এইদিন ওয়েবডেস্ক,কুমিল্লা,০৭ ফেব্রুয়ারী : বাংলাদেশের আরও একটা মাদ্রাসার মধ্যে কুকর্ম প্রকাশ্যে এসেছে । মধ্যরাতে কয়েকজন আবাসিক পড়ুয়ার ঘুম ভেঙে গেলে আবাসনের ছাদে গিয়েছিল কিছুটা সময় কাটানোর জন্য । কিন্তু পাশের ভবনের ছাদে চোখ পড়তে তাদের ঘুম ছেড়ে যায় । তারা দেখে মাদ্রাসা সুপারের কোলে বসে একজন বোরখা পরা মহিলা । মহিলাকে মুহুর্মুহু জড়িয়ে ধরে চুম্বন করছিলেন সুপার । পাশাপাশি আবাসন হওয়ায় তাদের অশ্লীল বার্তালাপও পড়ুয়াদের কানে আসছিল । তখনই তারা বুঝতে পারে যে মহিলা অন্য কেউ নন,বরঞ্চ তাদের মাদ্রাসারই একজন শিক্ষিকা । তাকে কোলে বসিয়ে আদর করছেন খোদ মাদ্রাসার সুপার । শিক্ষিকা দেখতে শুনতে ভালো হওয়ায় এমনিতেই সুপার মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন হামীদী তার উপর সদয় ছিলেন । কিন্তু তিনি এতটা সদয় যে রাতের ঘুম বাদ দিয়ে ছাদে উঠে শিক্ষিকার সঙ্গে কোলাকুলি করবেন, তা কল্পনাও করতে পারেনি পড়ুয়ারা ।
এদিকে পড়ুয়ারা যখন একাগ্র চিত্তে এই লিলাখেলা দেখছিল তখনই নজর পড়ে যায় সুপারের । আর তাদের এই অপরাধের শাস্তি স্বরূপ বেধড়ক মার খেতে হয় তাদের। বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলায় বাঙ্গড্ডা এলাকার ‘দারুল ফালাহ্ হামীদীয়া বালক-বালিকা দাখিল মাদ্রাসা’র ঘটনা ।
সুপার ও শিক্ষিকার অনৈতিক কর্মকান্ড দেখে ফেলায় যাকে বেধরক মারধর করা হয়েছে, তাঁর নাম ফয়সাল মাহমুদ। সে মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া । রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়ায় মাদ্রাসার আবাসিক ভবনের ছাদে গিয়েছিল ফয়সাল। সাথে ছিলেন আরও তিন পড়ুয়া । হঠাৎ ফয়সাল দেখতে পায় যে পাশের ভবনের ছাদে শিক্ষক নিজাম একটা চেয়ারে বসে আছে । বোরখা পরা এক নারী শিক্ষিকা বসে আছে তার কোলে । ওই অবস্থাতেই তারা অনৈতিক কাজ করছেন।
নির্যাতনের শিকার ফয়সালের অভিযোগ,বিষয়টি মাদ্রাসায় জানাজানি হলে তাকে ঘটনাটি গোপন রাখতে হুমকি দেন নিজাম উদ্দিন। কিন্তু সে গোপন না রেখে সবাইকে জানিয়ে দেয়। এতে তার প্রতি ক্ষিপ্ত হন নিজাম। ফয়সাল জানায়, এর পরের দিন সে অসুস্থতার কারণে ক্লাস না করে শুয়ে থাকে আবাসিক ভবনে। নিজাম আগের ঘটনার অজুহাতে ক্লাস না করায় ফয়সালকে বেধড়ক মারধর করেন ।
খবর পেয়ে ফয়সালের মা তাকে মাদ্রাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন দেন। ৪ দিন চিকিৎসার পরেও ফয়সালের শরীরে মারধরের চিহ্ন স্পষ্ট। এ বিষয়ে ফয়সালের মা হালিমা বেগম বলেন, ‘সুপার নিজামের অপকর্মের বিষয়টি আমার ছেলে আমাকে জানিয়েছে। আমি তাকে বলি যাতে বিষয়টি গোপন রাখে। কিন্তু সে তো বাচ্চা। বয়স কম হওয়ায় সে সবাইকে জানিয়ে দেয়। একারণে নিজাম হুজুর আমার সন্তানকে বেধড়ক মারধর করে আহত করে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই’।
মাদ্রাসার শিক্ষিকা-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অপকর্ম করা নিজামের পেশায় পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। নিজাম স্থানীয় হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। নিজামের লাগামহীন অনৈতিক কাজে দিশেহারা অভিভাবকরা। তবে অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত নিজাম বলেন, অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি ষড়যন্ত্র। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফয়সাল ছুটি না নিয়ে ক্লাসে অনুপস্থিত ছিল। তাকে ক্লাসে না আসার কারণ জিজ্ঞাসা করেছি। সে উচ্চস্বরে কথা বলে বেয়াদবি করেছে। এসময় তাঁকে বেত্রাঘাত করেছি । বেত্রাঘাতে তার শরীরে আঘাত লাগে। এ ঘটনায় পরিবারের কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।।

