এইদিন ওয়েবডেস্ক, বাঁকুড়া,১৭ সেপ্টেম্বর : বাঁকুড়া জেলার বড়জোড়া ব্লকের সাহারজোড়া গ্রামে মল্লরাজা প্রতিষ্ঠিত মহামায়ার শিলামূর্তি আজও পূজিতা হয়ে আসছেন । এই গ্রামে অন্য কোনও মূর্তির পুজো নিষিদ্ধ । মহামায়ার এই শিলামূর্তির পুজো শুরুর পিছনে রয়েছে এক জনশ্রুতি।শোনা যায় এক প্রান্তিক চাষি একসময় নিজের জমিতে চাষ দেওয়ার সময় লাঙলের ফলায় উঠে আসে একখন্ড শিলা। লাঙলের আঘাতে শিলার কিছুটা অংশ ফেটে গিয়েছিল। তখন ওই কৃষক লক্ষ্য করেন শিলাখন্ডের ফাটা অংশ থেকে চুঁইয়ে পড়ছে তাজা রক্ত। সে রক্ত জমির মাটি ভিজিয়ে দেয়।অলৌকিক এই ঘটনা দেখে ভয় পেয়ে যান কৃষক । তিনি তখন জ্ঞান হারান ।
খবর পেয়ে তড়িঘড়ি গ্রামবাসীরা ছুটে যান। তারপর খবর পৌছে যায় রাজার কাছে।বিষ্ণুপুরে তখন মল্লরাজার রাজত্ব। মহারাজা নিজে জমির কাছে ছুটে আসেন। বিষয়টি নিজের চোখে দেখে বিহ্বল হয়ে পড়েন রাজা। শোনা যায় সেদিনই রাজার স্বপ্নাদেশ হয় শিলারূপে দেবীকে প্রতিষ্ঠা করে পুজো করতে হবে। ধার্মিক রাজা তখন শিলামূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো শুরু করেন। সেই থেকেই আদ্যাশক্তি মহামায়ার পুজো চলে আসছে।তবে এই দেবীমূর্তির প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে গ্রামে বন্ধ হয়ে যায় অন্যান্য দেবদেবীর মূর্তির পুজো। শুধুমাত্র ঘটে পুজোর চল রয়েছে। সাহারজোড়া গ্রামে আজও কোনও দেবদেবীর মূর্তির পুজো হয় না।
মল্ল রাজার উত্তরাধিকারীরা নিষ্ঠার সঙ্গে এই পুজো চালিয়ে আসছিলেন।তারপর মল্ল রাজাদের তালুক হস্তান্তর হয়ে যায় আসানসোলের বেলভুই জমিদারদের কাছে। তখন থেকে সমগ্র গ্রামবাসীরাই দেবীর পুজোর দায়িত্ব নেন। সেই পুরনো রীতি নীতি মেনে আজও সাহারজোড়া গ্রামে ওই শিলাখণ্ড কে মা মহামায়া রূপে পুজো করে আসছে গ্রামবাসীরা।প্রথা মেনে ঠাকুর দালানে আজও ১০৮ টি থালায় ভোগ সাজিয়ে দিতে হয় ।।