প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০২ এপ্রিল : মাধ্যমিকের মতো উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও পূর্ব বর্ধমানে অনুপস্থিত থাকলো বহু পরীক্ষার্থী । জেলায় মাধ্যমিকে ২ শতাংশের বেশী পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসে নি।আর উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম দিনে পরীক্ষা দিতেই বসলো না ৭ শতাংশের বেশী পরীক্ষার্থী । অতিমারির পর হোম সেন্টারে পরীক্ষা দেবার ব্যবস্থা করা সত্ত্বেও এত সংখ্যাক পরীক্ষার্থীর পরীক্ষায় না বসাটা যথেষ্ট চিন্তা বাড়িয়েছে শিক্ষক মহলের ।অতিমারির কারণে দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকায় পড়াশোনার প্রতি অনভ্যাস তৈরি হওয়াতেই কি পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা বিমুখ থাকলো ? নাকি এর পিছনে অন্য কোন কারণে রয়েছে ? শুরু হয়েছে তারই অনুসন্ধান ।
এই বছর কাগজে কলমে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৩৯ হাজার ৭১০ জন পরীক্ষার্থীর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার কথা ছিল। যারমধ্যে ছাত্রী ছিল ২৩,২২৮ জন। যা রেকর্ড বলে মনে করছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।তাদের প্রত্যাশা ছিল এই বছর হোম সেন্টারে পরীক্ষা হবে বলে সব পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসবে । কিন্তু বাস্তবে তা হয় না । ৭ শতাংশ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় না বসায় নিরাশ হতে হয় শিক্ষা সংসদের কর্তাদের ।খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, বর্ধমান ২ ব্লকের বড়শুল সিডিপি হাইস্কুলে ২১১ জন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে এদিন ২১ জন পরীক্ষায় বসেনি।জামালপুরের কালনা-কাসরা হাইস্কুলে ৬২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৭ জন ও কাটোয়ার সুদপুর হাইস্কুলে ৭৭ জনের মধ্যে ৯ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসে নি।জেলার শহর এলাকার অনেক স্কুলেও এদিন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকার খবর মিলেছে ।আর গ্রামের দিকে অনেক স্কুলে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত পরীক্ষার্থী পরীক্ষাকেন্দ্রে হাজির
হয়নি বলে পরীক্ষক সূত্রে খবর মিলেছে ।
জেলার শিক্ষক সংগঠনগুলির দাবি, মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় জেলায় ২ শতাংশের কিছুটা বেশি পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসে নি।আর উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকার সংখ্যা প্রায় ৭ শতাংশের কাছাকাছি পৌছে গেল । এটা অপ্রত্যাশিত বলেই মনে করছে শিক্ষক সংগঠন । এর কারণ হিসাবে শিক্ষক অনেকে মনে করছেন, অতিমারির সময়ে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার সময়ে অনেক ছাত্রীর বিয়ে হয়ে যায় ।তাঁদেরই একটা বড় অংশ পরীক্ষায় বসেনি । অন্য শিক্ষকরা
আবার মনে করছেন, একাদশ শ্রেণিতে সবাইকে পাশ করিয়ে দিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসার অ্যাডমিট কার্ড দিয়ে দেওয়া হয়েছে।তাঁদের মধ্যে অনেকেই লকডাউনের সময়ে থেকে রুটি রুজি জোগাড়ে নেমে পড়ে । আবার অনেকে ওই সময় থেকে পড়াশুনা বিমুখ হয়ে পড়ে।তাঁদের অনেকেই ধরে নিয়েছিল ২০২১ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা হয়নি,এই বছরও পরীক্ষা হবে না । গত বারের মতো একই পদ্ধতিতে মূল্যায়ণ হবে।কিন্তু তা না হওয়ায় পড়াশুনা বিমুখ হয়ে পড়ারা আর এদিন পরীক্ষা কেন্দ্র মুখী হয়নি ।
উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা জেলার সহকারী স্কুল পরিদর্শক গোপাল পাল ও সংসদের জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক তপন দাস বলেন,’সব পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে যায়নি বলে জানা যাচ্ছে।কত পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়নি তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে ।’।