এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৭ ডিসেম্বর : বাংলাদেশে হিন্দু নরসংহারের পুরনো ইতিহাস আছে । তবে মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে ইসলামিক চরমপন্থী গোষ্ঠীগুলির হাতে দেশের শাসনক্ষমতা চলে আসার পর সাম্প্রদায়িক হিংসা আরও প্রবল আকার ধারন করেছেন । নিয়মিত ব্যবধানে হিন্দু নরসংহার হচ্ছে বাংলাদেশে । তরতাজা হিন্দু যুবকদের নির্মমভাবে পিটিয়ে ও জীবন্ত পুড়িয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে । কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস এনিয়ে আশ্চর্যরকমভাবে চুপ । বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে মুসলিম পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর কথিত অত্যাচার নিয়ে সরব হওয়া মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি ও তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক ব্যানার্জির বাংলাদেশের হিন্দু নরসংহার নিয়ে কার্যত কোনো প্রতিক্রিয়া নেই । বিজেপির অভিযোগ যে রাজ্যের মুসলিম ভোটব্যাংককে সন্তুষ্ট করতেই এই অবস্থান নিয়েছে মমতা ব্যানার্জি ও তার দল ।
বাংলাদেশের হিন্দু নরসংহার নিয়ে তৃণমূলের এই প্রকার “ভন্ডামি” ফের একবার প্রকাশ্যে এল গতকাল। আসলে,শুক্রবার বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন টালিগঞ্জের অভিনেত্রী পার্নো মিত্র । তৃণমূল ভবনে এক অনুষ্ঠানে তার হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও জয়প্রকাশ মজুমদাররা । যোগদানের পর জনৈক এক মহিলা সাংবাদিক অভিনেত্রী পার্নো মিত্রকে মঞ্চের পাশে ডেকে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক সময়ে একের পর হিন্দুকে হত্যার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চান । অভিনেত্রী মনযোগ দিয়ে প্রশ্ন শুনে প্রতিক্রিয়া দিতে যাবেন, ঠিক সেই সময় মঞ্চে চেয়ারে বসে থাকা চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন,”অ্যাই, ও এই বিষয়ে কিছু বলবে না ।”
ভিডিওটি এক্স-এ শেয়ার করেছেন বিজেপি নেত্রী কেয়া ঘোষ । তিনি লিখেছেন,’চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য পার্নো মিত্রকে বাংলাদেশের দীপু দাসের নির্মম হত্যা নিয়ে কিছু বলতে মানা করছেন। আসলে এসব “ছোট্ট ঘটনা” নিয়ে তৃণমূলের কোনো মাথাব্যথা নেই।’
বাংলাদেশে হিন্দু নরসংহারের পরিসংখ্যান
বাংলাদেশে বিগত মাত্র ৪ মাসে ২৩ জন হিন্দুকে হত্যার ঘটনা ঘটেছে । এর আগে ২০০১ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি ও জামাত ইসলামী জোট ক্ষমতায় আসার পরে লাগাতার হিন্দুদের উপর আক্রমণ শুরু হয় । ২০০৩ সালে বাঁশখালীতে একটি হিন্দু পরিবারের ১১ জনকে একসাথে জীবন্ত জ্বালিয়ে মারা হয়েছিল। ওই বছরের বহু ঘটনার মধ্যে এটি ছিল অন্যতম নৃশংস গনহত্যা। একটি মানবাধিকার সংগঠন “আইন ও সালিশ কেন্দ্র” র দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০১৩ থেকে ২০২১, এই আট বছরে হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে ৩৬৭৯ টি। এর মধ্যে হত্যা, ধর্ষণ, লুট, অগ্নিসংযোগ সব আছে। শুধুমাত্র ২০২২ সালে হিন্দু হত্যা হয়েছে ১৫৪ জন। হত্যা ছাড়া অন্যান্য প্রকারের অত্যাচার তো ছিলই । শুধু খুন করা হয়েছে ১৫৪ জন কে। ২০২৪ এর আগস্ট থেকে ২০২৫ এর প্রথম পর্যন্ত, শুধুমাত্র এই কয়েক মাসে ২৩ জন হিন্দু হত্যা করা হয়েছে।।

