প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০২ মার্চ : পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার থাকাকালীন ভারতী ঘোষ একটি সরকারী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ’জঙ্গলমহলের মা’ বলে সন্মোধন করেছিলেন।আর এবার আরো এক ধাপ এগিয়ে সরকারী মঞ্চ থেকে ’দেবী দুর্গার’ সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুলনা টেনে বসলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক বিধান রায়।লোকসভা ভোটের দোরগোড়ায় একজন জেলাশসকের এহেন ’মমতা স্তুতি’ নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা।এমনকি এ নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে।
বর্ধমানের স্পন্দন মাঠে শুক্রবার জেলার ’সৃষ্টিশ্রী মেলার’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের জেলা শাসক বিধান রায়।সেখানেই
উপস্থিত মহিলাদের কাছে তিনি ’স্বনির্ভর গোষ্ঠী’ সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন । নিজের বক্তব্যে জেলাশাসক বলেন,’আমরা সেই পথ পেরিয়ে এসেছি। কোন পথ? যেখানে মা, বোন, দিদিদের একত্রিত করে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন করতে হত। আমার যতদূর জানা আছে, পরিসংখ্যান নিরিখে এখানে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৭০ হাজারের মতো স্বনির্ভর দল গঠন হয়েছে। ৭ লক্ষ মানুষ কিন্তু এই স্বনির্ভর দলের সঙ্গে যুক্ত। এটা কিন্তু আমাদের একটা শক্তি। এটা নিছক একটা ভাবনা নয়,এটা আমাদের শক্তি।এই শক্তিকে আমরা কাজে লাগাচ্ছি।এ বার এই আর্থিক বছরে (২০২৩-২৪) স্বনির্ভর দল গঠনের লক্ষ্যমাত্রা ১৭০০। আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা ১৮৮০ কোটি টাকার মতো। আমরা ১৩০০-১৩৫০ দল গঠন করে ফেলেছি।তাই বলবো নারী ও পুরুষ উভয়েই যদি শক্তিশালী না হয়, তাহলে আর্থিক বা সামাজিকভাবে সমাজ শক্তিশালী হতে পারে না।’
এই প্রসঙ্গে উদাহরণ দিতে গিয়ে জেলাশাসক বিধান রায় বলেন,’আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন মহিলা। তিনি ’মা দুর্গার’ মতো সমস্ত দিকেই কিন্তু তাঁর সেই সাফল্য ও কার্যক্রম করে আসছেন“।আমি আপনাদের বলব,“মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী “মা দুর্গার’ মতো কার্যক্রম গ্রহণ করতে যদি পারেন,তাহলে কেন আপনারা পারবেন না।আমি অনুরোধ করব,এই উদাহরণকে সামনে রেখে আপনারা এগিয়ে চলুন।’
জেলাশাসকের এই বক্তব্য নিয়ে জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন,’আমরা বারংবার বলেছি যে,জেলায় জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা তৃণমূলের দলীয় দলীয় নেতৃত্ব হিসেবে কাজ করছে।সরকার এবং দলের মধ্যে কোন তফাৎ নেই।তাই একজন সরকারি কর্মচারী হিসেবে জেলাশাসক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্তুতি করবেন বাংলায় এটাই স্বাভাবিক।আমরা এর তীব্র বিরোধিতা করছি।জেলা শাসকের এই মন্তব্যে তার নিরপেক্ষতা নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।কয়েকদিন পরেই লোকসভা ভোট তাই নিরপেক্ষ ভোটের স্বার্থে আমরা অবিলম্বে জেলাশাসক বদলের দাবি জানাচ্ছি ।’ যদিও রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সব প্রকল্পের রূপায়ণ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরাই করেন।সুতরাং জেলাশাসক নিজে কাজ করছেন। তাই তিনি বলেছেন।তা এ নিয়ে তিনি বির্তকের কিছু দেখছেন না ।’।