এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৬ ডিসেম্বর : কলকাতা পুরসভার মেয়র তথা রাজ্যের নগর উন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম রবিবার কলকাতায় একটা অনুষ্ঠানে বলেছিলেন যে ‘আল্লাহর রহমতে সংখ্যালঘু মুসলিমরা একদিন ভারতে সংখ্যাগুরু হবে’ এবং ভারতের আদালতগুলিতে আরও মুসলিম বিচারক আসবে । যানিয়ে তুমুল বিতর্ক চলছে রাজু জুড়ে । সিপিএম বা কংগ্রেস বিরোধিতা না করলেও ফিরহাদ হাকিমের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করছে বিজেপি । বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা মিত্রা পাল মনে করছেন যে রাজ্যের ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোট ব্যাংকের সন্তুষ্ট করতে মমতা ব্যানার্জি পরিকল্পিতভাবে এই এজেন্ডা চালাচ্ছেন । তিনি ফিরহাদ হাকিমকে ‘সাম্প্রদায়িক’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন মমতা ব্যানার্জি চাইছেন না যে বাংলায় হিন্দুরা থাকুক, অন্য কোথাও চলে যাক ।
একটি ভিডিও বার্তায় অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, ফিরহাদ হাকিমের এই ধরনের সাম্প্রদায়িক মন্তব্যই এই প্রথম নয় । এর আগে তিনি মিনি পাকিস্তান বানানোর কথা বলেছিলেন । ৫০ শতাংশ রাজ্যবাসী উর্দুতে কথা বলবে বলে মন্তব্য করেছিলেন । দাওয়াত-এ-ইসলামের ডাক দিয়েছিলেন ।’ তার কথায় রাজ্যের ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোট ব্যাংকে সন্তুষ্ট করতে পরিকল্পিতভাবে পলিটিক্যাল এজেন্ডা চালাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । অগ্নিমিত্রা পাল বলেছেন, ‘গতকাল পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট উনি উগ্র মৌলবাদীর কথা বলেছেন। এর আগেও উনি ধর্মান্তরকরণের পক্ষে বলেছিলেন। উনি বলেছেন,“আজও কলকাতা হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে মাত্র দু-চার বিচারপতি রয়েছেন। কেন? কারণ আমরা নিজেদের সেভাবে তৈরি করতে পারিনি যাতে বিচার দিতে পারি। আল্লাহ তালহার রহমত ও আপনাদের মেহনত এটা পূরণ করতে পারে। তাহলেই আমরা বিচার দেওয়ার লায়েক হয়ে যাব”।
তিনি আরও বলেন,’ভারতের সংবিধানে ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের কথা বলা নেই। ধর্মের ভিত্তিতে বিচারে বৈষম্যের কথাও নেই। সংখ্যালঘু বিচারপতি হলে তবেই সংখ্যালঘুরা বিচার পাবেন এই ধারণাও ভ্রান্ত। সংবিধানের শপথ নিয়ে মন্ত্রী ও মেয়র হয়েছেন ফিরহাদ হাকিম।ওনার এই কথা সাংবিধানিক ধারণারও বিরুদ্ধে।আসলে,ওনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা মুখ্যমন্ত্রী নেই। কারণ উনি হচ্ছে ৩৩ % শতাংশ তৃণমূল ভোট ব্যাঙ্কের অন্যতম মুখ। মমতার ভাষায় দুধেল গাই।ওনার মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলের বার্তা পৌঁছে দেন মুসলিমদের কাছে।তৃণমূলের তোষণের রাজনীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।’
সবশেষে তিনি বলেছেন,’মমতা ব্যানার্জি এবং তার সরকার হিন্দুদের কোনঠাসা করে, লাভ জিহাদ ও ল্যান্ড জিহাদ করে, হিন্দুদেরকে ঠিক বাংলাদেশে যেটা হচ্ছে, ১৯৪১ সালে যারা ২৮ শতাংশ ছিল আজ সেখানে তারা ৭.৬৫ শতাংশ হয়ে গেছে, পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির ঠিক তাই করতে চাইছেন । শুধু ৩০ শতাংশ ভোটারের উপর নির্ভর করে তার সরকার । এই ধরনের কথাবার্তা যারা বলছেন তাদের কোনো শাস্তি নেই । মুখ্যমন্ত্রীর কোন প্রতিবাদ নেই । মুখ্যমন্ত্রী চাইছেন পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা এরাজ্য ছেড়ে চলে যাক কোথাও । ঠিক যেমন পূর্ব পাকিস্তান ছেড়ে আমাদের পূর্বপুরুষরা ভারতে পালিয়ে এসেছিল । সেই রকমই হয়তো উনি চাইছেন ওনার রাজনৈতিক এজেন্ডার জন্য ।’।