এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),১৯ অক্টোবর : চেন্নাই থেকে স্ত্রীকে ভিডিও কল করে ৭ দিনের সন্তানের মুখ দেখার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যু হল পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোটের এক যুবকের । মৃতের নাম শেখ মফিজুল(৩৩) । তার বাড়ি মঙ্গলকোট থানার দেওলিয়া গ্রামে । সোমবার মৃতদেহটি চেন্নাই থেকে গ্রামে নিয়ে আসার কথা ৷ মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকস্তব্ধ পরিবার ৷
জানা গেছে,শেখ মফিজুলরা তিন ভাই ও এক বোন । সকলেই বিবাহিত ৷ ভাইয়েরা পৃথক সংসারে থাকেন । প্রতিবন্ধী বাবা শেখ সুফিয়ার রহমান,মা, স্ত্রী আয়েসা খাতুন এবং আড়াই বছর ও ৭ দিনের দুই সন্তানকে নিয়ে সংসার মফিজুলের ৷ নামমাত্র জমিজমা রয়েছে। সেই কারনে পরিবারের অন্ন সংস্থানের জন্য চেন্নাইয়ের একটি চামড়ার কারখানায় শ্রমিকের কাজে গিয়েছিলেন ওই যুবক । শ্রমিকের কাজের পারিশ্রমিকেই মূলত সংসার চালাতেন তিনি ।
জানা গেছে,শেখ মফিজুলের সঙ্গে একই কারখানায় কাজ করেন তার ভাই কালো শেখ ও এক শ্যালক মইনুল ইসলাম । মফিজুল, তার ভাই ও বীরভূম জেলার নানুর থানার বাসাপাড়া বাসিন্দা ৫ জন একটি ঘরভাড়া করে থাকতেন । মইনুল পৃথক ঘরে থাকেন । ঘটনাটি ঘটে ১৭-১৮ অক্টোবর রাতে । মৃতের আর এক শ্যালক শেখ শাহিদুল এইদিন-কে বলেন,’শনিবার সকালে চেন্নাই থেকে ফোন করে বলা হয় আমার জামাইবাবু মারা গেছেন৷ মৃত্যুর কারন জিজ্ঞেস করলে আমাদের বলা হয় যে টেবিল ফ্যানে শর্ট সার্কিট থেকে বিদ্যুস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন তিনি ৷’ তিনি আরও বলেন, ‘একথা শুনে আমরা ভিডিও কলে আমার জামাইবাবুর মৃতদেহ দেখতে চাই । কিন্তু তার শরীরে কোনো বিকৃতি দেখতে পাইনি৷ সেই কারনে সন্দেহ করছি যে আমার জামাইবাবুকে মেরে ফেলা হয়েছে ।’
জানা গেছে,শেখ মফিজুলের মৃত্যুর দিন দুয়েক আগে বাড়ি ফিরে আসেন তার ভাই কালো শেখ৷ বর্তমানে চেন্নাইয়ে রয়েছে মৃতের শ্যালক । আজ রবিবার মৃতদেহের ময়নাতদন্তের পর আগামীকাল তিনি দেহ নিয়ে দেওলিয়া গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন । এদিকে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যের মৃত্যুতে কার্যত পথে বসেছে গোটা পরিবার৷ ওই অসহায় পরিবারটিকে সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা করার জন্য আবেদন জানিয়েছেন গ্রামবাসী ।।

