এইদিন ওয়েবডেস্ক,মোরাদাবাদ,২৬ এপ্রিল : পিইউবিজি খেলতে গিয়ে মুসলিম যুবকের প্রেমের ফাঁদে পড়েছিলেন এক হিন্দু গৃহবধূ । তারপর প্রেমিকের হাত ধরে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে ধর্মান্তরিত হয়ে নিকাহ করেন । তাদের একটি কন্যাসন্তানের জন্মও হয় । কিন্তু নিকাহের ২ বছরের মাথায় মুসলিম স্বামীর বিরুদ্ধে উঠল হত্যার চেষ্টার অভিযোগ । ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ জেলার গলশহীদ থানার অন্তর্গত আশালাতপুরা এলাকার । জিনাত নামে ওই মহিলা বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি এবং কোমায় রয়েছেন। মহিলার মা মাধুরীর অভিযোগ জিনাতের স্বামী মোহাম্মদ ফুজাইন তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেছিল । যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত মোহাম্মদ ফুজাইন ।পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী ও শ্বশুরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে । মোরাদাবাদ থানার পুলিশ বলেছে, ‘এই ঘটনায় গলশহীদ থানায় সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং আগাম আইনি প্রক্রিয়া চলছে।’পুলিশ মোহাম্মদ ফুজাইল ও তার বাবা আসলামের বিরুদ্ধে আইপিসির ৩২৩, ৫০৬,৩০৬ এবং ৫১১ ধারায় মামলা দায়ের করেছে । তবে এখনো কোনো গ্রেফতারির খবর নেই বলে জানা গেছে ।
আক্রান্ত মহিলা জিনাতের বাড়ি মুম্বাইয়ের শিবাজি নগরে । ইসলাম গ্রহণের আগে তার নাম ছিল হর্ষদা। প্রায় ২ বছর আগে পিইউবিজি খেলতে গিয়ে মোরাদাবাদ জেলার গলশহীদ থানার অন্তর্গত আশালাতপুরার বাসিন্দা মোহাম্মদ ফুজাইনের সংস্পর্শে আসেন হর্ষদা । ক্রমে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । হর্ষদা ধর্মান্তরিত হয়ে প্রেমিককে বিয়ে করেন । তার নতুন নামকরন করা হয় জিনাত । এরপর মুম্বাইয়ের মুম্বরা এলাকায় থাকতে শুরু করে ফুজাইল । তাদের একটা কন্যাসন্তানের জন্মও হয় ।
হর্ষদার মা গত ২২ এপ্রিল পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে জানান যে ২০২২ সালের মার্চ মাসে,তার মেয়ে হর্ষদা তাকে কিছু না জানিয়ে মোরাদাবাদে যায় এবং মহম্মদ ফুজাইলকে নিকাহ করে । গত ১৫ এপ্রিল জিনাত তার মা মাধুরীকে মুম্বাইতে ডেকেছিলেন । ফোনে সে জানায় যে ফুজাইল তাকে মারধর করে এবং তাকে অত্যন্ত নোংরা ভাষায় গালাগালি করে । ফুজাইল মুম্বাইয়ে তার ব্যবসা করা বন্ধ করে দেয় এবং আশালাতপুরায় চলে যায় । মেয়ে ফোন করার ২ দিন পর,তিনি জানতে পারেন যে তার মেয়েকে মোরাদাবাদের বিবেকানন্দ হাসপাতালের আইসিইউ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে ।
জানা গেছে,হর্ষদার প্রায় ৭ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল এক হিন্দু যুবকের সাথে এবং তার একটি ৬ বছরের ছেলেও রয়েছে। পরে তার স্বামীর সাথে বিবাহ বিচ্ছেদ হয় । এরপরে ওই মহিলা মোহাম্মদ ফুজাইলের প্রেমের ফাঁদে পড়েন এবং ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর তিনি জিনাত ফাতিমা হন এবং মোহাম্মদ ফুজাইলকে নিকাহ করেন। প্রায় এক বছর আগে জিনাতের ফুজাইলের একটি মেয়েও হয়। এরপর ফুজাইল তার ওপর নির্যাতন শুরু করে বলে অভিযোগ ।
জানা গেছে,মাধুরীদেবী মেয়ের হাসপাতালে ভর্তির খবর পেয়ে এক আত্মীয়ের সঙ্গে মোরাদাবাদে আসেন । তিনি ফুজাইলকে মেয়ের হাসপাতালে থাকার কারণ জানতে চান। উত্তরে সে বলে জিনাত আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল । কিন্তু সন্দেহ হওয়ায় তিনি মহম্মদ মোহাম্মদ ফুজাইল ও তার বাবা আসলামের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ।
সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে, জিনাতকে দিয়ে ‘সারোগেট মাদার’ হিসাবে কাজ করাচ্ছিল মোহাম্মদ ফুজাইন ও তার বাবা আসলাম । এতে তাদের বিপুল আয় হচ্ছিল । কিন্তু সম্প্রতি ‘সারোগেট মাদার’-এর কাজ করতে অস্বীকার করেন জিনাত । তখন থেকেই শুরু হয় অশান্তি এবং তার উপর শারিরীক নির্যাতন ।।
তথ্যসূত্র ও ছবি সৌজন্যে ওপি ইন্ডিয়া ।