এইদিন ওয়েবডেস্ক,মঙ্গলকোট(পূর্ব বর্ধমান),২২ অক্টোবর : নিজের মোবাইল নম্বর রিচার্জ করার জন্য ১১ বছরের কিশোর পুত্রকে পাড়ার দোকানে পাঠিয়েছিলেন গৃহবধূ । কিন্তু ছেলেটি দোকানে গিয়ে নম্বর ভুল করে ফেলে । ফলে রিচার্জ হয়ে যায় অন্য নম্বরে । বাড়িতে এসে কিশোর বুঝতে পারে যে সে নম্বর বলতে ভুল করে ফেলেছে । এজন্য তার মা তাকে বকাঝকা করে । আর সেই অভিমানে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হল ওই ছোট্ট ছেলেটি । পূর্ব বর্ধমান জেলার মঙ্গলকোট থানার শীতলগ্রামের ঘটনা । মৃত কিশোরের নাম সৌম্যদীপ দত্ত (১১) ওরফে সোমু। সে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র ছিল । ছেলে যে এমন কান্ড ঘটাতে পারে সেটা স্বপ্নেও কল্পনা করেননি তার মা রেখা দত্ত । ছেলেকে চিরতরে হারানো পর শোকে কার্যত বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তিনি । এই মর্মান্তিক ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা গ্রাম ।
জানা গেছে,শীতলগ্রামের বাসিন্দা রেখা দত্ত মঙ্গলকোট পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্যা । তার স্বামী উৎপল দত্ত বর্ধমানে একটি দোকানে কাজ করেন । দম্পতির এক ছেলে এক মেয়ের মধ্যে ছোট ছিল সৌম্যদীপ । পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ত । অল্পসল্প জমিজমা রয়েছে রেখাদেবীদের । কোনো রকমে সংসার চলে পরিবারটির । ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার সন্ধ্যার । ছেলের হাতে ৩০০ টাকা দিয়ে গ্রামের একটি দোকানে নিজের মোবাইল ফোনের রিচার্জ করতে পাঠিয়েছিলেন তিনি । মোবাইল রিচার্জ করার পরে বাড়ি ফিরে আসে ওই কিশোর । কিন্তু বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পরেও মোবাইলে রিচার্জ করার মেসেজ না আসায় সেই দোকানে ছোটেন রেখাদেবী । আর দোকানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন তার ছেলে নম্বর বলতে ভুল করে ফেলেছে ।
জানা গেছে,বাড়ি ফিরে এসে ছেলেকে এনিয়ে বকঝকা করেন৷ এরপর রেখাদেবী ও তাঁর মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে একটি বাড়িতে পানীয়জল আনতে চলে যান । বাড়িতে একাই ছিল সৌম্যদীপ। মিনিট পনের পর তারা বাড়ি ফিরে দেখেন একটা ঘরের মধ্যে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গামছার ফাঁস দিয়ে ঝুলছে ছেলে সৌম্যদীপ । এই দৃশ্য দেখে চিৎকার করে ওঠেন রেখাদেবী । প্রতিবেশীরা তার চিৎকার শুনে ছুটে আসে । এরপর গামছা কেটে কিশোরকে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় । কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি । অতটুকু শিশুর মধ্যে আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় আসতে দেখে কার্যত হতভম্ব গ্রামবাসীরা ।।