এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৯ ফেব্রুয়ারী : রবিবার বীরভূমের সিউড়িতে দলীয় জনসভায় মুখ্যমন্ত্রীর মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন, ‘তোমরা কতজনকে অ্যারেস্ট রেস্ট করেছ? আমি কি পারি না করতে? গদ্দারদের অ্যারেস্ট করতে ? একটু সময় দিচ্ছি, সুতো ছাড়ছি।’ মুখ্যমন্ত্রী কাকে ‘গদ্দার’ বলেছেন তা স্পষ্ট নয় । তবে তিনি কারুর নাম না করলেও ইঙ্গিতটা যে ছিল বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর দিকে, তা স্পষ্ট বলে মনে করছেন অনেকে । কারণ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময় শুভেন্দু অধিকারী গেরুয়া শিবিরের নাম লিখেছিলেন । তারপর থেকেই শুভেন্দুকে ‘গদ্দার’ তকমা দিয়েছিল তৃণমূল । এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী । তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে বলেছেন, ‘মমতা ব্যানার্জি বিশ্বাসঘাতকতায় পিএইচডি করেছেন।’
মুখ্যমন্ত্রীর রাজনৈতিক জীবনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস দুটি ভিডিওর মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেছেন শুভেন্দু । ভিডিওটি তিনি নিজের এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছেন । ভিডিওতে তিনি লিখেছেন, ‘১৯৭০ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত মমতা ব্যানার্জি ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসে রাজনৈতিক যাত্রা শুরু করেছিলেন । ১৯৭০ এর প্রথম থেকে শুরু করে দীর্ঘ দুই দশক তিনি কংগ্রেসেই ছিলেন । ১৯৯৮ সালে কংগ্রেস ত্যাগ করেন এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস থেকে বিচ্ছিন্ন দল হিসেবে টিএমসি গঠন করেন । ১৯৯৯ সালে তিনি বিজেপির নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স(এনডিএ) সরকারের রেলমন্ত্রী হয়েছিলেন। এনডিএ ছেড়ে ২০০১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সাথে জোটবদ্ধ হন । ২০০৩ সালে ফের তিনি এনডিএতে ফিরে আসেন এবং তাকে কয়লা ও খনি দপ্তর দেওয়া হয় । ২০০৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে তিনি ফের কংগ্রেস ও এসইউসিআই এর সঙ্গে জোট বাঁধেন । ইউপিএ সরকারে যোগ দিয়ে তিনি রেলমন্ত্রী হন । ২০১১ সালে প্রাক-নির্বাচন জোট এবং কংগ্রেসের সমর্থনে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসার পর কেন্দ্রে ইউপিএ সরকার থেকে সরে গিয়েছিলেন । এমন পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল যে কংগ্রেসকে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অংশীদার হিসাবে নিজেকে অনির্বাচন করতে বাধ্য করেছিল। ২০১৯ সালে ভোট পরবর্তী জোটের ব্যবস্থা সহ বৃহত্তর ইউপিএ জোটের অংশ হিসাবে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন । ২০২৩ সালে ইন্ডি জোট গঠন । ২০২৪ সালের এখনো পর্যন্ত নিশ্চিত নয় যে তিনি ইন্ডি জোটে থাকবেন কিনা অথবা একক ভাবে লড়াই করবেন কিনা অথবা নির্বাচনের পরে কংগ্রেসের হাত ধরবেন কিনা ।
মমতা ব্যানার্জির রাজনৈতিক ইতিহাস বর্ণনা করার পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন,’আমিও বিশ্বাসঘাতকদের গ্রেপ্তার করতে পারি। এই মুহূর্তে আমি কিছুটা ছাড় দিচ্ছি। বিশ্বাসঘাতকরা দুর্নীতির মামলায় জড়িত।’
জনগণ বিভ্রান্ত হচ্ছে যে তিনি নিজেকে গ্রেফতারের নির্দেশ দিতে যাচ্ছেন কিনা ! কারণ, তিনি বিশ্বাসঘাতক নম্বর এক,যিনি দুর্নীতির মামলায়ও জড়িত। তার রাজনৈতিক যাত্রায় তিনি এতবার পাল্টাপাল্টি করেছেন যে বাংলার মানুষ তার হিসাব রাখতে সক্ষম নন ।কেউ কেউ এমনও বলে যে তিনি বিশ্বাসঘাতকতায় পিএইচডি করেছেন ।’।