সোয়াপিং শব্দটার প্রায় সকলেই পরিচিত। Swapping (verb) যার বাংলা মানে দাঁড়ায় বিনিময়/বদলাবদলি করা। অদল বদল /বিনিময় অনেক কিছুর হয়ে থাকে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রী থেকে শুরু করে যেকোনো পণ্য কেনাবেচা মূল্যের বিনিময়ে । কিন্তু সম্পর্কের বিনিময়, তাই আবার হয় নাকি ! এটা ভাবলে ভুল হবে না আধুনিক সমাজে এরকমই এক গল্পের শুরু:
ওরা দুজন স্কুলের বন্ধু । স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে ১ জন বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ডিগ্রি নিয়ে কর্পোরেটে উচ্চপদে আসীন। মোটা মাস মাইনে, সমাজের এলিট সম্প্রদায়ের একজন হয়ে উঠেছে অতিশ। দ্বিতীয় বন্ধু শিল্পী মানুষ। শিল্পই নেশা ও পেশা সোহমের।
দুই বন্ধুর কারোর মধ্যে অনেকদিন যোগাযোগ ছিল না। দুজনে আলাদা কলেজে পড়তো। হঠাৎ একদিন সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরার সময় অতীশের গাড়িতে সোহমের ধাক্কা লাগে। সোহম ছিটকে পড়ে যায়। বন্ধু কে চিনতে কোন অসুবিধা হয়নি। অতীশ বন্ধুকে নিয়ে হসপিটালে ছুটে যায় সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। সোহম কে বাড়ি পৌঁছে দিতে গিয়ে অনিশা দরজা খুললে স্বামীকে আহত অবস্থায় দেখে উদ্বিগ্ন হয়। অনিশা আধুনিকা পরমাসুন্দরী , ভাগ্যবশত ওর এক্স গার্লফ্রেন্ড। ওর পীড়াপীড়িতে এক কাপ চা খেয়ে বাড়ি ফেরে। রাত্রে অনীশা কে মনে করে পুরনো দিনের স্মৃতি রোমন্থন করে অতীশ । পরদিন ফোনে বন্ধুর খবর নেয় । এর কিছু পরে একদিন সোহমের বাড়িতে গিয়ে নেমন্তন্ন করে নিজের বিবাহের। সোহম তার স্ত্রীকে নিয়ে অতীশ বিয়েতে আসে । প্রায়ই যাতায়াত লেগেই থাকে সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়।
মলিনাও অপূর্ব সুন্দরী। আর্ট কলেজের ছাত্রী। প্রেমের সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়়ে বিবাহ। কিছু মাস পর একদিন কফি শপে অতীশ প্রস্তাব দেয় সোহমকে যে ওয়াইফ সোয়াপিং এর। প্রথমে সোহম হেসে উড়িয়ে দেয় , অতীশের কথা সিরিয়াসলি নেয় না। কিছু দিন পর অনীশার প্রতি আকর্ষণে বারবার প্রস্তাব দেয় অতীশকে। সোহম অনীষাকে ব্যাপারটা জানায়। অনিশা কোন উত্তর দেয় না। হঠাৎই অনীশার একমাত্র সদ্যোজাত ছেলের হার্ট ব্লক নিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হয়। বিপুুল অর্থ ব্যয়়ে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য সোহমের নেই। অদৃষ্ট বা নিয়তির পরিহাসে আত্মীয় স্বজনের কাছে সাহায্য না পেয়ে কোটিপতি বন্ধুর কাছে ধার নিয়ে ছেলেকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরে।
দুই বন্ধু বছরখানেক পর বেড়াতে যায় পাহাড়ে নিজের পরিবার নিয়ে। বেশ মজা আনন্দ-ফুর্তিতে কটা দিন কাটে। একদিন রাত্রে চার বন্ধুর মদের ঠেকে আবার সেই কথা ওঠে। নেশার ঘোরে উভয় পক্ষ রাজি হয়ে গেলে ওয়াইফ সোয়াপিং এর কল্পনা বাস্তব রূপ নেয় । পরদিন সকালে সোহম ও অনীশা অতীশ ও তার স্ত্রী মলিনা কে না জানিয়ে স্টেশন থেকে তৎকাল টিকিট করে বাড়ি ফেরে।
অনেকদিন কেউ কারো সঙ্গে দেখা হয় না। যেখানে মধ্যবিত্ত পরিবারে পরকীয়া কে হীন নজরে দেখা হয়, সেখানে সোহম…! আত্মগ্লানিতে ভুগে মনে মনে দোষারোপ করতে থাকে নিজেকে । কেন সে রাজী হল এই অসম্মান , লজ্জাজনক ব্যাপারটায়, ভাবতে থাকে…. !