সেখ মিলন,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),২৫ জানুয়ারী : ‘সকলি কপালে করে….. /যদি থাকে এই কপালে
রত্ন এনে দেয় গোপালে /কপালে বিমতি হলে
দূর্বা বনে বাঘে মারে ।’ লালন ফকিরের এই লোকগীতি যে কতটা বাস্তব তা ফের একবার প্রমানিত হল । যে মিষ্টির দোকানের কর্মচারী মাস পোহালে ৪-৫ হাজার টাকা পাওয়া বেতনে সারা মাস সংসারের খরচ চালাতেন, আজ ‘গোপাল’- এর আশীর্বাদে তিনি কোটিপতি । পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার মাহাচান্দা গ্রামের বাসিন্দা তুফান কুষমেটে নামে বছর আটত্রিশের ওই যুবকের চোখেমুখে এখন একরাশ স্বপ্ন । একটা বাসস্থান নির্মান,দুই ছেলেকে সুশিক্ষিত করে তোলা আর বৃদ্ধ বাবা-মায়ের বাকি জীবন আরামদায়ক করে তোলার পরিকল্পনা ইতিমধ্যে করে ফেলেছেন তুফানবাবু ।
মাটির দেওয়াল আ্যসবেসটস ছাউনি দেওয়া বাড়িতে বসবাস মাহাচান্দা গ্রামের বাসিন্দা তুফান কুষমেটের । বাড়িতে রয়েছেন বাবা, মা, স্ত্রী ও দুই নাবালক পুত্র জয় ও বিজয় । বড় জয় দশম শ্রেণীতে ও ছোট ছেলে বিজয় নবম শ্রেণীতে পড়াশোনা করে । বাবা আদরবাবু জনমজুরির কাজ করেন । তবে বয়সের কারনে আর সেভাবে কাজে যেতে পারেন না । মা শর্মানীদেবী ও স্ত্রী সান্তনাদেবী বাড়িতেই থাকেন । মিষ্টির দোকানে কারিগরের কাজ করে অতিকষ্টে ৬ জনের সংসার চালান তুফানবাবু ।
তিনি বলেন,’মাঝে মধ্যে টিকিট কাটার নেশা ছিল । মঙ্গলবার সকালে মাহাচান্দা বাসস্ট্যান্ড এলাকার এক টিকিট বিক্রেতার কাছে তিরিশ টাকার টিকিট কেটেছিলাম । তারপর বিকেল নাগাদ রেজাল্ট বের হতেই জানতে পারি আমার টিকিটে প্রথম পুরষ্কার এক কোটি টাকা পড়েছে ।’
জানা গেছে,বিকেল প্রায় তিনটে নাগাদ যখন টিকিটের রেজাল্ট জানতে পারেন তখন মিষ্টির দোকানে কাজ করছিলেন তুফানবাবু । তারপর তিনি ছুটে বাড়ি চলে গিয়ে পরিবারের লোকজনদের সেই খবর দিতেই সকলে আনন্দে মেতে ওঠেন । খবর চাওড় হতেই প্রতিবেশীরা এসে অভিনন্দন জানিয়ে যায় । তুফানবাবুর বাবা আদরবাবু বলেন, ‘সারা জীবনটা খুব কষ্টে কেটেছে । এবার নিশ্চিন্ত হওয়া গেল । ছেলের নিজের একটা দোকান আর নাতিগুলো ঠিকমত মানুষ হোক শুধু এই চাই ।’।