বেকার জীবনের যুদ্ধ জয় করে অবশেষে সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত হলো বছর পঁচিশ এর রীতা। পোশাক আশাকে সাধারণী হলেও, তার কথাবার্তায় ও ব্যবহারে প্রখর বুদ্ধির ছাপ। কলকাতায় বড়ো অফিসে চাকরিতে যোগ দেওয়ার প্রথম দিন আলাপ হলো তার সাথে একই সঙ্গে যোগ দেওয়া আরো তিনজন যুবকের সাথে। অল্প কয়েকদিনেই রীতা, শুভঙ্কর, মুকেশ ও রবীন এর বেশ জমাটি বন্ধুত্ব গড়ে উঠলো। এমনি করে একদিন তারা শুনলো অফিসের বার্ষিক কনফারেন্স এর উদ্দেশ্যে রামগড় যেতে হবে। প্রবল উৎসাহে আনন্দে তারা অন্য সহকর্মী দের সাথে রওনা হলো রামগড় এর উদ্দেশ্যে। বিশাল আম বাগান ও অন্য গাছ গাছালিতে ভরা মনোরম পরিবেশে তাদের কনফারেন্স স্থল।
সারাদিন কনফারেন্স এর শেষে, রীতা শুভঙ্করকে বললো। চল ওই আম বাগানে আমরা ঘুরে আসি। দুজনে আম বাগানে ঘুরতে ঘুরতে তাদের সারাজীবন এর কথা, সুখ দুঃখ লড়াই এর কথা বিনিময় করতে থাকলো। কথার স্রোতে হারিয়ে যেতে যেতে রীতা হটাৎ একটা ইঁটে হোঁচট খেলো। রীতাকে পড়তে না দিয়ে শুভঙ্কর তাকে ধরে ফেললো। হাঁফ ছেড়ে রীতা বললো। শুভঙ্কর আমাদের বন্ধুত্বকে সারাজীবন এমনি করে আগলে রাখিস।
এমনি করে হাঁটতে হাঁটতে সন্ধ্যা নেমে এলো। তখন রীতা বললো চল এবার রুমে ফেরা যাক। কিছুদূর হেঁটেই একটি আম গাছের ছায়ায় দুজনের হাতে হাত ছুঁয়ে গেলো। রীতা শুভঙ্করের হাত চেপে ধরলো। মুহূর্তের আকস্মিকতায় অবিষ্ট হয়ে পড়লো দুজনে। কারো মুখে কোনো কথা সরলো না। দুজনে দুজনার হাত ধরে চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে থাকলো। বহুক্ষণ এমনি করে দাঁড়িয়ে থাকার পর সম্বিৎ ফিরলো দুজনের। রীতা শুভঙ্কর কে বললো আমায় রুমে এগিয়ে দিয়ে আসবি চল। রুমে গিয়ে গল্প করতে করতে হটাৎ লোডশেডিং । শুভঙ্কর মোমবাতি জ্বালিয়ে রীতার মুখের সামনে ধরলো। মোমবাতির আলোয় রীতার মুখ যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। মোমবাতিটা ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দিয়ে রীতা হটাৎ জাপটে ধরলো শুভঙ্করকে। শুভঙ্করের হাত থেকে মোমবাতি পড়ে গেলো। নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলো সে। রীতা বললো চেপে ধর আমায়। শুভঙ্কর দুহাতে চেপে ধরলো রীতাকে। দুজনের দুটি ঠোঁট মিলে গেলো। তখনই হটাৎ করে জ্বলে উঠলো বিদ্যুতের বাতি।
দুজনে দেখলো দুজনার দুচোখ জলে ভরে যাচ্ছে, অপূর্ব সন্মোহনে মধুর সন্ধ্যায়।।