প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় বর্ধমান ২৮ সেপ্টেম্বর : দেবী দুর্গার মূর্তির সামনে দাঁড়িয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করতে করতে কেঁদে ভাসিয়ে ’ফুটেজ’ কুড়ানো নয়। বরং এর ঠিক উল্টো পথেই রবিবার মহাষষ্ঠীর দিন দেবী দুর্গার আরাধনায় মাতলেন রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ।এদিন নিজের বিধানসভা এলাকার অনাথ আশ্রমে পৌছে গিয়ে মন্ত্রোচ্চারণ করে মন্ত্রী মশাই ‘জীবন্ত দুর্গা’ রূপে অনাথদের পুজো করলেন । এমনকি মৃণ্ময়ী দুর্গা মূর্তির সামনে প্রদীপ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে তিনি অনাথদের চিন্ময়ী দুর্গা জ্ঞানে আরতিও করলেন।এদিন আশ্রমে উপস্থিত থাকা বহু মানুষের হাতে মন্ত্রী মশাই নতুন বস্ত্রও তুলে দেন। অসহায় ও অনাথদের প্রতি মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের এহেন শ্রদ্ধা জ্ঞাপন আশ্রমিকদেরও মুগ্ধ করে।
অনাথ ও বৃদ্ধাশ্রমটি বেশ কয়েক বছর আগে গড়ে ওঠে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথের খাসতালুক পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ১ ব্লকের দামোদর পাড়ায়। এই অনাথ ও বৃদ্ধাশ্রমে থাকে অনাথ শিশু, অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা। তাঁদের সহ স্থানীয় দুঃস্থ মানুষজনকে পুজোর আনন্দে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ২০০১ সালে এখানে দুর্গা পুজোর সূচনা করেন। এবছর সেখানেই হচ্ছে ২৫ তম বর্ষের পুজো।অনাথ আশ্রমে আবাসিক রিয়া ওরাও এদিন সাজেন দুর্গা,সুরলিনা মাণ্ডি সাজেন সরস্বতী,প্রমিলা হাঁসদা সাজেন সরস্বতী। এছাড়াও সুমি মাণ্ডি ,রাজেশ মুর্মু সহ অন্য আবাসিকদের কেউ কেউ কার্তিক ,গনেশ এবং বাকিদের কেউ সাজে মহিষাসুর আবার কেউ সাজে সিংহ। এঁদেরকেই এদিন জীবন্ত দেব-দেবী জ্ঞানে পুজো করেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তাঁদের কাছে তিনি আশীর্বাদ প্রার্থনাও করেন। পুজো শেষ হতেই সাজ পোশাক খুলে ওই অনাথরা আশ্রমে নিমন্ত্রিত মানুষজনের পাতে ডাল ভাত,তরকারি তুলে দেন।ষষ্ঠীর দিন থেকে টানা ৫ দিন অনাথরাই অন্নভোগ বিতরণের দায়িত্ব পালন করবেন বলে আশ্রমিকদের কথায় জানা গিয়েছে।
মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন,’আশ্রমে থাকা অনাথ, অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, দুঃস্থরা পুজোর আনন্দ থেকে দূরে থাকবে এটা আমি মন থেকে মেনে নিতে পারি না। তাই আমি ২০০১ সালে এই অনাথ আশ্রমে দুর্গাপুজো শুরু করি। আমার মনে হয়েছে ওঁদের মধ্যেই ঈশ্বর বিরাজমান রয়েছেন। তাই ওঁদের মধ্যেই কেউ না কেউ পুজোর উদ্বোধন করেন। মন্ত্রী মশাই এও জানান, ‘পুজো উপলক্ষে অনাথ আশ্রমে থাকা অনাথ শিশুরা অনেক গুরু দায়িত্ব পালন করে ।ওঁরাই আগমনীর সুরে গান গায়,পুজো দেখতে আসা মানুষজনকে প্রসাদ বিতরণও করে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও ওঁরাই অংশগ্রহন করে। এদিন ওঁরাই কেউ দুর্গা, কেউ গণেশ, কার্তিক সাজে সেজে ওঠে। ওঁদেরকেই আমি জীবন্ত দেব দেবী জ্ঞানে পুজো করেছি । অঞ্জলি দি আরতিও করেছি।এখানে পুজো দিয়ে মানসিক তৃপ্তি পান বলে মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ জানিয়েছেন।।