প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ ডিসেম্বর : অসুস্থ মা-কে দেখতে যেতে যাওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেনি কারা দফতর।তার কারণে ’অনশন’ শুরু করলেন বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম। অনশনে নামা সংক্রান্ত পোস্টার বুকে ও পেটে লাগিয়ে নিয়ে বুধবার রাতথেকে তিনি বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।পোস্টারে “বিপদে আমি না করি যেন করি ভয়/করিতে পারি জয়’ – এই কথা লেখা আছে বলে জানা গিয়েছে। অর্ণব দামের অনশন শুরু করার বিষয়্টি মেনে নিয়েছে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।তারা এই সংক্রান্ত রিপোর্ট কারা দফতরকেও দিয়ে দিয়েছে।
২০১০ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম মেদিনীপুরের শিলদা ইএফআর ক্যাম্পে মাওবাদী হামলা হয়। সেই হামলায় ২৪ জন ইএফআর জওয়ানের মৃত্যু হয়। জওয়ানের পাল্টা প্রতিরোধে ৫ মাওবাদীও মারা গিয়েছিলেন। শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে হামলা চালানোর ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসাবে চিহ্নিত করা মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম ওরফে বিক্রম কে ।গত ২৯ ফেব্রুয়ারী তাঁর সাজা ঘোষণা হয় ।তার পর থেকে প্রথমে পশ্চিম মেদিনীপুর জেল,পরে হুগলীর চুঁচুড়ার সংশোধনাগার।জেল বাসের মধ্যেই ইন্দিরা গান্ধী ওপেন ইউনিভার্সিটি (ইগনু) থেকে ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে ’পিএইচডি’ করার জন্য অর্ণব দামের এখন ঠিকানা বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার ।
বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে অর্ণব দামের অনশন শুরু করার প্রসঙ্গে মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের দাবি,অর্ণবের মা অসুস্থ কি না তা জানতে রাত ১ টার সময় সুভাষগ্রামে অর্ণবের মায়ের বাড়িতে গিয়েছিল সোনারপুর থানার পুলিশ ।বিষয়টি নিয়ে ওখানকার পুলিশ সুপার ও স্বরাস্ট্র সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক রঞ্জিত শূর বলেন,“রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্যেই অসুস্থ মাকে দেখতো যেতে চাওয়া অর্ণবকে এক দিনের ’প্যারোল’ দেওয়া হচ্ছে না। শুধু তাই নয় ,অর্ণবের পড়াশুনা করার পরিবেশও বর্ধমান সংশোধনাগারে নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।এমনকি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডির কোর্সের গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস করতে যেতেও দেয়নি সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।অসুস্থ মাকে দেখতে যেতে দেওয়ার ’প্যারোলের দাবিতেই ’ অর্ণব এখন অনশন শুরু করেছে বলে রঞ্জিত শূর জানিয়েছেন। যদিও রঞ্জিত শূরের আনা প্রতিহিংসার অভিযোগ মানতে চাননি তৃণমূলের রাজ্য নেতা কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন,’সরকার সহানুভূতিশীল বলেই অর্ণবের পিএইচডি করার জন্যে সব রকম সহযোগিতা করেছে। কেন প্যারোল পেল না, তা আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।’।