এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৬ অক্টোবর : উত্তরবঙ্গের পার্বত্য এলাকায় ধ্বস রোধে ম্যানগ্রোভ ও ভেটিভার ঘাস লাগানোর নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি । ম্যানগ্রোভ (Mangrove) বা লবণাম্বুজ এক বিশেষ ধরনের উদ্ভিদ যা সাধারণত সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের নোনা বা লবণাক্ত জলে জন্মায়। কিন্তু কিভাবে পার্বত্য এলাকায় এই উদ্ভিত রোপন সম্ভব তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে । রাজ্য বিজেপি এনিয়ে মমতা ব্যানার্জিকে তীব্র কটাক্ষ করছে । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তাঁকে “মূর্খ মন্ত্রী” আখ্যা দিয়ে ভূগোল ও বোটানিতে নোবেল পুরষ্কার দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন । সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের ক্লিপিং শেয়ার করে বিরোধী দলনেতা লিখেছেন,’আমাদের “ইস্ট জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি প্রাপ্ত ‘মূর্খ মন্ত্রী’ ভূগোল ও বোটানিতে (উদ্ভিদবিদ্যায়) নোবেল পুরস্কার পাবেন, ওনার ঐতিহাসিক ও যুগান্তকারী প্রচেষ্টার জন্যে – পাহাড়ে ম্যানগ্রোভ !!!
ম্যানগ্রোভ বা লবণাম্বু উদ্ভিদ একটি বিশেষ ধরনের উদ্ভিদ যা সাধারণত সমুদ্র উপকূলবর্তী অঞ্চলের নোনা জলে জন্মায়। ম্যানগ্রোভ বন বা বাদাবন হলো প্রকৃতির এক অতুলনীয় রক্ষাকবচ, যার ভূমিকা উপকূল রক্ষা, জীববৈচিত্র্যের আশ্রয়স্থল এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অপরিসীম। এ যেন উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর জন্য একপ্রকার জীবন্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। এই অনন্য বাস্তুতন্ত্র সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস, ঝড়ঝঞ্ঝা, ঘূর্ণাবর্ত এবং অন্যান্য সামুদ্রিক সমস্যা থেকে উপকূলীয় এলাকা কে সুরক্ষিত রাখে। আর এই কর্দমাক্ত নোনা জলাভূমি হলো বহু পোকামাকড়, মাছ, সরীসৃপ, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণীর আবাস।’ তিনি লিখেছেন,’মাননীয়ার ইচ্ছে হয়েছে পাহাড়ে ম্যানগ্রোভ চারা রোপণ করে বন্যা রোধ করবেন !!! পশ্চিমবঙ্গের কবে যে হাল ফিরবে, আমাদের রাজ্য ওনার কারণে সারা দেশের সামনে হাস্যাস্পদ হয়ে যাচ্ছে…।’
গতকাল দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলাকে নিয়ে লালকুঠিতে প্রশাসনিক বৈঠকের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেন,‘ম্যানগ্রোভ আর ভেটিভার ঘাস লাগাতে শুরু করুন। ম্যানগ্রোভ কংক্রিটের থেকেও শক্ত, কংক্রীট ৬ মাসে ভেঙে যায়, আমি টাকা জলে ফেলে দিতে পারি না, ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টেরও একটা দায়িত্ব আছে, আপনারা যদি গঙ্গাসাগরে ৫ কোটি গাছ লাগাতে পারেন, তাহলে উত্তরবঙ্গের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতেও লাগানো যাবে না কেন? গাছ লাগালে তা অনেক বেশি টেকসই।’
তিনি ভুটানের জল নিয়েও সরব হন । মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভুটানের জল কমাতে হবে। আমাদের সব ভেঙে গেছে, ওদেরকেও আমাদের হেল্প করতে হবে। ওদের বাঁধের জল যাতে উত্তরবঙ্গকে ডোবাতে না পারে তার জন্য একটা রাস্তা বের করতে হবে। প্রত্যেক বার আমরা কেন ভুগব?’ সেই সাথে ডিভিসি ২০ বছর ধরে ড্রেজিং করে না এবং কলকাতা হলদিয়া ফরাক্কাতেও ড্রেজিং হয় না বলেও তিনি অভিযোগ করেন ।
এরাজ্যে বন্যা পরিস্থিতির জন্য আগেও ড্রেজিং বা প্রতিবেশী দেশের নদীর অতিরিক্ত জল আসাকে দায়ি করেছিলেন মমতা ব্যানার্জি । কিন্তু পার্বত্য এলাকায় নোনা জলের উদ্ভিত লাগানোর নির্দেশ দেওয়ার জন্য এখন তিনি বিদ্রুপের শিকার হচ্ছেন ।।

