অভিযোগ যে নির্যাতিতার পরিবারকে ২-৪ লাখ টাকা নিয়ে বিষয়টি গোপন করার জন্য চাপ দিয়েছিল ধর্ষককের পরিবার । এই ঘটনায় জুনায়েদ,আরিফ ও জামিরুদ্দিন নামে তিনজনের বিরুদ্ধে এফ আই আর নথিভুক্ত করা হয়েছে ।
দিল্লির ৪ বছরের হিন্দু শিশুকন্যাকে ধর্ষণের ঘটনাটি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছেন সাংবাদিক অশ্বিনী শ্রীবাস্তব । তিনি জানিয়েছেন, ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব দিল্লির মান্দাওয়ালি থানা এলাকায় । শিশুটি ৩৪ বছর বয়স্ক মহম্মদ আপ্পুর কোচিং সেন্টারে পড়তে যেত । সেই সুযোগে সে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে । এরপর ক্ষিপ্ত জনতা দিল্লির পান্ডবনগর এলাকায় তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । পাশাপাশি ভাঙচুর চালানো হয় একাধিক গাড়ি । পুলিশ ধর্ষক মহম্মদ আপ্পুকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন তিনি ।
অন্য দুই গনধর্ষনের ঘটনার একটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের আম্বেদকরনগর জেলা ও হাপুড় জেলায় । সংবাদ মাধ্যম ওপি ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে জানা গেছে, শনিবার আম্বেদকরনগর জেলার হাঁসওয়ার থানা এলাকার ২০ বছর বয়সী হিন্দু তরুনীকে মাঠের মাঝে নলকূপের ঘরে আটকে রেখে গনধর্ষণ করেছে আমির, ফয়েজ এবং মোহাম্মদ ফারাজ নামে তিন মুসলিম যুবক । প্রতিবাদ করলে তরুনীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করা হয়। পরে নির্যাতিতাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করর হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ।
প্রতিবেদন অনুযায়ী,শনিবার নির্যাতিতার বাবা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন যে ২৩ মার্চ তার মেয়ে কোচিং পড়তে সাইকেলে করে হীরাপুর বাজারে যাচ্ছিল। পথে হাঁসওয়ার মুন্ডেরা গ্রামের বাসিন্দা ফয়েজ ও ফারাজের সঙ্গে তার মেয়ের দেখা হয়। দুজনেই তার মেয়েকে জোর করে তাদের বাইকে বসিয়ে দেয়। এর পর ফারাজ নির্জন জায়গায় নির্জন জায়গায় তার তৈরি নলকূপের ঘরে তার মেয়েকে নিয়ে যায় । আমিরও তাদের সাথে আসে । এরপর আমির, ফারাজ ও ফয়েজ উপর্যুপরি তার মেয়েকে ধর্ষণ করে । নির্যাতিতা এই কাজের প্রতিবাদ করলে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে তিন ধর্ষক মিলে তার মেয়েকে মারধর করে। গণধর্ষণের পর ফারাজ ও ফয়েজ মেয়েকে আমিরের সঙ্গে নলকূপের ঘরের মধ্যে আটকে রাখে। তারা দুজনেই বাইরে থেকে ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে যায় । ঘটনার কথা জানতে পেরে তারা গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে আনেন ।
অভিযোগকারী জানায়, তার মেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরের মধ্যে পড়ে ছিল। আমিরকেও ঘরের ভেতরে নগ্ন অবস্থায় পাওয়া গেছে। পরিবারের সদস্যরা এলে নির্যাতিতা কাঁদতে কাঁদতে ঘটনার কথা জানায়।
পুলিশ আমির, ফয়েজ এবং ফারাজের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে। তাদের সবার বিরুদ্ধে আইপিসির ৩৭৬-ডি, ৩৪২, ৩২৩, ৫০৪ এবং ৫০৬ ধারায় মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে ।
অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশের হাপুড় জেলায় হাফিজপুর থানা এলাকায় দলিত সম্প্রদায়ের এক নাবালিকাকে অপহরণ করে গনধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে আরিফ ও জামিরুদ্দিনসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে । গত শুক্রবার ১৪ বছর বয়সী ওই দলিত মেয়ের বাবা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন । অভিযোগে তিনি জানান,গত ২১ মার্চ বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তার মেয়ে কাপড় শুকাতে যায়। এসময় একই গ্রামের ইমাম খানের ছেলে জুনায়েদ সেখানে পৌঁছে যায়। সে মেয়েটির মুখ চেপে ধরে তাকে তুলে নিয়ে জামিরুদ্দিনের ডেয়ারির বেসমেন্টে নিয়ে যায় । সেখানে তার মেয়েকে আটকে রেখে ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে । সেই সময় আশেপাশে খেলতে থাকা কয়েকজন শিশু তার মেয়ের চিৎকার শুনে গ্রামে এসে খবর দেয় ।
জানা গেছে, ঘটনাস্থলে পৌঁছালে জুনায়েদ সেখান থেকে পালিয়ে যায়। নির্যাতিতা বাড়িতে পৌঁছে ঘটনার কথা খুলে বলে । নির্যাতিতার বাবা বিষয়টি পুলিশকে জানানোর সিদ্ধান্ত নেন এবং পরের দিন থানায় চলে যান। পথে গ্রামের জমিরউদ্দিন ও আরিফের সঙ্গে দেখা হয়। তারা নির্যাতিতার বাবাকে থামায় এবং ঘটনাটিকে ছোটখাটো আখ্যা দিয়ে বিষয়টি গোপন করার জন্য হুমকি দেয় । অভিযুক্তরা নির্যাতিতার বাবাকে মুখ বন্ধ রাখার জন্য ২-৪ লাখ টাকা দেয়। অভিযোগকারী আপোষ করতে রাজি না হলে জামিরুদ্দিন ও আরিফ তাকে জাত তুলে গালিগালাজ করে । শুধু তাই নয়, নির্যাতিতার পুরো পরিবারকে প্রাণে মারার হুমকিও দেয় ওই দুজন ।।