এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০২ জানুয়ারী : পিঠে বানানোর নাম করে পার্টি অফিসে ডেকে মহিলাদের যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের সন্দেশখালীর তৃণমূল কংগ্রেসের কুখ্যাত নেতা শেখ শাহজাহান, শিবু এবং উত্তমের বিরুদ্ধে । বর্তমানে তিনজনাই তারা জেলে । সেই ঘটনার প্রায় এক বছর পর গত ৩০ ডিসেম্বর সন্দেশখালিতে পা রাখেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি । সন্দেশখালির হিন্দুদের মন জয় করতে তিনি একাধিক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিলেন । তার মধ্যে মহিলাদের ৬০ বছরের পর বিধবা ভাতা দেওয়ার কথা তিনি ঘোষণা করেন । পরের দিনই সন্দেশখালীতে জনসভা করে মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । আজ বৃহস্পতিবার ফের এনিয়ে মমতা ব্যানার্জিকে তিনি নিশানা করে বলেছেন, ‘বাংলার মা বোনদের অমঙ্গল ও বৈধব্য কামনা করছেন মমতা ব্যানার্জি’ ।
সন্দেশখালিতে জনসভায় মমতা ব্যানার্জির বক্তব্যের ক্লিপিং নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছেন শুভেন্দু অধিকারী । যেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গেছে,’লক্ষ্মীর ভান্ডারের মা-বোনেদের বলবো, আগামী দিন আপনাদের বিধবা ভাতার জন্য কান্নাকাটি করতে হবে না ও কোথাও ছুটতে হবে না ।’
তার এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’মমতা ব্যানার্জী সন্দেশখালিতে বলছেন যে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রাপকদের বিধবাভাতা নিয়ে দুশ্চিন্তা করতে হবে না। অর্থাৎ তাঁরা বিধবা হয়ে গেলে ভাতা চালু থাকবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এই ধরনের উক্তি ন্যক্কারজনক ও কুরুচিকর। আমরা মা বোনেদের সিঁথির সিঁদুর অক্ষয় হবার প্রার্থনা করি ও আশীর্বাদ দিয়ে থাকি, এটাই আমাদের সংস্কৃতি। অথচ মুখ্যমন্ত্রী মা বোনেদের বৈধব্যের কথা বলছেন সামান্য সরকারি প্রকল্পের বিজ্ঞাপন করার উদ্দেশ্যে। এক প্রকার বাংলার মা বোনদের অমঙ্গল ও বৈধব্য কামনা করতেও পিছপা হলেন না। আমি রাজ্যের বিরোধী দলনেতা হিসেবে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কে অনুরোধ করবো নিজের বক্তব্য সংশোধন করে নিতে।’
সন্দেশখালীতে জনসভার পর মমতা ব্যানার্জি ফেসবুক পেজে লিখেছিলেন, ‘সর্বপ্রথম আমি সন্দেশখালির মা-ভাইবোনেদের হৃদয়ের অন্তর থেকে শুভেচ্ছা জানাই। তারা আজকের ঋষি অরবিন্দ মিশন ময়দানের সরকারি পরিষেবা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে যেভাবে আমাকে আশীর্বাদ-ভালোবাসা-দোয়ায় ভরিয়ে দিলেন তাতে আমি আপ্লুত ও কৃতজ্ঞ। আসন্ন ইংরেজি নববর্ষের জন্য আপনাদের সকলকে জানাই আন্তরিক শুভনন্দন।আজ সন্দেশখালি ও বসিরহাট মহকুমার বিভিন্ন এলাকার নানা প্রকল্পের শুভ উদ্বোধন এবং শিলান্যাস করলাম যার আর্থিক মূল্য যথাক্রমে ১১২.৬৭ কোটি টাকা এবং ১০.২০ কোটি টাকা। প্রায় ২০ হাজার মানুষের কাছে পৌঁছে দিলাম ‘বাংলার বাড়ি’, ‘আনন্দধারা’, ‘চোখের আলো’, ‘কন্যাশ্রী’, ‘স্বাস্থ্যসাথী’-সহ বিভিন্ন সরকারি পরিষেবা। এছাড়াও সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে, সন্দেশখালির গ্রামীণ হাসপাতালকে ৩০টি শয্যা থেকে ৬০টি শয্যায় উন্নীত করার জন্য বলেছি, যেখানে গর্ভবতী মায়েদের জন্য সুব্যবস্থা থাকবে। মানুষের জন্য কাজ করতে আমি কখনও পিছপা হয়নি। কারণ, মানুষই আমার জীবনের অমূল্য সম্পদ। তাদের জন্যই আমার এই সবকিছু। আজকের এইদিনটি আমার মনে মণিকোঠায় আজীবন থেকে যাবে। আপনারা সকলে ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন।’।