এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০৬ মার্চ : বীরভূম জেলার দেউচা-পাঁচামিতে (Deucha Pachami) কয়লাখনি খনন নিয়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের সম্মতি আছে বলে শাসকদল দাবি করলেও বাস্তব চিত্র উলটো কথা বলছে । মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন থেকে দেউচা পাঁচামি কয়লা খনির জন্য খনন কাজ শুরু কথা ঘোষণা করার পর থেকে প্রথমে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বাসিন্দা এবং পরে জঙ্গলের বিভিন্ন গাছ পুনর্বাসনের কাজ অনেক দিন ধরেই চলছে । কিন্তু আদিবাসীদের বিক্ষোভ বন্ধ হয়নি । বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, দেউচা- পাঁচামিতে স্থানীয় আদিবাসীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কে দমন করতে রাজ্য সরকারের রেজিস্ট্রার্ড গুণ্ডা (পুলিশ) বাহিনী কে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি এক্স-এ আদিবাসীদের বিক্ষোভ সমাবেশের ভিডিও ও ছবি ভাগ করে নিয়েছেন । ভিডিওতে জঙ্গলের মধ্যে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বেশ কিছু মহিলা ও পুরুষকে জড়ো হতে দেখা গেছে এবং একজন আদিবাসী নেতার বক্তব্য তারা মনোযোগ দিয়ে শুনছেন । সেই সময় বিশাল পুলিশ ও র্যাফ বাহিনী এসে গোটা এলাকা ঘিরে ফেললে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে ।
শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’বীরভূমের জেলার দেউচা-পাঁচামিতে স্থানীয় আদিবাসী মা বোন ভাইদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কে দমন করতে রাজ্য সরকারের রেজিস্ট্রার্ড গুণ্ডা (পুলিশ) বাহিনী কে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ অনুসারে প্রশাসন ব্যাপক অত্যাচার শুরু করেছে। এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। অলিখিত ভাবে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ১৬৩ ধারা লাগু করেছে এই আদিবাসী বিরোধী সরকার ও তার দলদাস প্রশাসন। বাইরে থেকে এলাকায় কাউকে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। জল জঙ্গল জমির অধিকারের এই লড়াইয়ে বিরোধী দলনেতা হিসেবে আমি সর্বদা পাশে আছি ও তাঁদের এই অধিকারের লড়াইকে আমি কুর্নিশ জানাই । হুল জোহার ।’
রাজ্য সরকারের দাবি যে দেউচ-পাঁচামিতে ৩৪০০ একর এলাকা জুড়ে কয়লা রয়েছে।মাটির নিচে ১২৪০ মিলিয়ন টন কয়লা মজুত রয়েছে। এছাড়া ৬৭৫ মিলিয়ন টন ব্যাসল্ট শিলাস্তর রয়েছে। এই খনি বাস্তবে রূপ পেলে দেউচা পাঁচামি এশিয়ার সর্ববৃহৎ কয়লাখনি হবে বলে মনে করছে মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকার ।
কিন্তু প্রস্তাবিত কয়লাখনি এলাকার মধ্যে পড়ছে ২০টি গ্রাম । প্রায় ২১ হাজার মানুষের বসবাস করেন। রয়েছে বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল, জলাভূমি ও চরভূমি । সুতরাং কয়লাখনি বাস্তবায়ন হলে ওই বিপুল পরিমান বনাঞ্চল যে ধ্বংস হবে তা নিশ্চিত । সরকারিভাবে কিছু গাছের পুনর্বাসনের কাজ করা হলেও বাকি সিংহভাগ গাছই ধ্বংস হবে । আর নিজেদের হাতে রোপন করা সেই সমস্ত গাছের ধ্বংস হওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ । বুধবারও সাগরবাঁধি গ্রামের মহিলারা দেউচা-পাঁচামিতে খনন কাজ বন্ধ করে তুমুল বিক্ষোভ দেখায় । জেসিবি মেশিন ও ডাম্পারগুলিকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় । খনির সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের বের করে রাস্তা কেটে সাধারণের যাতায়াতও বন্ধ করে দেন বিক্ষোভরত আদিবাসী মহিলারা । তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন,’নিজেদের ভিটে-মাটি ছেড়ে কোথাও যাব না। কিছুতেই কয়লা খনি করতে দেওয়া হবে না।’ এখন দেউচা-পাঁচামির প্রস্তাবিত কয়লা খনির ভবিষ্যৎ কোন দিকে মোড় নেয় সেটাই দেখার বিষয় ।।
Mamata Banerjee’s goon police are resorting to widespread atrocities to suppress the tribal movement in Birbhum’s Deucha-Panchami: Allegation by Shuvendu Adhikari