প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৭ মে : এখন গরমের ছুটি চলছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলিতে। কিন্তু তাতে কি।এবার গরমের ছুটির মধ্যেও মিড-ডে মিল পাবে পড়ুয়ারা। এমনই নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের মিড-ডে মিলের প্রকল্প অধিকর্তা । আগে এমনটা কখনও না হলেও এবার এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি একেবারেই ‘ব্যতিক্রমি’ বলে মনে করেছেন অনেক শিক্ষক ।
কোভিড অতিমারির কারণে লকডাউন চলায় দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ ছিল । সেই সময় পড়ুয়ার অভিভাবকদের মিড-ডে মিল বিলি করা হয়েছিল।মিড-ডে মিলের প্রকল্প অধিকর্তা যে নির্দেশিকা জারি করেছেন তাতে এবার গরমের ছুটির মধ্যে পড়ুয়া পিছু ২ কিলো চাল, ২ কিলো আলু, ২৫০ গ্রাম চিনি, ২৫০ গ্রাম ডাল ও একটি করে ১০ টাকা দামের সাবান দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।এমনকি ২৫ মের মধ্যে স্কুলগুলিকে মিড-ডে মিলের এইসব ব্যবস্থা শেষ করে ফেলার কথাও বলা হয়েছে। মিড-ডে মিলের চাল যেহেতু সরকারী ভাবে দেওয়া হয় তাই নির্দেশিকায় চাল ছাড়া বাকি সব সামগ্রী স্থানীয় ভাবে কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।যদিও অনেক স্কুলের শিক্ষকরা এদিন দাবি করেছেন, তাঁদের ভাঁড়ারে পর্যাপ্ত চাল নেই। আবার এখন আলুর দাম ঊর্দ্ধমুখী। অতিমারির সময়ে শিক্ষকদের আলু কিনতে গিয়ে সমস্যায় পড়েতে হয়েছে । আবার বরাদ্দ অর্থের চেয়ে খোলা বাজারে দাম বেশি । সেই কারণে খোলা বাজারের দাম দেখে আলু কেনার টাকা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষকরা ।
যদিও প্রশাসনের তরফে বলা হয়েছে,স্কুল গুলিকে বাড়তি চাল দিয়ে দেওয়া হবে, আবার আলুর দাম কত জানতে চেয়ে কৃষি বিপণন দফতরকে চিঠি করেছেন ওসি (মিড-ডে মিল) মৌলি সান্যাল। দফতরের দাবি, সরকারি নির্ধারিত দামেই আলু কেনার জন্যে স্কুলগুলিকে বলা হবে। চিনি, ডাল কেনার বরাদ্দ সরাসরি স্কুলগুলিকে দেবে মিড-ডে মিল দফতর। তবে সাবান কেনার বরাদ্দ নিজেদের হাতেই রাখবে জেলা প্রশাসন।
এর কারণ প্রসঙ্গে মিড-ডে মিল দফতরের বক্তব্য , জেলায় মিড-ডে মিল খাওয়ানো হয় এমন স্কুলের সংখ্যা ৪৭১১টি। অতিমারির সময় সাবান কেনা নিয়েও বিভিন্ন স্কুলের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দিয়েছিল। এক-একটি স্কুল এক-একটি সংস্থার সাবান কিনে পড়ুয়াদের মধ্যে দেওয়ায় স্থানীয় ভাবে বিভ্রান্তি দেখা গিয়েছিল। সেই বিভ্রান্তি যাতে না হয়, সে জন্যেই জেলা থেকে সাবান কিনে স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে দফতর।
ওসি (মিড-ডে মিল) মৌলি সান্যাল বলেন,’খুব তাড়াতাড়ি স্কুলে সামগ্রী পৌঁছে যাবে। করোনা বিধি মেনেই স্কুলগুলিকে মিড-ডে মিল বিলি করতে হবে।“ জেলা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “সাধারণত গরমের ছুটি ৪৫ দিন ধরে হয় না। সে জন্যেই রাজ্য সরকার ’ব্যতিক্রমী’ হিসেবেই অতিমারির সময়ের মতো করেই এবার মিড-ডে মিল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।’।