দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৭ অক্টোবর : হেরোইন পাচার মামলায় বড়সড় সাফল্য পেল পূর্ব বর্ধমান জেলার রাজ্য পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) ও কাটোয়া থানার পুলিশ । সামনে এল মণিপুরের যোগ । রবিবার রাতে কাটোয়ার দাঁইহাট বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে এই পাচার চক্রের আরও ৪ পান্ডাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ । পুলিশ জানিয়েছে ধৃতদের নাম সইখম রোহন কুমার সিং(৩২), ইয়েনখোম প্রেমচন্দ্র সিং(২৭), লাইসরাম বিজয় সিং(৩১) এবং সংঘম সুমফাম নাসির আলি(৪১) ওরফে নাসিব আলি । ধৃতরা মণিপুরের বাসিন্দা । ধৃতদের কাছ থেকে পুলিশ ১৩ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে । সোমবার ধৃতদের কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয় । পুলিশ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক এই মাদক পাচারচক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত তা জানার জন্য ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চালানো হচ্ছে ।
শনিবার রাতে চক্রের অন্যতম পান্ডা কাটোয়ার পঞ্চাননতলার বাসিন্দা বাদশা শেখের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ২ কেজির উপর ব্রাউন সুগার উদ্ধার করেছিল পুলিশ । যার বাজারমূল্য প্রায় আড়াই কোটি টাকা । পুলিশ সুত্রে খবর,ধৃত বাদশাকে জেরা করে জানতে পারে সে ওই হেরোইন মণিপুরের এক মাদক পাচার চক্রের কাছ থেকে সে কিনেছিল । সম্প্রতি সে মনিপুরের ওই চক্রকে হেরোইন বাবদ প্রথম দফায় ১১ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে পেমেন্ট দিয়েছিল । গত শনিবার দু’কেজি হেরোইন কেনার রফা হয়। সেদিনও সে ১৪ লক্ষ টাকা দিয়েছিল বাদশা । বাকি টাকা নেওয়ার জন্য ওই চারজন কাটোয়ায় এসেছিল ।
পুলিশ জানিয়েছে,তদন্তে জানা গেছে চক্রের মূল পান্ডা নসিব নামের এক ব্যক্তি । সে আগেই ফ্লাইট ধরে কলকাতায় চলে আসে । ধৃত চারজন কাটোয়ায় এসেছিল হোণ্ডা সিটি গাড়িতে চড়ে । পুলিশ তাদের ধরার জন্য ওৎ পেতে বসে থাকে । শেষে রবিবার রাতে দাঁইহাট বাসস্ট্যান্ড মোড় দিয়ে চারচাকা গাড়ি করে যাওয়ার সময় তাদের পাকড়াও করা হয় ।
পুলিশ জানতে পেরেছে মায়ানমার-চিন সীমান্ত এলাকায় উৎপাদন হয় ওই হেরোইন । সেখান থেকে আসে মণিপুরে । আর মণিপুরের ওই মাদক চক্রের কাছ থেকে হেরোইন কিনতো কাটোয়ার বাদশা শেখ । হেরোইন কেনার পর নদীয়া জেলায় নিয়ে গিয়ে আরও কিছু রাসায়নিক মিশিয়ে এক কেজি হেরোয়িনকে সে তিন কেজি করত । তারপর রাজ্যের বিভিন্ন জেলার এজেন্টের কাছে বিক্রি করে দিত সেই হেরোইন । আর এভাবেই অল্প দিনেই কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে যায় কাটোয়ার বাদশা খান ।।