এইদিন ওয়েবডেস্ক,বাঁকুড়া,২১ এপ্রিল : বামফ্রন্ট জমানায় মাওবাদীর আতঙ্কে যে জঙ্গলমহল এলাকা সর্বদা ভয়ে সিঁটিয়ে থাকতো,২০১১ সালে রাজ্যের পট পরিবর্তনের পর কার্যত শান্ত হয়ে যায় । কিন্তু সাম্প্রতিক কালে ফের মাওবাদীরা তৎপরতা শুরু হয়েছে জঙ্গলমহলে । পড়ছে হুমকি পোস্টার । আর তাতেই রাতের ঘুম উবে গেছে রাজ্যের জঙ্গলমহল অধ্যুষিত জেলারগুলির তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের । তাই মাওবাদীদের ভয়ে নিরাপত্তা বৃদ্ধির আবাদেন জানালেন বাঁকুড়ার পাঁচ তৃণমূল নেতা । এদিকে এই ঘটনাকে কটাক্ষ করে বিজেপি জানিয়েছে,সাধারণ মানুষের টাকা ‘মেরে খাওয়া’র কারনে জনরোষ থেকে মাঁওবাদীদের দোহাই দিচ্ছেন তৃণমূলের নেতারা ।
প্রসঙ্গত,সাম্প্রতিক কালে পুরুলিয়া,বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম প্রভৃতি জেলার জঙ্গলমহল এলাকায় একের পর এক মাওবাদী পোস্টার পড়তে দেখা গেছে । পোস্টারে মূলত টার্গেট করা হয়েছে বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসকে । ফলে ফের মাও আতঙ্কে ভুগতে শুরু করেছে জঙ্গলমহল এলাকা । গত ৮ এপ্রিল মাওবাদীদের ডাকা বনধে রানিবাঁধ, রাইপুর, সারেঙ্গা, বারিকুলের মত বাঁকুড়ার জঙ্গলমহল এলাকাগুলিতে যথেষ্ট সাড়া পড়ে । আর তারপর থেকে ব্যপক ভয় ঢুকে গেছে ওই সমস্ত এলাকার রাজ্যের শাসকদলের বিধায়ক ও নেতাদের । সেই আতঙ্কের কারনে নিজেদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে তৎপর হয়েছেন তৃণমূলের নেতারা ।
সুত্রের খবর,বাঁকুড়ার রানিবাঁধ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি চিত্ত মাহাতো ইতিমধ্যেই নিজের নিরাপত্তা বৃদ্ধির জন্য জেলা পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন । এবার সেই তালিকায় নাম লেখালেন রানিবাঁধ ব্লকেরই আরও পাঁচ জন তৃণমূল নেতা । যদিও তাঁদের সকলেরই একজন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে । কিন্তু তাতেও তাঁরা আশ্বস্ত হতে পারছেন না ।
যদিও এই বিষয়ে রাজ্যের খাদ্য সরবরাহ দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যোৎস্না মান্ডি বলেন, ‘ওনাদের (নিরাপত্তা বৃদ্ধির আবেদন জানানো নেতারা) একজন করে নিরাপত্তারক্ষী রয়েছে । সেই নিরাপত্তারক্ষীরা ছুটি নিলে অসুবিধা হতে পারে বলেই হয়তো নিরাপত্তারক্ষী বৃদ্ধির জন্য তাঁরা আবেদন জানিয়েছেন ।’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘জঙ্গলমহলে মাওবাদী নেই । বিজেপির পায়ের তলার থেকে মাটি সরে যাওয়ায় তারা জঙ্গলমহলকে অশান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে ।’
অন্যদিকে সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামী বলেন, ‘এরা(তৃণমূলের নেতারা) গরীব মানুষের টাকা লুট করেছে । সেই সমস্ত গরীব মানুষ খেপে গিয়ে আক্রমণ করতে পারে এই ভয়েই এরা নিরাপত্তা রক্ষী খুঁজছেন ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আর বিজেপি যদি বাইরে থেকে লোক ঢুকিয়ে পরিবেশ অশান্ত করার চেষ্টা করে তাহলে পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী কেন তাদের ধরছেন না? বলছে বিজেপির চক্রান্ত । তাহলে গ্রেফতার হচ্ছে কারা ? তৃণমূলের লোকেরাই গ্রেফতার হচ্ছে । আবার সেই তৃণমূলের নেতাদের দিদির পুলিশই ধরছে । তৃণমূল কংগ্রেস একটা নির্লজ্জ দল ।’।