এইদিন ওয়েবডেস্ক,চট্টগ্রাম,০২ জুন : বাংলাদেশের চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মন্দিরে আগুন ধরিয়ে প্রাচীর নির্মান করে দখল নিল স্থানীয় মুসলিমরা । সীতাকুণ্ড থানার সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুর প্রকাশ ছিন্নমূল ২ নম্বর সমাজের মহাশ্মশান কালী ও শিব মন্দিরে গভীর রাতে শতাধিক স্থানীয় মুসলিম দল বেঁধে এসে চড়াও হয়ে মন্দির ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয় । পাশাপাশি মন্দিরের সীমানার ভেতর দেয়াল নির্মান করে দখল নেয় । দুই শতাধিক বছর প্রাচীন এই মন্দির ৷ তবে ঠিক কি উদ্দেশ্যে মন্দিরটির দখল নেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয় ।
জানা গেছে, উপজেলার জঙ্গল ছলিমপুরে ৩০০ হিন্দু পরিবারের বসবাস। সেখানে পাঁচটি মন্দির আছে।আক্রান্ত মন্দিরটি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ২ নম্বর সমাজ এলাকায় রয়েছে ।জনবসতির কাছে এটি ‘মহাশ্মসান কালী ও শিব মন্দির’ নামে পরিচিত। পাহাড়ি টিলার এই এলাকায় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের মৃতদেহ সৎকার হয়৷ আর উপরে রয়েছে কালী ও শিব মন্দির।
মন্দির কমিটির সম্পাদক অজয় মজুমদারের ভাষ্য, সরকারি খাস জমিতে দুই যুগ আগে এ মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। এই জমির মালিকানা নিয়ে কারো সঙ্গে বিরোধও নেই। শনিবার গভীর রাতে ‘বেশকিছু’ লোকজন গিয়ে কেন এ মন্দিরে আগুন দিয়ে ভষ্মীভূত করা হয়েছে সেটা তারা বুঝতে পারছেন না। তিনি বলেন, মন্দিরটি টিন শেডের ছিল। সেখানে সিমেন্ট ও মাটির তৈরি দুইটি কালী মূর্তি, একটি শিব মূর্তি ছিল। সম্প্রতি মন্দিরটি পাকা করার জন্য তারা কাজ শুরু করেছেন এবং পিলারও দেওয়া হয়েছে।শনিবার গভীর রাত তিনটা থেকে চারটার মধ্যে বেশকিছু লোক এসে মন্দিরের সীমানার মধ্যে দেয়াল নির্মাণ করে এবং সিমেন্টের তৈরি কালী মূর্তিটি পাশের এক জনের প্লটে ফেলে দিয়ে মন্দিরে আগুন জ্বালিয়ে দেয় । ঘটনার সময় প্রবল বৃষ্টির কারণে লোকজন টের পায়নি জানিয়ে তিনি বলেন,’পরে সিমেন্টের তৈরি মূর্তি ভাঙার শব্দে লোকজন টের পায়। ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছার আগেই হামলাকারীরা পালিয়ে যায় ।’
এই ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে মন্দির পরিচালনা কর্তৃপক্ষ। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, রাত তিনটা থেকে চারটার মধ্যে মন্দিরের টিনশেড ঘর ভেঙে পাশ্ববর্তী এক জায়গায় ফেলে দেয় এবং বাঁশের খুঁটি ও বেড়ায় আগুন দেওয়া হয়। এলাকায় কারো সাথে তাদের বিরোধ নেই উল্লেখ করে জিডিতে অভিযোগ করা হয়, মন্দিরের জায়গা দখল নিতে কিছু লোক পাঁয়তারা করছে বলে তাদের সন্দেহ ।
সীতাকুণ্ড থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন,’খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। এটি স্পর্শকাতর ঘটনা। তাই গুরুত্বসহকারে বিষয়টি নিয়েছি। আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এলাকাটি পরিদর্শন করেছেন।’ আজ সোমবার মন্দির এলাকা পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহম্মদ ফখরুল ইসলাম।তিনি বলেন,’আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। স্থানীয়রা বলছে, এটা জায়গা দখলের পাঁয়তারা। এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে কাজ শুরু হয়েছে।’।