এইদিন ওয়েবডেস্ক,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৫ ফেব্রুয়ারী : হাওড়া রেল স্টেশন থেকে নিখোঁজ হয়ে গেলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতারের বাসিন্দা এক পরিযায়ী শ্রমিক । নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার দীর্ঘ ১২ দিন ধরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার কোন হদিস না পেয়ে ভাতার থানায় একটা নিখোঁজ ডায়েরি করেছে পরিবার । জানা গেছে নিখোঁজ ব্যক্তির নাম সুনীল মূর্মু । তার বাড়ি ভাতার থানার রামনগর গ্রামে । থানায় নিখোঁজ ডাইরি করার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দ্বারস্থ হয়েছেন সুনীলের ছেলে বাবুসর মুরমু ।
আজ শনিবার ভাতার থানায় একটি নিখোঁজ ডাইরি করেছেন বাবুসর মুরমু ৷ তাতে তিনি জানিয়েছেন,গত ৩ ফেব্রুয়ারী তার বাবা তামিলনাড়ু যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাওড়া রেলস্টেশন পর্যন্ত গিয়েছিলেন বলে জানতে পেরেছেন । তারপর তিনি হঠাৎ উধাও হয়ে গেছেন । বিগত ১২ দিন ধরে তিনি তার বাবার সন্ধানে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন । কিন্তু কোন হদিস করতে পারেননি । তিনি আরো জানান যে নিখোঁজ হওয়ার সময় তার বাবার পরনে ছিল হাপহাতা গেঞ্জি, হলুদ রঙের বারমুডা প্যান্ট, পায়ে জুতো এবং কাঁধে একটা সাদা গামছা ।
আবেদনকারী তার বাবার শারিরীক গঠনের বর্ণনা দিয়ে পুলিশকে জানিয়েছেন,তার বাবার উচ্চতা ৫.৫ ফুট,গায়ের রঙ শ্যামলা, মাথায় হাল্কা টাক ও কোঁকড়ানো চুল । এছাড়া সাওতালি ও বাংলা ভাষায় সাবলীল কথা বলতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিখোঁজ ডাইরির ছবি বার্তা ভাগ করে বাবুসর মুরমু কাতর আবেদন জানিয়ে লিখেছেন,’যদি আপনারা কেউ পারেন আপনাদের কোনো ফেসবুক গ্রুপ থাকে একটু সাহায্য করুন প্লিজ, বাবা হারিয়ে যাওয়ার সময় মানষিক অবস্থা ভাল ছিল, হাওড়া স্টেশনের বাইরে থেকে আসি বলে আর ফিরে আসেনি, কাজের জন্য তামিলনাড়ুর উদ্দেশ্য বাড়ি থেকে হাওড়া পৌঁছায়, সাথের মানুষ জন অনেক খোঁজাখুঁজি করেছে কিন্তু আর তাকে পায়নি । প্লিজ একটু সাহায্য করুন ৷’।
জানা গেছে,ভাতার থানার রামনগর গ্রামের বাসিন্দা সুনীল মূর্মুর বাড়িতে আছেন স্ত্রী,এক ছেলে ও দুই মেয়ে । এক মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে । রামনগর গ্রামের পাশে সামন্তী রোডের পাশে পূর্ত দপ্তরের জায়গার উপর ঘর নির্মান করে পরিবার নিয়ে তার বসবাস । রামনগর গ্রামের এক কৃষকের খেতমজুরের কাজ করতেন মধ্যবয়সী সুনীল । কিন্তু তাতে হতদরিদ্র পরিবারের দু’বেলা অন্ন সংস্থান করে উঠতে পারছিলেন না তিনি । এই কারনে ভালো উপার্জনের আশায় একই পাড়ার আদিবাসী পুরুষদের সাথে তামিলনাড়ুতে শ্রমিকের কাজ করতে গিয়েছিলেন ওই আদিবাসী ব্যক্তি । কিন্তু হাওড়া রেলস্টেশন থেকে রহস্যজনকভাবে তিনি নিখোঁজ হয়ে যান । দলের বাকি সদস্যরা বাড়িতে ফোন করে একথা জানায় । পাশাপাশি সুনীলের আচমকা উধাও হয়ে যাওয়ার পরে দলের কেউ কেউ তামিলনাড়ু গেলেও বাকিরা ভয়ে ফের বাড়ি ফিরে আসেন । এদিকে সুনীলের জন্য চরম উদ্বিগ্ন তার পরিবার । যেটা জানা যাচ্ছে যে মদের নেশা করতেন সুনীল মূর্মু । তাই নেশা করতে গিয়ে তিনি কোনো দুষ্কৃতী চক্রের ফাঁদে পড়েছেন বা দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন কিনা তা নিয়ে আশঙ্কিত পরিবারের লোকজন ।।
Migrant worker from Bhattar disappears from Howrah railway station, anxious boy takes to social media