এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঝাড়গ্রাম,০৬ আগস্ট : ঝাড়গ্রামে দলীয় কর্মসূচিতে গিয়ে নিজের গলার উত্তরীয় খুলে বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে পরালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । যা নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । তিনি মমতা ব্যানার্জিকে তার দলের ডাকা “বাংলা ভাষার সম্মান রক্ষার্থে” মিছিলে হাঁটার একটা ভিডিও পোস্ট করেছেন এক্স-এ । ওই মিছিলে মমতার গলায় একটা হলুদ রঙের উত্তরীয় ঝোলানো দেখা গেছে । মিছিল শেষে তিনি পায়ে হেঁটে সড়ক পথের পাশে বিদ্যাসাগরের একটা আবক্ষ মূর্তির সামনে এসে দাঁড়ান । এরপর জনৈক এও পুলিশ কর্মীকে দিয়ে নিজের গলার উত্তরীয়টি বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তিতে পরানো করান । যা নিয়ে নিন্দায় সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী ।
শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর কে অপমান করে সমগ্র বাঙালি জাতি ও বাংলা ভাষার অপমান করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতে বিদ্যাসাগর ছিলেন এই বাংলায় ‘একক’, তাঁর স্বজাতি সহোদর কেউ ছিল না। ওনার বিখ্যাত ‘বিদ্যাসাগরচরিত’ ভাষণে তিনি লেখেন যে “আমাদের এই অবমানিত দেশে ঈশ্বরচন্দ্রের মতো এমন অখণ্ড পৌরুষের আদর্শ কেমন করিয়া জন্মগ্রহণ করিল, আমরা বলিতে পারি না। কাকের বাসায় কোকিলে ডিম পাড়িয়া যায়… মানব-ইতিহাসের বিধাতা সেইরূপ গোপনে কৌশলে বঙ্গভূমির প্রতি বিদ্যাসাগরকে মানুষ করিবার ভার দিয়াছিলেন।”
আজ কাক-কোকিল কে মেলাবার অপচেষ্টা করলেন মাননীয়া !!! কি আস্পর্ধা, নিজের গলার উত্তরীয় খুলে বিদ্যাসাগরের মূর্তি তে পরাচ্ছেন ! এভাবে নিজের গলার উত্তরীয় খুলে কোনো মনীষীর গলায় কি পরানো যায়?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে কি ভাবেন? বাংলার মনীষী দের কি আদৌ সম্মান করেন? নাকি তিনি নিজেকে সবার উপরে ভাবেন। ‘বিদ্যাসাগর’ ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় অবিভক্ত মেদিনীপুরের সাথে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের গর্ব। যে বাংলা ভাষা আর বাঙালি নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ নাটক করছেন, সেই বাংলা ভাষার লিপি কে সংস্কার করে তাকে যুক্তিবহ ও সহজপাঠ্য করে বাঙালির কাছে পৌঁছে দেওয়ার কারিগর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। আর তার মূর্তিতেই কিনা নিজের গলার উত্তরীয় খুলে পরাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনি নিঃশর্ত ক্ষমা চান। আপনি বাঙালির আবেগ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহোদয়ের অসম্মান করেছেন। আপনার অভাবের সংসারে উত্তরীয় বা মালা কেনার যদি টাকা না থাকে তো উত্তরীয় বা মালা ছাড়াই প্রণাম করতে পারতেন, আত্মম্ভরীতা দেখাতে গিয়ে আপনি যেটা করেছেন সেটা আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতি নয়।’।