এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইসলামাবাদ,২৪ জুলাই : শ্রীলঙ্কার নজিরবিহীন অর্থনৈতিক সংকটের পিছনে অন্যতম প্রধান কারন হিসাবে মনে করা হচ্ছে শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি গোটাবায়া রাজাপাক্ষের (Gotabaya Rajapaksa) ভূল নীতি এবং রাজাপাক্ষে পরিবারের সীমাহীন দূর্নীতি । দেশবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়ে গোটাবায়া নিরাপদ আশ্রয়ে পালিয়ে গেলেও চরম সঙ্কটের মধ্যে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষ । এবার একই পরিস্থিতির দ্বারপ্রান্তে এসে পৌঁছে গেছে পাকিস্তান । আর এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খোদ পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
শনিবার পাকিস্থানের একটি সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেছেন, ‘পাকিস্তান শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি থেকে খুব বেশি দূরে নেই । শীঘ্রই মানুষ মাফিয়াদের দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসবে ।’ তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের সত্যিকারের স্বাধীনতা নিয়ে আমার আহ্বানের জবাবে মানুষের প্রতিক্রিয়া দেখে এবং তাদের মনোভাব বোঝার পরে আমি নিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে, পাকিস্তানের জনগণ সহ্যের চরম সীমায় পৌঁছেচে এবং এই মাফিয়াদেরকে আর লুটপাট ও লুণ্ঠন চালিয়ে যেতে দেবে না । আমরা শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতিতে পরিণত হওয়া থেকে বেশি দূরে নেই। আমাদের জনগণ এবার রাস্তায় নেমে আসবে ।’
প্রসঙ্গত,১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর মারাত্মক অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে শ্রীলঙ্কা । রাষ্ট্রীয় কোষাগারে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ তলানিতে নেমে গেছে । শ্রীলঙ্কা জ্বালানি, খাবার এবং ওষুধের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর আমদানি মূল্য পর্যন্ত পরিশোধ করতে পারছে না । ডিজেলের সরবরাহ অনিয়মিত হয়ে পড়ায় প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না । ফলে গত কয়েক মাস ধরে চরম বিদ্যুৎ সঙ্কটে ভুগছে এই দ্বীপরাষ্ট্রটি ।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের হিসাবে আরও অন্তত এক ডজন দেশ শ্রীলঙ্কার পর লাইনে রয়েছে । অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা ওই সমস্ত দেশগুলির বৈদেশিক ঋণ, মুদ্রাস্ফীতি এমন পর্যায়ে চলে গেছে যা দেউলিয়া হওয়ার পূর্বাবস্থায় । রয়টার্সের তালিকা অনুযায়ী ওই দেশগুলির মধ্যে রয়েছে- আর্জেন্টিনা, ইউক্রেন, মিশর, কেনিয়া, ইথিওপিয়া, এল সালভাদর, ইকুয়েডর,বেলারুশ, নাইজেরিয়া এবং পাকিস্তান ।
এদিকে পাকিস্থানের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য শাসকদলের দূর্নীতিকেই দায়ি করেছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান । তিনি বলেন,’মাত্র তিন মাসের মধ্যে জারদারি ও শরীফের মাফিয়ারা দেশকে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে নতজানু করে ফেলেছে । তাদের একমাত্র উদ্দেশ্য, ৩০ বছর ধরে তারা দেশকে লুট করে যে সম্পদ জমিয়েছে তা রক্ষা করা । সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো আর কত দিন ধরে এমন কাজ বরদাস্ত করবে ?’