দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),৩১ জানুয়ারী : রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হল পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার বিকেহাট হনুমান লাঠিতলার বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের এক ব্যক্তির । মঙ্গলবার সকালে ওই ব্যক্তির বাড়ির একটি ঘরের খাট থেকে তাঁর নগ্ন নিথর দেখটি উদ্ধার করে পুলিশ । পরে মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় । নিহতের নাম সুনীল রায় । তিনি রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন । নিহতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ পরকীয়া সম্পর্কের জেরেই ওই ব্যক্তির স্ত্রী ও মেয়ে মিলে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে । পুলিশ জানিয়েছে,ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে । নিহতের স্ত্রী রমা রায় ও মেয়ে মাম্পি বিশ্বাসকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ । যদিও পুলিশ জানিয়েছে, এদিন বিকেল পর্যন্ত এনিয়ে থানায় নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি ।
জানা গেছে,সুনীল রায় আগে কেরালায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন । বছরখানেক ধরে বাড়িতেই ছিলেন তিনি । তাঁর মেয়ে নসিপুরে বিয়ে হয়েছে । তবে মাস ছয়েক আগে তিনি স্বামী প্রদীপ বিশ্বাসের সঙ্গে বাপের বাড়িতে চলে আসে । সম্প্রতি বাপের বাড়ির সামনে একফালি জায়গায় বাড়ি করে পৃথকভাবে বসবাস করছেন মাম্পিদেবী ও তার স্বামী । সুনীলবাবুর ছেলে সত্যজিৎ কলকাতায় বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন । নিহতের দিদি বুলু কীর্তনীয়ার অভিযোগ, ‘ভাইয়ের স্ত্রী, মেয়ে ও ছেলে চাইতো না ভাই বাড়িতে থাকুক । সুনীলকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর জন্য ওরা উঠেপড়ে লেগেছিল । ওরা তিনজন মিলে ভাইয়ের উপর খুব অত্যাচার করত । প্রায়শই মারধর করত । এমনকি ঠিকমত খেতে পর্যন্ত দিত না ।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,এদিন সকাল সাড়ে নটা নাগাদ রমাদেবী ও মেয়ে মাম্পি প্রতিবেশীদের জানায় সুনীলবাবু কোনো কথা বলছেন না । একথা শুনে প্রতিবেশীরা তাদের বাড়ি ছুটে গিয়ে দেখেন শোবার ঘরে খাটের উপর সুনীলবাবুর নিথর দেহ পড়ে রয়েছে । এদিকে একজন সুস্থ সবল মানুষের আচমকা রহস্যজনক মৃত্যুতে স্থানীয়দের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি হয় । তার জেরে প্রতিবেশীরা মৃতের স্ত্রী ও মেয়েকে ঘেরাও করে রেখে দেয় । শেষে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় আনে । পাশাপাশি মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় পুলিশ । স্থানীয় বাসিন্দা পরিতোষ বিশ্বাস,বাদলী রায় বলেন, ‘প্রতিবেশীরা সুনীল রায়ের দিদিকে খবর দিতে চেয়েছিল । কিন্তু রমা ও মাম্পি খবর দিতে নিষেধ করছিল । এতে আমাদের সকলের সন্দেহ হয় যে হয়তো সুনীলবাবুকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে ।’ জানা গেছে,অল্প জমিজমা রয়েছে সুনীল রায়ের । চাষবাসের পাশাপাশি রাজমিস্ত্রির কাজ করে যা উপার্জন করতেন তাতেই তিনি সংসার চালাতেন । এদিন তাঁর রহস্যজনক মৃত্যুতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় ।।