এইদিন ওয়েবডেস্ক,কলকাতা,০২ জানুয়ারী : আজ রবিবার(০২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫)গোটা রাজ্য জুড়ে ধুমধাম সহকারে দেবী সরস্বতীর আরাধনা হচ্ছে ৷ দেবী সরস্বতীকে আমরা সকলেই বিদ্যার দেবী হিসেবেই জানি । কিন্তু বামপন্থী অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্য কোন এক পুরানে নাকি পড়েছেন যে দেবী সরস্বতীকে ‘কামের দেবী’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে । কিন্তু কোন পুরাণে ওই অভিনেতা এই প্রকার তথ্য পেয়েছেন তা জানাননি । আজ বাগদেবীর আরাধনার মাঝেই আনন্দবাজার অনলাইনে ওই অভিনেতার এই ধরনের বিতর্কিত মন্তব্যের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সহ-সভাপতি তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি । তিনি বলেছেন যে অম্বরীশ ভট্টাচার্য যদি তার এই মন্তব্যের জন্য ক্ষমা না চান তাহলে তার বিরুদ্ধে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের’ অভিযোগে মামলা দায়ের করবেন ।
আজ আনন্দবাজার অনলাইনে বামপন্থী অভিনেতা অম্বরীশ ভট্টাচার্যর একটা সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে । সেই সাক্ষাৎকার অভিনেতা থেকে বলতে শোনা গেছে যে সরস্বতী পূজার দিন তিনি মূলত মেয়েদের টানে মণ্ডপে যেতেন । প্রতিবেদনে অম্বরীশ ভট্টাচার্যর উদ্ধৃতি দিয়ে লেখা হয়েছে,’বাবা কড়া বামপন্থী। বাড়িতে পুজোপাঠ নেই। আমারও মন্ত্রতন্ত্রে একটুও আস্থা নেই। কিন্তু পুজোর দিন সকালে ধোপদুরস্ত হয়ে পাড়ার প্যান্ডেলে থাকতে কোনও আপত্তি নেই। অঞ্জলি দিইনি কোনও দিন। পুজোর আগেই কুল খেয়ে নিতাম। মাথায় সারা ক্ষণ ‘দুষ্টু সরস্বতী’র বাস। ফলে, পড়াশোনায় অষ্টরম্ভা। কিন্তু সকাল সকালে স্নান সেরে হলুদ শাড়িতে নিজেকে সাজিয়ে মেয়েরা যখন বসে ফল কাটত, মুগ্ধ হয়ে দেখতাম। সরস্বতী পুজোর দিন সমস্ত নারী আমার চোখে মারকাটারি সুন্দরী!’ এরপরই সেই বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন ওই অভিনেতা৷ তিনি বলেছেন,’দেবীর কাছে কোনও দিন কিচ্ছু চাইনি। না চাইতেই, বাগ্দেবী এত প্রেম দিয়েছেন জীবনে! তাই তো পুরাণ ওঁকে কামের দেবীও বলে। কূপমণ্ডুক বাঙালির কাছে তো আবার ‘কাম-কলা’ শব্দগুলো নিষিদ্ধ! দেবীও তাই পুঁথির ভারে চোখ নামিয়ে শুধু বিদ্যা বিলিয়ে গেলেন।’
ওই সংবাদমাধ্যমের লিংক এক্স-এ শেয়ার করে তরুনজ্যোতি তিওয়ারি লিখেছেন,’আমাদের সমাজে ধর্ম ও দেব-দেবীদের প্রতি শ্রদ্ধা একটি ঐতিহ্যবাহী এবং সংবেদনশীল বিষয়। দেবী সরস্বতী শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মের নয়, ভারতীয় সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তিনি জ্ঞান, বিদ্যা, সঙ্গীত ও শিল্পকলার দেবী হিসেবে সম্মানিত। পুরাণে বা শাস্ত্রগ্রন্থে সরস্বতীকে কামের দেবী হিসেবে কোথাও উল্লেখ করা হয়নি। অম্বরীশ ভট্টাচার্যের মতো বামপন্থী অভিনেতারা নিজেদের মতামত বা ব্যঙ্গাত্মক দৃষ্টিকোণ থেকে দেব-দেবীদের নিয়ে মন্তব্য করতে পারেন। কিন্তু তা যেন অপমানজনক ও বিভ্রান্তিকর না হয়। ধর্মীয় বিশ্বাসকে আঘাত করা বা অবমাননাকরভাবে উপস্থাপন করা শিল্পের নামে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।’
তিনি আরও লিখেছেন,’এটি স্পষ্ট যে, দেবী সরস্বতীকে বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী হিসেবে উপস্থাপন করাই হিন্দু পুরাণ ও ধর্মগ্রন্থের মূল বার্তা। অম্বরীশ ভট্টাচার্যের মন্তব্য একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার সামিল। আমরা মত প্রকাশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী, কিন্তু সেই স্বাধীনতা যেন কারও ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত হানার মাধ্যম না হয়। এই ধরনের মন্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং যদি লেখক ক্ষমা না চায় এই মন্তব্যের জন্য তাহলে আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হব । আনন্দবাজার আপনাদের থেকে এর থেকে বেশি কিছু আশা করা যায় না। কিন্তু দয়া করে এই বেকার লোক গুলোর লেখা ছাপা বন্ধ করুন ৷’।