এইদিন ওয়েবডেস্ক,খাইবার পাখতুনখোয়া,০৭ মে : ইমরান খানকে নবির সঙ্গে তুলনা করায় জন সমাবেশে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারলো উন্মত্ত কট্টরপন্থীরা । আর ঘটনাটি ঘটেছে পুলিশের সামনেই । মিডিয়া রিপোর্টে জানা গেছে, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার মারদান শহরে তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির সমাবেশ ছিল । ওই সমাবেশে বছর চল্লিশের এক মুসলিম ব্যক্তি বলেন, তিনি পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে নবী হিসাবে সম্মান করেন । একথা শুনে ক্ষিপ্ত হয় সমাবেশে উপস্থিত কট্টরপন্থীদের দল । ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে । ভিডিওতে দেখা গেছে,কয়েক ডজন লোক ওই ব্যক্তিকে নির্মমভাবে পেটাচ্ছে । আর সেখানে উপস্থিত রয়েছে পাকিস্তানের পুলিশ । কিন্তু পুলিশ উন্মত্ত কট্টরপন্থীদের হাত থেকে ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারের সাহস করেনি । ফলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় আক্রান্ত ব্যক্তির ।
মারদান শহরের পুলিশ জানিয়েছে,নিহত ব্যক্তির নাম নেগার আলম । নেগারকে পিটিয়ে মারার আগে শেষ বারের মত তাকে নামাজ পড়তে বলা হয়েছিল । পুলিশ জানায়, প্রথমে এই ব্যক্তি ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে ঢুকে পড়ে । কিন্তু উন্মত্ত জনতা তার পিছু ধাওয়া করে তাকে বাড়ি থেকে বের করে নির্মমভাবে পিটিয়ে মারে । যদিও তেহরিক-ই-ইনসাফ নেতা ইমরান খান সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন না এবং তার দলের কর্মকর্তারা এই ঘটনার বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি ।
প্রসঙ্গত,বিশ্বের কট্টর মৌলবাদী দেশগুলির মধ্যে শীর্ষ স্থানে রয়েছে পাকিস্তান । ইসলাম বা নবি সম্পর্কে কেউ কোনো মন্তব্য করলেই কটপন্থীদের দ্বারা তাকে পিটিয়ে বা জীবন্ত পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয় পাকিস্তানে । পাকিস্তানের একটি স্বাধীন সংখ্যালঘু অধিকার গোষ্ঠী সোশ্যাল জাস্টিস সেন্টারের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৮৭ সাল থেকে এযাবৎ ২,০০০ জনেরও বেশি লোককে ব্লাসফেমি বা ধর্মনিন্দার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে এবং অনুরূপ অভিযোগে ইসলামি কট্টরপন্থীরা কমপক্ষে ৮৮ জনকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলি বলছে যে সবচেয়ে ব্লাসফেমির অভিযোগ আনা হয়েছে পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দুদের বিরুদ্ধে । প্রায়ই ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে ধর্মনিন্দার অভিযোগ তুলে হিন্দুদের আক্রমণ করে পাকিস্তানের ইসলামি জিহাদিরা ।।