এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,১৮ জুলাই : পশ্চিমবঙ্গের কিছু জেলায় জনবিন্যাসের পরিবর্তন করার জন্য আগের সিপিএম এবং বর্তমান তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে দুষলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সম্পর্ক তিনি চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশের সুবিধা করে দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ৭২টি জায়গায় কাঁটাতারের বেড়া লাগাতে দিচ্ছেন না মমতা ব্যানার্জি । কলকাতায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘বাংলাদেশী রোহিঙ্গা মুসলিমদের সাপ্লাই লাইন হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ । এদেশ চার পুরুষ ধরে বসবাস করা মুসলিমদের নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই । কিন্তু শরণার্থী আর অনুপ্রবেশকারীর মধ্যে পার্থক্য আছে। মতুয়া বা হিন্দুরা যারা বাংলাদেশ ছাড়ছেন, তারা হলেন শরণার্থী । আর এই সমস্ত শরণার্থীদের জন্য সিএএ । কিন্তু যারা অনুপ্রবেশকারী, যারা বেড়া ডিঙিয়ে আসছে আর মমতা ব্যানার্জি ৭২ টা জায়গায় কাঁটাতার লাগাতে দিচ্ছেন না রোহিঙ্গাদের ঢোকানোর জন্য, এরা হচ্ছে অনুপ্রবেশকারী । আর রোহিঙ্গা মুসলিমদের অনুপ্রবেশকারী সাপ্লাই লাইন হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ ।’ তিনি বলেন,’গোসাবা থেকে বাসন্তী এক্সপ্রেস ওয়ে দিয়ে রোহিঙ্গারা ঢুকছে এবং গোটা ভারতে ছড়িয়ে পড়ছে । ইন্দোরে এদের সেক্স রাকেট ধরা পড়েছে । দিল্লির জাহাঙ্গীরপুরীতে দাঙ্গায় এরা ধরা পড়েছে । হরিয়ানা নুহতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তারা সবাই রোহিঙ্গা । আর তারা পশ্চিমবঙ্গকে ব্যবহার করে বাংলাদেশ থেকে গোটা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়েছে । এটা খুবই অ্যালার্মিং ।’
পাশাপাশি তিনি দাবি করেন,’আমরা পশ্চিমবঙ্গের সংখ্যালঘু হয়ে গেছি । উত্তর দিনাজপুর, মালদা, মুশিদাবাদ, স্বাধীনতার আগে ও পরে মুসলমানরা সংখ্যালঘু ছিল ৷ কিন্তু আজকে নটা জেলার জনবিন্যাসের পরিবর্তন কেন হলো? দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার এই অবস্থা কেন ? এরা কার ? এরা তো ভারতীয় মুসলিম নয় । এরা সম্পূর্ণরূপে অনুপ্রবেশকারী এবং এদেরকে ঢুকিয়েছে আগে সিপিএম ভোটের জন্য । এখন তৃণমূল সেটাকে পুরো ভরিয়ে দিয়েছে । তা না হলে ইমাম সাহেবরা বলেন ভোর সব মমতা ব্যানার্জিকে দিন । বিজেপি তো হিন্দুত্ববাদী দল ।’
শুভেন্দু অধিকারী বলেন,’পশ্চিমবঙ্গে আমরা তিনটে জিনিস আবিষ্কার করেছি । এক, বিজেপি তৃণমূলের একমাত্র বিকল্প, অন্য কোন বিকল্প নেই । তৃণমূল চুরি করেছে ৪৬ শতাংশ, আমরা দুধে জল না মিশিয়ে এবং একটাও মুসলমান ভোট না পেয়ে ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়েছি । এটা স্ফটিকের মতো স্বচ্ছ । তারা শাসক আর আমরা বিরোধী । দুই, মুসলিম ভোট বিজেপি পায় না । আমি পশ্চিমবঙ্গের কথা বলছি । পশ্চিমবঙ্গের মুসলিমরা যে বিজেপিকে ভোট দেয় না আবার একবার প্রমাণ হয়েছে । তিন,সিপিএম ভোট কেটে তৃণমূলকে জেতায় । আর সিপিএম হিন্দু ভোট কাটে । মুসলমানরা সিপিএমের মিছিলে যায় কিন্তু ভোটটা দেয় তৃণমূলে । সুজন চক্রবর্তীর ২ লাখ ৪০ হাজার ভোট অথবা এমএস হাজির ১ লাখ ৫১ হাজার ভোটের মধ্যে ৯৯ শতাংশ হিন্দু ভোট । হিন্দু তুমি জাগো নাচেৎ বাংলা তোমার হাতের বাইরে যাবে ।’
পাশাপাশি ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ বন্ধ করো’ নিজের এই মন্তব্য প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী ব্যাখ্যা দিয়েছেন, ‘আমার চিঠিতে একটা মুসলিম পরিবারের একজন ক্যান্সার রোগীর জন্য সাড়ে সাত লাখ টাকা পেয়েছে । আমার চিঠিতে একটা মুসলিম পরিবার ৩০ লক্ষ টাকা পেয়েছে বোন মারো ট্রান্সপ্লান্ট করতে। আর সেই ফ্যামিলি যখন বলে যে আপনি হিন্দুদের দল করেন, আপনাকে ভোট দেব না । সেই যন্ত্রণার বহিঃপ্রকাশ আমি সংবাদ মাধ্যমের সামনে করেছি ।’ তবে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন তাই মন্তব্যের সঙ্গে কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের নীতির কোন সম্পর্ক নেই ।।