এইদিন ওয়েবডেস্ক,সিমলা(হিমাচল প্রদেশ),১১ সেপ্টেম্বর : হিমাচল প্রদেশের রাজধানী সিমলার সানজাউলিতে একটা বেআইনি মসজিদের নির্মান ঘিরে শাসকদল কংগ্রেস ও বিরোধী দল বিজেপি কার্যত একজোট হয়ে গেছে । আজ বুধবার ওই অবৈধ মসজিদ ঘিরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে সানজাউলি এলাকায় । হিন্দুরা মসজিদের সামনে জড়ো হয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । বিক্ষোভের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ মসজিদের পাশের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে দেয় ক্ষিপ্ত জনতা । তারপর মসজিদের দিকে এগোতে থাকলে পুলিশ ব্যাপক লাঠিচার্জ করে । জলকামানও প্রয়োগ করা হয় । পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কার্যত খন্ডযুদ্ধ বেধে যায় । ব্যাপক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে সিমলার সানজাউলিতে ১৬৩ ধারা জারি করা হয়েছে । সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, এই ঘটনার পর জেলা পুলিশ রাজ্যের ছয়টি ব্যাটালিয়নকে সানজাউলিতে মোতায়েন করেছে। মসজিদের জায়গাটি সম্পূর্ণ সিল করে দেওয়া হয়েছে। সিমলার জেলা প্রশাসক অনুপম কাশ্যপ জানিয়েছেন যে সঞ্জাউলিতে ১৬৩ ধারা বলবৎ রয়েছে। অনুমতি ছাড়া আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি জনগণকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন ।
প্রসঙ্গত,প্রায় ৮ শতংশ মুসলিম জনসংখ্যা বহুল সিমলার সানজাউলি এলাকায় বিনা অনুমতিতে মসজিদ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে ওয়াকফ বোর্ডের বিরুদ্ধে । স্থানীয়দের মতে, এই নির্মাণ সম্পূর্ণ অবৈধ। এমন পরিস্থিতিতে এই নির্মাণের অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। যদিও ওয়াকফ বোর্ডের দাবি,এই মসজিদটি ১৯৪৭ সালে নির্মিত হয়েছিল। এটি ২০১০ সালে সংস্কার করা হয় । স্থানীয় হিন্দুদের অভিযোগ,মামলাটি বিচারাধীন থাকার সময়ে মসজিদের চারতলা ভবন অবৈধভাবে নির্মাণ করা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন আরও জানান, সিমলা পৌর কর্পোরেশন মসজিদের ভেতরে অবৈধ নির্মাণের বিষয়ে একাধিকবার নোটিশ দিয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও বন্ধ হয়নি অবৈধ নির্মাণ। এ নিয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর স্থানীয় লোকজন বিক্ষোভও করেছিল।
হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখুর মিডিয়া উপদেষ্টা নরেশ চৌহান এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মানুষ নিজেদের প্রদর্শন করেছে। শান্তি বজায় রাখার জন্যই আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে । হিমাচলের শান্তির দায়িত্ব আমাদের। পুলিশ পুরোপুরি প্রস্তুত। আইন তার কাজ করছে। বিষয়টি আদালতে রয়েছে। কেউ আইন হাতে নিলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। স্লোগান দিচ্ছেন বিজেপি কর্মীরা। কিন্তু স্থানীয় লোকজন তাদের সমর্থন করেনি।’ যদিও কংগ্রেস সমর্থক হিন্দুরাও মসজিদ ভেঙে ফেলার পক্ষে দাবি তুলছে বলে খবর ।
হিমাচল প্রদেশ সরকারের মন্ত্রী বিক্রমাদিত্য সিং বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করার অধিকার সবার আছে। তবে এমন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হওয়া উচিত নয় যা রাষ্ট্রের শান্তি নষ্ট করতে পারে। আমরা রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে দিতে পারি না। পুরো বিষয়টি আদালতে রয়েছে। ওই জায়গা অবৈধ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং তা ভেঙে ফেলা হবে।।