এইদিন ওয়েবডেস্ক,টাঙ্গাইল,১৬ সেপ্টেম্বর : ফের এক হিন্দু কিশোরীকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশে । এবারে কলেজ যাওয়ার সময় ৫-৬ জন মুসলিম যুবক মিলে ১৬ বছরের এক কিশোরীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ । এই ঘটনায় অপহৃতা কিশোরী সাগতিকা দের (১৬) দাদা সাগর দে স্থানীয় দেলদুয়ার থানায় একটা লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন । তিনি স্থানীয় বাসিন্দা মানিক মিয়ার ছেলে আইয়ুব আলী (২৩), আবু বক্করের ছেলে নবাব আলী (৩২), মৃত জব্বার মন্ডলের ছেলে মানিক মিয়া (৫৫),মানিক মিয়ার স্ত্রী এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৪-৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন । অভিযুক্তদের সকলের বাড়ি ভালিয়াতী থানার ২ নম্বর শল্লা ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আনাইলা এলাকায় ।
অপহৃতা কিশোরী সাগতিকা দের বাড়ি বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার থানার অন্তর্গত হিঙ্গানগর এলাকায় । মেয়েটি টাঙ্গাইল কুমুদিনি সরকারী মহিলা কলেজর একাদশ শ্রেনীর ছাত্রী। গত ১২ সেপ্টেম্বর থানায় দায়ের করা অভিযোগে অপহৃতা কিশোরীর দাদা সাগর সেন পুলিশকে জানিয়েছেন, ঘটনার মূল অভিযুক্ত আইয়ুব আলী । সে ছাড়াও নবাব আলী, মানিক মিয়া প্রভৃতি যুবকরা ‘খারাপ ও উশৃঙ্খল’ বলে এলাকায় পরিচিত ৷ আইয়ুব আলী বেশ কিছুদিন ধরে তার বোনকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলার চেষ্টাসহ নানা রকম কু-প্রস্তাবসহ দিয়ে আসছিল । তার বোন প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আইয়ুব আলী মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার বোনের ব্যবহৃত নম্বরে ফোন করে নানা ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকী ধমকি দেয় ৷ তার বোনকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয় । বিষয়টি তার বোন পরিবারকে জানিয়েছিল ।
তিনি জানিয়েছেন,অপহরণের ঘটনাটি ঘটেছে গত ৮ সেপ্টেম্বর । অনান্যদিনের মত ওইদিন তার বোন যথারীতি টাঙ্গাইল সদর থানাধীন কুমুদিনি সরকারী মহিলা কলেজে যাচ্ছিল । এদিকে তখন কলেজের বাইরে ওৎ পেতে বসেছিল আইয়ুব আলী,নবাব আলী ও মানিক মিয়াসহ আরও ৩ থেকে ৫ জন দুষ্কৃতী । দুপুর ২ টোর সময় কলেজ ছুটির পর তার বোন কলেজ থেকে বের হলে তাকে ওই দুষ্কৃতীরা রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যায় ।
তিনি জানিয়েছেন,অপহরণের খবর পেয়ে তারা মূল অভিযুক্ত আইয়ুব আলীর বাড়িতে যান । সেখানে নবাব আলীর সঙ্গে তাদের দেখা হয় । সে তার বোনকে অপহরণের কথা স্বীকার করে এবং তার বোনকে গত ০৯/০৯/২০২৪ তারিখে সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরত দেওয়ার কথা বলে আশ্বস্ত করলে তারা বাড়ি ফিরে আসে । কিন্তু নির্দিষ্ট দিনে তার বোনকে ফেরত দেওয়া হয়নি এবং বিভিন্ন টালবাহানা করতে শুরু করে । এরপর ১০ সেপ্টেম্বর তারা আটিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম ও স্থানীয় ইউনিয়ন সদস্যসহ বেশ কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হন । ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে তার বোনকে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করার জন্য কাতর আর্তি জানান । চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম ও স্থানীয় সদস্য হুমায়ুন কবির তাদের কাছে দু’দিনের সময় নেয় । কিন্তু ২ দিন পর ১২ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪ টার সময় মোবাইলে ফোন করে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম জানিয়ে দেয় যে অপহরণকারীরা তার বোনকে ফিরিয়ে দিতে অস্বীকার করেছে । চেয়ারম্যান তাদের আইনের আশ্রয় নিতে পরামর্শ দেয় ।
প্রসঙ্গত,প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উৎখাত করার পর বাংলাদেশ এখন জামাই ইসলামি ও বিএনপির মত জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির দখলে চলে গেছে । দেশ জুড়ে ওই গোষ্ঠীগুলির জঙ্গিরা নৈরাজ্যের সৃষ্টি করে রেখেছে । তাদের সফট টার্গেট হচ্ছে সংখ্যালঘু হিন্দুরা । বিশেষ করে অল্প বয়সী হিন্দু মেয়েদের নিরাপত্তা এক প্রকার নেই বললেই চলে । একের পর হিন্দু মেয়েকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে ইসলামি জঙ্গিরা । এর আগে বাংলাদেশের রাজধানী শহর ঢাকা বিভাগের ফরিদপুর জেলার মধুখালী থানার যাদবপুর গ্রামের বাসিন্দা পরীমল চক্রবর্তীর মেয়ে তমা চক্রবর্তী (১৮)কে প্রকাশ্য দিবালোকে জামালপুর বাজার থেকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে । মেয়েটি জামালপুর নিউজ কলেজের ছাত্রী । গত ৯ সেপ্টেম্বর সকালে কলেজ গেলে মেয়েটিকে একই কায়দায় জামালপুর বাজার থেকে তুলে নিয়ে যায় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন । তার বাবা বালিয়াকান্দি থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও কিশোরীকে উদ্ধারের কোনো উৎসাহ নেই পুলিশের ।।