এইদিন ওয়েবডেস্ক,জম্মু-কাশ্মীর,২৭ এপ্রিল : গোয়েন্দা সংস্থাগুলি উপত্যকায় সক্রিয় ১৪ জন সন্ত্রাসীর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। এই সন্ত্রাসীদের মধ্যে ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী কাশ্মীরি রয়েছে। এএনআই সূত্রে জানা গেছে, এই স্থানীয় সন্ত্রাসীরা উপত্যকায় পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের সাহায্য করার কাজে নিয়োজিত। সন্ত্রাসীদের জন্য রসদ সরবরাহ করাই কেবল তাদের কাজ নয়, বরং তারা স্থল পর্যায়ে বিভিন্নভাবে সন্ত্রাসীদের সহযোগীতাও করে।
তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন আদিল রেহমান ডেন্টু (২১), আসিফ আহমেদ শেখ (২৮), আহসান আহমেদ শেখ (২৩), হারিস নাজির (২০), আমির নাজির ওয়ানি (২০), ইয়াওয়ার আহমেদ ভাট, আসিফ আহমেদ খান্দে (২৪), নাসির আহমেদ ওয়ানি (২১), শহীদ আহমেদ কুটে (২৭), আমির আহমেদ দারুন, আদনান আহমেদ দারুন, জুহিদ আহমেদ (২৭), জুলুস আহমেদ দারুন, রবিউল হক। গণাই (৩২) ও জাকির আহমেদ গনি (২৯)।
এই সন্ত্রাসীরা পাকিস্তান-সমর্থিত তিনটি সন্ত্রাসী সংগঠনের হয়ে কাজ করে বলে জানতে পেরেছে গোয়েন্দারা । আর ওই ইসলামি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির মধ্যে প্রথমটি হল হিজবুল মুজাহিদিন । দ্বিতীয়টি লস্কর-ই-তৈয়বা এবং তৃতীয়টি জইশ-ই- মোহাম্মদ।
তাদের মধ্যে প্রথম নাম আদিল রেহমান ডেন্টু, যে ২০২১ সালে লস্কর-ই-তৈয়বাতে যোগ দিয়েছিল । ডেন্টু সোপোর এলাকায় লস্কর কমান্ডার হিসেবে কাজ করে।
আসিফ আহমেদ শেখ অবন্তীপোরায় জৈশের কমান্ডার। সে ২০২২ সাল থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত। আহসান আহমেদ শেখ পুলওয়ামায় সক্রিয়। সেও একজন লস্কর সন্ত্রাসী এবং ২০২৩ সাল থেকে ক্রমাগত সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত। পুলওয়ামার হারিস নাজির ২০২৩ সাল থেকে লস্করের সাথে যুক্ত। আমির নাজির ২০২৪ সালে জইশ-ই-মোহাম্মদে যোগ দেয় । জইশ-ই-মোহাম্মদের সাথে যুক্ত সন্ত্রাসী ইয়াওয়ার আহমেদ ভাট ২০২৪ সাল থেকে পুলওয়ামা এলাকায় সক্রিয়। আসিফ আহমেদ খান্ডে শোপিয়ানে সক্রিয় এবং জুলাই ২০১৫ সাল থেকে হিজবুল মুজাহিদিনের সাথে যুক্ত। নাসির আহমেদ ওয়ানি ২০১৯ সাল থেকে শোপিয়ানে লস্কর সন্ত্রাসী হিসেবে সক্রিয়। শহীদ আহমেদ কুটে একজন লস্কর সন্ত্রাসী। ২০২৩ সাল থেকে সে ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’-এর সাথে যুক্ত। এটি সেই একই সংগঠন যা পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার দায়িত্ব নিয়েছিল। আমির আহমেদ দারও ২০২৩ সাল থেকে শোপিয়ানে সক্রিয়। সে লস্কর-ই- তৈয়বার সাথে যুক্ত। বিদেশী সন্ত্রাসীদের সাহায্য করার ক্ষেত্রে সে বড় ভূমিকা পালন করে। শোপিয়ানের আদনান সাফি দার লস্কর এবং প্রতিরোধ ফ্রন্ট অর্থাৎ টিআরএফ উভয়ের জন্যই সক্রিয়। সে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর পাকিস্তানি হ্যান্ডলার এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের লিঙ্ক হিসেবে কাজ করে৷
জুবায়ের আহমেদ ওয়ানি ওরফে উবাইদা ওরফে উসমান অনন্তনাগ জেলায় হিজবুল মুজাহিদিনের প্রধান অপারেশনাল কমান্ডার। তাকে এ-প্লাস সক্রিয় সন্ত্রাসীর শ্রেণীতে গণ্য করা হয়। ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত, সে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর অনেক হামলার সাথে জড়িত।
হারুন রশিদ গণাই দীর্ঘদিন ধরে নিরাপত্তা বাহিনীর নজরে ছিল । সে অনন্তনাগ এলাকায় হিজবুল মুজাহিদিনের একজন সক্রিয় সদস্য। ২০১৮ সালে, সে পাক অধিকৃত কাশ্মীরেও গিয়েছিল, যেখানে তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল যে সম্প্রতি সে দক্ষিণ কাশ্মীরের এলাকায় ফিরে এসেছে । জুবায়ের আহমেদ গনি লস্করের সাথে যুক্ত একজন সন্ত্রাসী। কুলগামের এই সন্ত্রাসী বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনীর উপর হামলা এবং কাশ্মীরে অনেক টার্গেট কিলিংয়ে জড়িত ছিল।
পহেলগাম হামলার পর, নিরাপত্তা বাহিনী স্থানীয় সন্ত্রাসীদের খুঁজছে, যারা পাকিস্তানি সন্ত্রাসীদের সহায়তা ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করে। কাশ্মীর পুলিশের সাথে নিরাপত্তা বাহিনী অনন্তনাগ এবং পুলওয়ামায় যৌথ তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে। এই সন্ত্রাসীরা এই এলাকাগুলিতে সক্রিয় বলে জানা গেছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলি এই ১৪ জন সন্ত্রাসীর পহেলগাম হিন্দু নরসংহারের ঘটনায় সংযোগ খুঁজছে। উল্লেখ্য, গত ২২শে এপ্রিল পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় তিনজন সন্ত্রাসী পাকিস্তানের বলে জানা গেছে, যদিও তদন্তকারী সংস্থাগুলি সন্দেহ করছে যে কিছু স্থানীয় সন্ত্রাসবাদী এই হামলায় তাদের সহায়তা করেছিল।।