শ্যামসুন্দর ঘোষ,মন্তেশ্বর(পূর্ব বর্ধমান),১৪ ডিসেম্বর : রাজ্য জুড়ে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকা প্রকাশ হতেই ফের একবার রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগে সরব হচ্ছে বিরোধী দলগুলো । অভিযোগ, কোথাও তৃণমূল নেতাদের প্রাসাদোপম অট্টালিকা থাকা সত্ত্বেও আবাস যোজনার তালিকায় তাঁর স্ত্রী বা আত্মীয়ের নাম উঠেছে । কোথাও কোনো তৃণমূল নেতা একবার সরকারী আবাস যোজনায় ঘর পাওয়া সত্ত্বেও ফের একই প্রকল্পে তাঁর নাম লক্ষ্য করা যাচ্ছে । ফলে বঞ্চিত হতে হচ্ছেন এলাকার যোগ্য নাগরিকরা ।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের এহেন দূর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছে মন্তেশ্বর ব্লকের ১৪ নম্বর জেডপি মণ্ডলের বিজেপি নেতৃত্ব । বুধবার মন্তশ্বরে বিজেপির ১৪ নম্বর জেডপির সভাপতি ঝুলন হাজরার নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল স্থানীয় বিডিওর কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দিয়ে অযোগ্য ব্যক্তিদের নাম আবাস যোজনার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম তোলার দাবি জানিয়েছেন । পাশাপাশি মণ্ডল সভাপতি এদিন একটি সাংবাদিক বৈঠক করে বলেছেন,’প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে ব্যাপক দূর্নীতি করছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস । বেছে বেছে তৃণমূলের লেঠেল বাহিনীকে ঘর পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে । ফলে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত দরিদ্র নাগরিকরা ।’ তাঁর অভিযোগ,’
মন্তেশ্বর পঞ্চায়েতের প্রধান অর্চনা বাগ,কিছুদিন আগে গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ঘর পেয়েছিলেন ৷ তাঁর দু’তলা বাড়ি রয়েছে । তা সত্ত্বেও ওনার স্বামী সুনীল বাগের নাম আবাস যোজনার তালিকায় রয়েছে । এছাড়া মন্তেশ্বর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান রফিকুল ইসলাম শেখের ভাইকেও অনুদান পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে । আবাস যোজনার সিরিয়াল নম্বর ৬০০ তে নাম রয়েছে তাঁর ।’
তিনি বলেন,’এইভাবে বেছে বেছে নাম দেওয়া হচ্ছে ।
আশাকর্মী,অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দিয়ে সার্ভে করাচ্ছে তৃণমূল । ওই কর্মীরা নিজেদের প্রাণের ভয়ে তৃণমূল নেতাদের নির্দেশে লিখে দিচ্ছেন আর এখানকার স্থানীয় বিডিও শাসকদলের মদত যোগাচ্ছেন ।’ তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে জানান,এই দূর্নীতি বন্ধ না হলে বিডিও অফিসে তাঁরা লাগাতার ধর্না প্রদর্শন শুরু করবেন ।
বিজেপি নেতার বক্তব্য শুনুন :-
উল্লেখ্য,সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যসচিব ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজ্যের প্রতিটি জেলা পরিষদকে আবাস যোজনা সংক্রান্ত অভিযোগ নথিভুক্ত করার জন্য কন্ট্রোল রুম খোলার নির্দেশ দিয়েছিলেন । নির্দেশ অনুযায়ী পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদেও কন্ট্রোল রুম খোলা হয় । ডিসেম্বরের ৩ তারিখ থেকে ৯ তারিখ পর্যন্ত চলে ওই কন্ট্রোল রুমটি । প্রতিদিনের জন্য পৃথক পৃথক মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছিল ।
পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের কন্ট্রোল রুমের নম্বর :-
কিন্তু অভিযোগ,বিষয়টি নিয়ে প্রচার না থাকায় জেলার সিংহভাগ মানুষই এই কন্ট্রোল রুম সম্পর্কে কিছুই জানেন না । তবুও ভাগ্যক্রমে যারা পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ দ্বারা ঘোষিত কন্ট্রোল রুমের মোবাইল নম্বর হাতে পেয়েছিলেন তাঁদের বিরূপ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়েছে । অধিকাংশ সময় হয় নম্বর এজগেজ ছিল অথবা ‘সুইচ অফ’ বা ‘নট রিচ এবল’ শোনা গেছে বলে অভিযোগ । এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় দূর্নীতি আড়াল করতে এটা শাসকদলের ‘আই ওয়াশ’ ছাড়া আর কিছু নয় ।।