এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,২৮ আগস্ট : আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তরুনী চিকিৎসকের নৃশংস বর্বরোচিত ধর্ষণ বা গনধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রমাণ লোপাটের মত মারাত্মক অভিযোগ উঠেছে । খোদ সিবিআই সুপ্রিম কোর্টে প্রমান লোপাটের কথা জানিয়েছে । সেই সাথে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে উঠছে এই ঘটনায় প্রকৃত আসামীদের আড়াল করার অভিযোগ । মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে মঙ্গলবার ছাত্রসমাজের ‘নবান্ন অভিযান’-এ পুলিশের এলোপাথাড়ি লাঠিচার্জ, জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের ব্যবহার করায় ফের জনরোষের মুখে পড়তে হচ্ছে রাজ্য পুলিশকে । ‘নবান্ন অভিযান’-এ পুলিশের অতি সক্রিয়তার প্রতিবাদে আজ রাজ্য জুড়ে বিজেপির ডাকা ১২ ঘন্টার বনধ পালিত হচ্ছে । পরপর এতকিছু ঘটনাক্রমের মাঝে দলের প্রতিষ্ঠা দিবস কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিহত তরুনী চিকিৎসকের নামে উৎসর্গ করে ফের বিজেপির তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে মমতা ব্যানার্জিকে ।
মমতা ব্যানার্জি এক্স-এ লিখেছেন,’আজ তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসটিকে আমি উৎসর্গ করছি আমাদের সেই বোনটিকে, যাঁকে আমরা কয়েক দিন আগে আর জি কর হাসপাতালে মর্মান্তিকভাবে হারিয়ে শোকাহত। আর জি করে আমাদের সেই যে বোনকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছিল, তাঁর পরিবারের প্রতি আন্তরিকতম সমবেদনা জানিয়ে এবং দ্রুততম গতিতে সেই ঘটনার সুবিচার চেয়ে, সেইসঙ্গে সারা ভারতে সকল বয়সের যত নারী যেখানে যত অমানুষিক ঘটনার শিকার হয়েছেন, তাঁদের সকলের জন্য আমরা হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে আমাদের দুঃখ জ্ঞাপন করি। ছাত্র-ছাত্রী, যুবক-যুবতীদের একটা বড় সামাজিক ভূমিকা আছে। সমাজ ও সংস্কৃতিকে জাগ্রত রাখার মধ্যে দিয়ে নতুন দিনের স্বপ্ন উপহার দেওয়া এবং চারপাশের সকলকে নতুন দিনের উজ্জ্বল ব্রতে উদ্বুদ্ধ করাই ছাত্র সমাজের কাজ। আজকের দিনে তাঁদের সকলের প্রতি আমার আবেদন, এই প্রচেষ্টায় উদ্বুদ্ধ হন, ব্রতী থাকুন। আমার ছাত্র-ছাত্রী বন্ধুরা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, উজ্জ্বল ভবিষ্যতের সংকল্পে নিয়োজিত থাকুন।’
মুখ্যমন্ত্রীর এই টুইটের প্রতিক্রিয়ায় অগ্নিমিত্রা পালের কটাক্ষ, ‘শুধু অভয়ার নামে উৎসর্গ করে নিজের দায়িত্ব এড়ানো যাবে না মাননীয়া। অভয়ার হত্যাকাণ্ডে পুলিশ ও আরজি কর হাসপাতালে ভূমিকা সম্পর্কে সবাই অবহিত। পুলিশি তদন্তে আস্থা নেই অভয়ার বাবা-মার। সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। মেয়েটির দেহ কেন তাড়াতাড়ি পুড়িয়ে ফেলা হলো তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আপনি এ বিষয়ে কিছু জানতেন না, কেউ বিশ্বাস করে না। একইভাবে আরজিকরের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে আপনি ক্লিনচিট দিয়েছিলেন। অভয়ার মৃত্যুর পর সন্দীপ ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন মনে করেনি কলকাতা পুলিশ। কী লুকাতে ব্যস্ত ছিল লালবাজার? আপনি কি কিছুই জানতেন না? বহু তথ্য প্রমাণ ইতিমধ্যেই নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। এর দায় কলকাতা পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে। মাননীয়া আপনার প্রতি রাজ্যের মানুষ আস্থা হারিয়েছে। অভয়ার বিচার পেতে দেরি হবে শুধুমাত্র কলকাতা পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের জন্য। তারা প্রাণপণ প্রমাণ লোপ করে গিয়েছে। আপনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও পুলিশ মন্ত্রী হিসেবে এর দায় নিন এবং পদত্যাগ করুন।’।