৭৪ বছর ধরে আমরা যে বিষ লালন করে আসছিলাম, আর যে আমাদের বিরুদ্ধেই বিষোদগার করছিল, সেই ব্রিটিশ সংস্থাকে মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে মোদী সরকার দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা জাতিসংঘের সামরিক পর্যবেক্ষক গোষ্ঠী (UNMOGIP) সম্পর্কে কথা বলছি, যা ১৯৪৮ সাল থেকে ভারতে ঘাঁটি গেড়ে ছিল ।তাদের ডেকে এনেছিল জহরলাল নেহেরু । তাদের কাজ ছিল ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর নিয়ে বিরোধের উপর নজর রাখা, কিন্তু বাস্তবে এই সংস্থাটি ভারতের বিরুদ্ধে একটি বিদেশী সেন্সর বোর্ডের মতো হয়ে উঠেছিল। আর মজার ব্যাপার হলো-তাদের থাকা, খাওয়া, যানবাহন, যাতায়াত – সবকিছুই ভারত সরকারের অর্থ দিয়ে, অর্থাৎ আমাদের করের মাধ্যমে করা হত । UNMOGIP একাধিকবার খোলা মঞ্চে ভারতকে কেবল দোষারোপই করেনি, বরং কাশ্মীরকে দ্বিপাক্ষিক নয়, ত্রিপক্ষীয় সমস্যা হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছে । আর এই সংস্থাকেই মানুষের করের টাকায় এতদিন লালন পালন করে এসেছিল আগের কংগ্রেস সরকার ।
নরেন্দ্র মোদী সরকার আসার পর তারা এমনকি অভিযোগ করতে শুরু করে যে ভারত আমাদের কাজ করতে দিচ্ছে না, আমাদের খরচ মেটাচ্ছে না, ভাতা বৃদ্ধি করুন-আর আমাদের আরও টাকা দিন । এর মানে হল যে ঘরে প্রবেশকারী অতিথিরা এখন নিমন্ত্রণকর্তাকেই হুমকি দিতে শুরু করেছিল । মোদী সরকার তাদের চিরস্থায়ী ব্যবস্থা করতে এক সেকেন্ডও সময় নষ্ট করেনি। বিদেশমন্ত্রী ডঃ এস. জয়শঙ্কর পুরো বিষয়টির দায়িত্ব নেন এবং মাত্র ৩০ মিনিটের মধ্যে UNMOGIP-এর ভিসা বাতিল করা হয়। স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে-‘তোমাদের আর এখানে প্রয়োজন নেই, তোমার ব্যাগ গুছিয়ে ১০ দিনের মধ্যে চলে যাও।’
এই ৭৪ বছরে, ভারত তাদের ৪০ জনেরও বেশি অফিসারের খরচ বহন করেছে। আমরা তাদের আশ্রয় দিয়েছিলাম, গাড়ি দিয়েছিলাম, নিরাপত্তা দিয়েছিলাম—আর বিনিময়ে আমরা কী পেয়েছি? আমাদের বিরুদ্ধে বিবৃতি এবং প্রতিবেদন এবং আন্তর্জাতিক ফোরামে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করা । এখন সেই যুগ শেষ। আর সবচেয়ে বড় প্রশ্ন-কে তাদের ভারতে এনেছিল ? জহরলাল নেহেরু, সেই একই ব্যক্তি যিনি ১৯৪৮ সালে কাশ্মীর সমস্যাটি জাতিসংঘে টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন। কাশ্মীর, যা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় ছিল, তাকে আন্তর্জাতিক ইস্যুতে পরিণত করেছিলেন জওহরলাল নেহেরু ।
আর আজ পর্যন্ত আমরা এর পরিণতি ভোগ করছি – যতবারই জাতিসংঘের কোনও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, ততবারই তাতে ভারতকে কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এখন যখন মোদী সরকার UNMOGIP-কে বাইরের দরজা দেখিয়ে দিয়েছে, তখন মনে হচ্ছে শেষ ব্রিটিশ পতাকাটিও নামিয়ে ফেলা হল । আজও দেশের ৯৯% মানুষ জানত না যে জাতিসংঘের নামে আমাদের দেশে ব্রিটিশদের ছায়া বিদ্যমান রয়েছে ।
এবার মোদী সরকার নীরবে কিন্তু নির্ণায়কভাবে আক্রমণ করেছে । এটি কেবল একটি কাগজপত্র নয়, এটি সাংস্কৃতিক, কূটনৈতিক এবং মানসিক স্বাধীনতার প্রতীক। কংগ্রেস ৭৪ বছরে যে কাজ করার আগ্রহ দেখায়নি, তা মোদী সরকার ৩০ মিনিটের মধ্যে সম্পন্ন করেছে ।এখন ভারতে বসে থাকা কোনও বিদেশী প্রতিষ্ঠান ভারতকে শেখাবে না যে আমাদের কী করা উচিত এবং কী করা উচিত নয়। এখন ভারত নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে কে তার ভূমিতে থাকবে আর কে থাকবে না। এটি ছিল ইংরেজ ছায়ার শেষ চিহ্ন— এখন আমরা সেটাও উপড়ে ফেলেছি ।।

