এইদিন ওয়েবডেস্ক,শ্রীনগর,১৪ এপ্রিল : বাস্তুচ্যুত কাশ্মীরি হিন্দুদের পুনর্বাসনের জন্য নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র সরকার । আর এই দেখে উপত্যকায় ফের ১৯৯০-এর মত আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করতে উঠে পড়ে লেগেছে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলি । সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর-ই-ইসলাম উপত্যকায় বসবাসকারী কাশ্মীরি হিন্দুদের কাছে গত মঙ্গলবার চিঠি পাঠিয়ে হুমকি দিয়েছে,’ইসলাম গ্রহণ করো অথবা উপত্যকা ত্যাগ করো অন্যথায় মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকো ।’
শুধু তাই নয়, সন্ত্রাসবাদী ওই সংগঠনটি কাশ্মীরি মুসলমানদের উপত্যকার হিন্দুদের সমর্থন না করার জন্যও সতর্ক করেছে । বারামুল্লার বীরভানে নির্মিত ট্রানজিট কলোনিতে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় হিন্দুদের ডাক যোগে এই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে । প্রধানমন্ত্রীর রোজগার যোজনার অধীনে যে সমস্ত বাস্তুচ্যুত হিন্দুরা সরকারি চাকরি পেয়েছিলেন তাঁরাই এই ট্রানজিট কলোনিগুলিতে বসতি স্থাপন করেছেন । কলোনিতে ২৫০-৩০০ হিন্দু পরিবার রয়েছেন । শুধু তাইই নয়,প্রতিটি জেলায় এই ধরনের কলোনি রয়েছে । সব মিলিয়ে প্রায় ৭০০ হিন্দু পরিবারের কাছে ওই হুমকি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে খবর । যদিও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের হুমকি সত্ত্বেও তাঁরা উপত্যকা থেকে পালিয়ে যায়নি । তবে তাঁদের মধ্যে এনিয়ে চরম আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে । পুলিশ মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে । উল্লেখ্য, লস্কর ই ইসলাম ২০১৬ সালের আগস্টে কুলগামে কাশ্মীরি হিন্দুদের একই ধরনের হুমকি দিয়েছিল ।
প্রসঙ্গত,কাশ্মীরে ২০১৫ সালে সক্রিয় হয় লস্কর-ই-ইসলাম নামে ওই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটি । তখন সংগঠনের কম্যান্ড হাতে ছিল কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী কওম নজরের (Qom Nazar) হাতে । সংগঠনটি ২০০৪ সাল থেকে পাকিস্তানের খাইবার অঞ্চলে সক্রিয় ছিল এবং ২০১৫ সালের মার্চে তেহরিক-এ-তালিবানির সাথে একীভূত হয় । জন্মলগ্ন থেকেই তারা কাশ্মীরে প্রচুর নাশকতা চালিয়েছে । ২০১৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরে কওম নজর পাকিস্তান থেকে কাশ্মীরে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করার সময় উরিতে পুলিশের গুলিতে খতম হওয়ার পর থেকে সংগঠনটি সাময়িকভাবে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে । সম্প্রতি কেন্দ্র সরকার বাস্তুচ্যুত কাশ্মিরী পন্ডিতদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করতেই ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন লস্কর ই ইসলাম ।
এদিকে এই হুমকি চিঠির ২৪ ঘন্টার মধ্যেই হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসবাদীরা । বুধবার কুলগামের কাকরানে একজন কাশ্মীরি হিন্দুকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসবাদীরা । হামলার পর তারা পালিয়ে যায় । এরপর পুলিশ,সেনা এবং সিআরপিএফর যৌথবাহিনী ঘটনাস্থলের আশেপাশের এলাকাগুলি ঘিরে ফেলে এবং সন্ত্রাসীদের সন্ধান শুরু করে। এরপরবুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সন্ত্রাসীরা সতীশ কুমার সিং জামপাল নামে এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় । তাঁর শরীরে একাধিক গুলি লাগে । আহত সতীশ পড়ে যান । সন্ত্রাসবাদীরা পালিয়ে গেলে সতীশকে শ্রীনগরের শেরে কাশ্মীর মেডিকেল সায়েন্সেসে ভর্তি করা হয় ।।