শেখ মিলন,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),০৬ জানুয়ারী : সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া হল পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার ওড়গ্রামের পীর বাবার ঔরসে । রবিবার পীর বাবার মাজারে চাদর চড়িয়ে সকলের মঙ্গল কামনা করে সম্প্রীতির মিলন মেলার উদ্বোধন করেন সাহেবগঞ্জ -২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রদ্যুৎ কুমার পাল সহ বিশিষ্ট জনেরা ।
বেশ প্রাচীন এই পীর বাবার ঔরসকে ঘিরে রয়েছে নানান কাহিনী । জানা গেছে ,কয়েকশো বছর পূর্বে ওড়গ্রাম শহীদ শাহার মাজার প্রাঙ্গণ ছিল ঘন জঙ্গলে ঘেরা। হজরত সৈয়দ শাহা ওই জঙ্গলে সর্বদায় ধ্যানে মগ্ন থাকতেন। একদিন সৈয়দ সাহার সঙ্গে আলাপ হয় ওই এলাকার এক ব্রাহ্মণ সাধকের। তিনি সৈয়দ শাহার সঙ্গে একসঙ্গে থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। দীর্ঘদিন ধরেই দুই বন্ধু ওই ঘন জঙ্গলে বসে সাধন ভজন করতেন। ব্রাহ্মণ সাধক ইচ্ছা ছিল তাঁর মৃত্যুর পর সৈয়দ শাহার কবরের পাশে তাঁকে যেন কবরস্থ করা হয়। তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী দুজনের মৃত্যুর পর পাশাপাশি ওরগ্রাম হাটতলার পাশে পীরস্থানে ভিন্ন ধর্মী দুই সাধকের সমাধিস্থ করা হয়। রীতি মেনে প্রতিবছর মহাধুমধামে হিন্দু-মুসলিম যৌথ উদ্যোগে পীর বাবার ঔরস উদযাপন করা হয়।
রবিবার পীর বাবার ঔরস উপলক্ষ্যে মনস্কামনা পূরণের আশায় হাজার হাজার হিন্দু ভক্তদের ঢল নামে পীর বাবার মাজারে। এলাকাবাসীদের মতে পীরবাবা খুবই জাগ্রত । যে- যা মনষ্কামনা করেন তাঁর আশা পূর্ণ হয়। পাশাপাশি পীর বাবার ঔরস উপলক্ষ্যে ওড়গ্রাম বুলবুলি ডাঙ্গায় মিলন মেলার আয়োজন করা হয়। হিন্দু মুসলিম যৌথ উদ্যোগে শান্তিপূর্ণভাবেই এই মেলার আয়োজন করা হয়।
উদ্যোক্তাদের তরফে মিলন কুমার বিষ্ণু জানান, ওড়গ্রামে হজরত পীর সৈয়দ সাহেবের ঔরস সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য নজির। দীর্ঘদিনের এই মেলবন্ধন আজও অব্যাহত ওড়গ্রামে। আগামী দিনে ও সম্প্রীতির এই অক্ষুন্নতা বজায় রাখতে বদ্ধপরিকর ওড়গ্রাম বাসী। সাহেবগঞ্জ-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রদ্যুৎ কুমার পাল বলেন, একদিকে যেমন পীরবাবার ঔরসে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষজন ঔরস পরিচালনা করেন ঠিক তেমনি ওড়গ্রাম সর্বজনীন দুর্গাপুজোয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেন। দীর্ঘদিনের এই ভাবধারা আজও অব্যাহত। আগামী দিনে ও এই ভাবেই এগিয়ে চলার বার্তা দেন স্থানীয় প্রধান প্রদ্যুৎ কুমার পাল।।