এইদিন ওয়েবডেস্ক,বর্ধমান,২৬ আগস্ট : ফের একবার নিজেকে “গরীব মুখ্যমন্ত্রীর” তকমা দিলেন মমতা ব্যানার্জি । আজ মঙ্গলবার বর্ধমান শহরের মিউনিসিপাল বয়েজ হাই স্কুলের মাঠে সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধন করতে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ফের দাবি করেছেন যে তিনি সরকার থেকে এক পয়সা বেতন নেন না । এমনকি সাংসদ থাকাকালীন যে পেনশন প্রাপ্য সেটাও নাকি নেন না তিনি । এক বেলা খেয়ে জীবনযাপন করেন । রিসোর্টে থাকলে তার খরচ তিনি নিজেই বহণ করেন ৷ আর তার ব্যক্তিগত খরচ খরচা আসে বই ও গান লিখে । তবে এবারে তিনি ছবি এঁকে উপার্জনের গল্প শোনাননি । কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠছে যে মুখ্যমন্ত্রীর জীবনযাপনের খরচ আদপেই কি বই বা গান লেখার উপার্জিত অর্থে পরিচালনা সম্ভব? বিশেষ করে এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বাজারে? মুখ্যমন্ত্রী নিজে আইফোন ব্যবহার করেন, স্পেশাল ভাবে তৈরি করা হয় তার শাড়ি, তার নীল-সাদা চটির দাম নিয়েও একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি ।
আজ মমতা ব্যানার্জি ফের দাবি করেছেন,’আমি কিন্তু সরকার থেকে এক পয়সাও মাইনে নিই না, জেনে রাখো ভাইবোনেরা ।’ এরপর তিনি সুর কেটে বলেন,’আমি সাতবার এমপি ছিলাম । মাসে কিছু না হলে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার পেনশন পেতে পারতাম । সেটাও নিই নি । সেগুলো তো কেউ মনে রাখবে না ।’ তিনি বলেন,’এইতো পশ্চিমবঙ্গ সরকারের চিফ সেক্রেটারি বসে আছে, তার সামনে বলছি । সার্কিট হাউসে গেলেও সেখানে টাকা দিয়ে থাকি ।’ নিজের উপার্জনের উৎস কি সেটাও জানিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি । তিনি বলেছেন,’আমি বই লিখি তা থেকে যে টাকা পাই, আমি গান লিখি তা থেকে যা টাকা পাই, তাতেই আমার চলে যাবে । একা মানুষের আর কত দরকার ? কিসের দরকার ? খাইতো এক বেলা । আমার টাকা কিসের জন্য লাগবে ? আমার টাকা চাইনা, আমি মেধা চাই । আমি টাকা চাই না, আমি আত্মসম্মান চাই ।’
কিন্তু গত বছর জানুয়ারী মাসে মুখ্যমন্ত্রীর উপার্জনের উৎস ও ব্যক্তিগত খরচখরচা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৎকালীন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । তিনি বলেছিন, ‘মমতার হাতে যে অ্যাপলের ফোটটা আছে, সেটা তিনি কোথা থেকে কিনেছেন? তিনি যদি ভাতা না নিয়ে থাকেন, তাহলে কি বিনামূল্যে কেই তাঁকে এই ফোনটা দিয়েছেন? এখনকার দিনে কেউ যদি কাউকে ফ্রিতে কিছু দেয়, তাহলে স্বার্থ ছাড়া তো তা দেবে না।’
মমতার শাড়ি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিজেপি সাংসদ। তাঁর দাবি, মমতা যে শাড়ি পরেন, সেরকম শাড়ি আর বাংলায় পাওয়া যায় না। সুকান্ত বলেছিলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ডিজাইন করা শাড়ি পরেন। ওই শাড়ির এক কপি কেউ এনে দিতে পারবেন আমায়? আমি চ্যালেঞ্জ করছি, ওই শাড়ি বাংলার বাজারে মিলবে না।’ মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে সুকান্ত প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ডিজাইনার কি মমতাকে বিনামূল্যে শাড়ি দেন? আর তা না হলে এই শাড়ি কেনার টাকা কোথা থেকে পান মমতা?’ এদিকে আজ মুখ্যমন্ত্রী এহেন দাবির পর অনেকে প্রশ্ন তুলছেন যে পশ্চিমবঙ্গের লেখক এবং সুরকারের তো অভাব নেই, তাহলে তারা নিজেদের জীবন চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কেন ? কতজন লেখক এবং সুরকার বই লিখে এবং গান লিখে কোটিপতি হয়েছেন ? এই প্রশ্নও তুলছেন তারা ।।

